Tuesday, August 26, 2025
Home Blog Page 77

সিলেটে পানিবন্দি ৪ লাখ, আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ

পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট জেলায় প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন প্রায় চার হাজার মানুষ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১৩ উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের সবশেষ অবস্থা জানিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের বন্যা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেটে আবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯২৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন।

এদিকে, সিলেটে দ্বিতীয় দফায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানিয়েছেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিকাল ৬টার দিকে কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার এবং সিলেট শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আর কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

এ ছাড়া সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বইছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

আর সারি-গোয়াইন নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ০ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পানি ঢুকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এরই মধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ডে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

বিদ্যুৎ সচল রাখতে তৎপরতা

এদিকে বন্যার মধ্যে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে নগরীর দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র সেনাবাহিনীর একটি দল নিয়ে পরিদর্শন করেছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, “এই সাব-স্টেশনে কোনো সমস্যা হলে চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে। এ ছাড়া যাতে পানি না উঠে সেজন্যও কাজ করা হচ্ছে।”

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি উপ-কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ এর অধীন। এই উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, বরইকান্দি, কামালবাজার, মাসুকগঞ্জ, বিসিক, লালাবাজার, শিববাড়ী ও কদমতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের বলেন, “উপকেন্দ্রটি ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উঠার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনও উঠেনি। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সাহায্য করবে।”

সিলেটের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবারও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো। মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন।

মঙ্গলবার সিলেটের বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে তলিয়ে যায় সাদা পাথর, জাফলং, বিছানাকান্দিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির জন্য সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে সেগুলো কার্যকর করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ মে বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রথম দফায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছিলেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়করা। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবারও পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়।

স্ত্রী-ও থামাতে ব্যর্থ, ভক্তের দিকে তেড়ে গেলেন রউফ (ভিডিও)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হয়েছে আজ (মঙ্গলবার), আগামীকাল থেকে শুরু হবে সুপার এইট পর্ব। যদিও সেখানে নেই পাকিস্তান, গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচ হেরে তারা বিদায় নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তান দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই বিশ্বকাপ পাট চুকিয়ে ফিরে গেছেন নিজ দেশে। যদিও বাবর আজমসহ বেশ কয়েকজন আরও কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কথা রয়েছে। এরই মাঝে ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনা, কোনো একটি বিষয় নিয়ে এক ভক্তের ওপর চড়াও হন পাক পেসার হারিস রউফ।

ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যায়, স্ত্রী মুজনা মাসুদ মালিকের সঙ্গে ফুটপাত ধরে হাঁটছিলেন হারিস। সেখান থেকে কিছুটা দূর দিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন ক্রিকেট সমর্থক। হঠাৎই হারিস দাঁড়িয়ে পড়ে কিছুটা দূরে থাকা এক ভক্তের সঙ্গে কিছু একটা নিয়ে কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে মারমুখী হয়ে ওই ভক্তের দিকে এগিয়ে যান এই পাকিস্তানি পেসার।

এ সময় স্ত্রী মুজনা থামানোর চেষ্টা করলেও রউফ থামেননি। তিনি স্ত্রীর হাত ছাড়িয়ে মারমুখী হয়ে ওঠে এগোতে থাকেন ওই ভক্তের দিকে। পরে আশপাশে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি হারিসকে থামাতে চেষ্টা চালান। ক্ষণিক পরই শান্ত হন হারিস। দু’পক্ষের মধ্যে কি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল জানা যায়নি, ভিডিওতে তাদের কথাও ছিল অস্পষ্ট। ওই ঘটনার পর উভয়ই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তবে কয়েকজন নেটিজেনের দাবি– ওই সময় সমর্থককে উদ্দেশ্য করে হারিস বলেন, ‘তুই ইন্ডিয়ান, তুই ইন্ডিয়ান।’ তার উত্তরে সেই ভক্ত জানান, তিনি পাকিস্তানি। তখন ফের রেগে যান হারিস। তিনি বলতে থাকেন, ‘তোমার বাবা-মা তোমাকে কীভাবে মানুষ করেছে? কোনো শিক্ষা দেয়নি?’

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে বেশ কয়েক মাসের ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরেন হারিস। মাঠের পারফরম্যান্সও তার ভালোই ছিল। চার ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন সাতটি। কিন্তু দলীয় ব্যর্থতায় পাক বোলারদের সেই ফর্ম আর কাজে আসেনি। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় হয়ে গেছে বাবর-হারিসদের। এরপর থেকে পাকিস্তান দলে চরম অশান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাবেক ক্রিকেটারদের কেউ কেউ তো বিশ্বকাপ খেলা বেশিরভাগ ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন।


সংবাদমাধ্যমের খবর, বাবর আজম দেশে ফিরলেই তাকে ডেকে পাঠাতে পারে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। তাকে অধিনায়কত্বে বহাল রাখা নিয়েও রয়েছে সংশয়। বিশ্বকাপ দিয়ে পাকিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়া গ্যারি কারস্টেনও সমালোচনা করেছেন শিষ্যদের। তার মতে– পাকিস্তান দলে কোনো ঐক্য নেই। সবাই একে অপরের থেকে আলাদা। এর আগে অনেক দলের সঙ্গে কাজ করলেও এখানে নাকি ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।

বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে সিলেটের ৩ নদীর পানি

ভারতের নদী দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেটের তিনটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, টানা ভারী বৃষ্টিতে নদী ও ছড়া উপচে পানি নগরীতে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরীর ভেতরে অনেক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৯টা সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার ও একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫সেন্টিমিটার ও সারি গোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়) সিলেটে ১৫৩ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ও সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে, ভারতের আইএমডি’র তথ্যমতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৯৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

জলে ভাসলো সিলেটবাসীর ঈদ আনন্দ

প্রতি বছর দুটি ঈদ আসে অনাবিল আনন্দ নিয়ে। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এর মধ্যে ঈদুল আযহায় যুক্ত হয় ভিন্ন মাত্রা। সেটি পশু কুরবানির জন্য। কারণ- প্রবৃত্তির দাসত্ব, লোভ-লালসা ও হিংসা-বিদ্বেষসহ মনের পশুত্বকে পরাভূত হয় এই কুরবানির মধ্যদিয়ে। তবে সিলেটে এবারের ঈদ আনন্দ ভাসছে বানের জলে।

সিলেটে ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই শনিবার (১৫ জুন) ফের কবলিত সিলেট।

রবিবার (১৬ জুন) রাতে সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে- জেলার ১৩টির মধ্যে ১০টি উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দী। তবে সোমবার ভোররাত থেকে সিলেটে ঝরছে ভারী বৃষ্টি। সঙ্গে নামছে উজানের ঢল। ফলে সোমবার সকালের মধ্যেই প্রায় সকল উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। এছাড়া সিলেট মহানগরের অধিকাংশ এলাকায় দেখা দিয়েছে বন্যা। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সড়ক তলিয়েছে পানিতে।

এ অবস্থায় বেশিরভাগ ঈদগাহে ঈদুল আযহার জামাত বাতিল করে স্থানীয় মসজিদগুলোতে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। সিলেটে প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়া শাহী ঈদগাহে প্রতি বছর দেড় থেকে দুই লক্ষ মুসল্লির সমাগম ঘটলেও এবার বৃষ্টির কারণে মুসল্লি ছিলেন মাত্র কয়েক হাজার।

এদিকে, বাসবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পনি ঢুকে পড়ায় সিলেট মহানগরের কুরবানিদাতারা পড়েছেন বেশ বিপাকে। অনেকে কুরবারিন পশু দুতলায় উঠিয়ে রেখেছেন। পানি না নামলে কুরবানি দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অনেকে। অনেকে বলছেন- দু-একদিন পরে কুরবানি দিতে হতে পারে।
জলে ভাসলো সিলেটবাসীর ঈদ আনন্দ
সকালে সিলেট মহানগর ঘুরে দেখা গেছে- নিম্ন সব এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি। এছাড়া শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়াসহ নগরের অধিকাংশ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

এছাড়া মহানগরের মধ্যে অনেক প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে উঠেছে পানি। এয়ারপোর্ট সড়ক, সিলেট-তাবিল সড়ক, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডসহ বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান তলিয়ে গেছে। কোনো কোনো স্থানে কোমর পর্যন্ত পানি। এ অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন মানুষজন।

সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় (রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) সিলেটে ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত হয়েছে ৮৬ মি.মি বৃষ্টি।

এ রিপোর্ট লেখা (বেলা ১১টা) পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসন রবিবার রাতে জানায়, সিলেটের সদর, দক্ষিণ সুরমা, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, গোলাপগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার ১ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ জন লোক বন্যায় আক্রান্ত। এসব উপজেলার ৫১২টি গ্রাম রবিবার পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে।

সিলেটের সব উপজেলায় ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শনিবার থেকে এসব কেন্দ্রে মানুষজন আসতে শুরু করেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ঈদের সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে ৩টি নদীর পানি ৩টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ও সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সিলেটের সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সুরমা বিপৎসীমার উপরে, পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা

পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি দুটি পয়েন্টে বিপদৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিন দিন পানি বাড়বে এবং স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পাউবো সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, রোববার দুপুরে মৌসুমের প্রথমবারের মত সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ছাতক পয়েন্টে ভোর থেকে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ নদী সুনামগঞ্জে ৭.৮২ মিটার এবং ছাতকে ৯.৩০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে ৭.৮০ ও ছাতকে ৮.৬৮ হচ্ছে বিপৎসীমার লেভেল।

প্রকৌশলী বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা ভারী বর্ষণ হতে পারে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে মামুন হাওলাদার বলেন, “সুনামগঞ্জে এ কারণে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা আছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে।”

এদিকে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার সীমান্ত এলাকার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে।

অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, পাউবোর ফসলরক্ষা বাঁধের কারণে ঢলের পানি নামতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এই নতুন সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তাছাড়া পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে আসা বালু ও পলিতে সীমান্ত নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেও এই সমস্যা হচ্ছে।

এদিকে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের পানি হাওরগুলোতে প্রবেশ করায় মানুষের নৌ যাতায়াত সহজ হয়েছে।
সুরমা বিপৎসীমার উপরে, পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা
পাউবো সুনামগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘালয়ে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ মিলিমিটার এবং শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ছাতক উপজেলার উপরেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতপ্রবণ এলাকা ভারতের চেরাপুঞ্জি অবস্থিত। চেরাপুঞ্জির ঢলের পানি ছাতক ও সুনামগঞ্জে আসতে মাত্র চার ঘণ্টা লাগে। এ কারণে মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত হলে সীমান্ত নদী ও ছোট পাহাড়ি খাল দিয়ে দ্রুত পানি নেমে আসে সুনামগঞ্জের এ দুটি উপজেলায়।

এই পানি বিভিন্ন হাওরে প্রবেশ করে এবং নদ-নদী দিয়ে সুনামগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের হাওর-নদী হয়ে কিশোরগঞ্জের মেঘনায় গিয়ে পতিত হয়।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা সালেহীন চৌধুরী শুভ বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের নামে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করায় এখন ঘন ঘন এই সমস্যা হচ্ছে। কারণ পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে বাঁধা পাচ্ছে। এ ছাড়া সীমান্ত নদীগুলোও ভরাট হয়ে গেছে। আগের মতো পানি ধারণ করতে পারে না। তাই লোকালয়ে এসে ক্ষতি করছে।

“এ ছাড়া এই এলাকার প্রধান সমস্যা করছে সত্তরের দশকে নির্মিত ‘পাণ্ডারখাল বাঁধ’। এখানে বাঁধের কারণে সীমান্তের পানি নামতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”

হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত হাওরে প্রায় ৫ হাজারের বেশি ফসলরক্ষা বাঁধ হয়েছে। এ সময়ে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নেও হাজারো সড়ক হয়েছে। কিন্তু এই তুলনায় সীমান্ত নদী চেলা, খাসিয়ামারা, সোনাই, চলতিসহ সীমান্ত নদীগুলোর এক কিলোমিটারও খনন হয়নি।

গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, শুধু সীমান্ত এলাকায় বাঁধ, রাস্তাঘাট নির্মাণ বা নদী খনন না করাই সমস্যা নয়। ভারতের মেঘালয়ে পাহাড় ধ্বংস করে, বনাঞ্চল ধ্বংস করে কয়লা ও চুনাপাথর তোলা হচ্ছে। এতে বন, জঙ্গল, গাছ উজার হচ্ছে।

ছাগলের মুখে প্লাস্টিকের দাঁত লাগিয়ে বিক্রি, অতঃপর…

প্লাস্টিকের দাঁত লাগিয়ে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি হচ্ছে ছাগল। বিষয়টি ধরে ফেলেন ক্রেতা। পরে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ছাগল বিক্রেতাকে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচিতে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়েছে। এতে দেখা যায়, এক ক্রেতা একটি ছাগলের মুখ থেকে প্লাস্টিকের দাঁত খুলে আনছেন।

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ছাগল বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা সাতটি ছাগল জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার বিক্রেতা পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশু বিক্রি করতে হায়দ্রাবাদ ও করাচিতে আসেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যবসায়ী জানান, তার বাড়ি সিন্ধু প্রদেশে। তিনি ঈদুল আজহার জন্য পশু বিক্রি করতে করাচিতে এসেছিলেন।

এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ।

সিলেটের আকাশে ৬০ ঘণ্টা জ্বলবে ‘ফায়ার-ফ্লো’!

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন’র আওতাধীন জালালাবাদ গ্যাস ফিল্ড এলাকা সিলেটের লাক্কাতুরায় গ্যাস কূপ রক্ষণাবেক্ষণ কাজ হবে। এ জন্য আগামী মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ৬০ ঘণ্টা ওই এলাকার আকাশে ‘ফায়ার ফ্লো’ (আগুনের শিখা) দেখা যাবে।

বিষয়টি রবিবার (১৬ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ‘শেভরন বাংলাদেশ জালালাবাদ ফিল্ড’ কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ‘সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, শেভরন বাংলাদেশ জালালাবাদ গ্যাস ফিল্ড, লাক্কাতুরা, সিলেট-এর নিয়মিত গ্যাস কূপ রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ভোর থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টা অগ্নি প্রজ্জ্বলন ব্যবস্থা চলমান থাকবে।

গ্যাস কূপ সংলগ্ন এলাকার জনগণ ও পরিবেশ নিরাপদ রাখতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আতংকিত না হয়ে কর্ম-এলাকার আশেপাশে জনসমাগম পরিহার করে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে সকলকে সহযোগিতা করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেভরন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার শেখ জাহিদুর রহমান।

চিনি কান্ডে বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক তাহমিদ আটক

সিলেটের বিয়ানীবাজারে আলোচিত ট্রাকভর্তি ৪’শ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জাহিদুল হক তাহমিদ (২৬) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ জুন) ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের সময় পৌরশহরতলীর নিদনপুর এলাকার তার নিজবাড়ি থেকে তাহমিদকে আটক করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত জাহিদুল হক তাহমিদ নিদনপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তবে তাহমিদকে গ্রেপ্তার করলেও সে এজাহারভুক্ত আসামী নয় বলে জানায় পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি ও কল রেকর্ড ফাঁসে সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিয়ানীবাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সন্দেহের ভিত্তিতে জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার সকালে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে রিমাণ্ডের আবেদন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, ট্রাকভর্তি চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

এদিকে, এর আগে এ ঘটনায় গত সোমবার ৮০ বস্তা চিনি ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার এবং গত মঙ্গলবার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা হচ্ছে- কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো. লিটন মিয়া (২৬)। সে বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভার দাসগ্রামের লিচুটিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। অন্য আরেক আসামী হাসান (২১)। সে বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৮জুন) ভোর ৬টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বিয়ানীবাজার অংশের চারখাই লালপুর এলাকায় সরকারি নিলাম থেকে কেনা বদরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকার ৪’শত বস্তা চিনি ও চিনি বহনকারী একটি ট্রাক অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। এরপর থেকে বিষয়টি হয়ে উঠে টক অব দ্যা টপিকে, ঝড় উঠে সমগ্র উপজেলাজুড়ে।

চিনি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় শুরু হলেও ঘটনার চারদিন পর ৪’শ বস্তার চিনির বৈধ মালিক দাবি করা ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনার সাথে জড়িত ১১ জনের নামোল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামী করা হয়।

মামলার আসামীরা হলেন- ছোটদেশ ছুটিয়াংয়ের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী), খাসাড়িপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪, ছাত্রলীগ কর্মী), শ্রীধরার মুজিবুর রহমানের ছেলে বক্কর (২৫, স্যানেটারী মিস্ত্রী), একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আনু (২৩, দিনমজুর) ও আজির উদ্দিনের ছেলে ছাদিক আহমদ (৩০, সবজি ব্যবসায়ী), কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো: খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া (বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১, বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), নবাং গ্রামের শরফ উদ্দিনের ছেলে জিবান (২২, বখাটে ছাত্রলীগ কর্মী), চট্রগামের বাসিন্দা বর্তমানে সুপাতলার নছরুল্লাহর ছেলে শফিউল্লাহ সাগর (২৮, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি), খাসাড়িপাড়া গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে ফাহাদ আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী) ও চারখাই জালালনগরের হেলাল মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২৪, মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮জন।

সিলেটে ঈদের জামাত কখন কোথায়

প্রতি বছরের মতো এবারও সিলেটের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরের ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে। এ উপলক্ষে ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে সোমবার সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে শাহী ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি দেখতে শনিবার পরিদর্শনে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এসময় সঙ্গে ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান।

শাহী ঈদগাহ ছাড়াও হজরত শাহজালাল (রহ.) জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা হুজায়ফা হোসাইন।

নগরীর কোর্ট পয়েন্ট সংলগ্ন কালেক্টরেট জামে মসজিদে ঈদুল আজহার জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। সিলেট নগরীর বন্দরবাজারস্থ ঐতিহ্যবাহী কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় ও তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের ইমাম ও খতিব শায়খ সাঈদ বিন নুরুজ্জামান আল মাদানী। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন ড. মাওলানা এ এইচ এম সোলায়মান এবং তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন হাফিজ মাওলানা হোসাইন আহমদ।

আঞ্জুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট রেজিষ্ট্রারি মাঠে ঈদ জামাতের আয়োজন করেছে আত-তাক্বওয়া মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টার। এখানে ঈদের একমাত্র জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সোয়া ৭টায়।

দক্ষিণ সুরমার ঐতিহাসিক সিলাম শাহী ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায় ও দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। দুটি জামাতে যথাসময়ে শরিক হতে সিলাম শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া সিলেটে ঈদের দিন বৃষ্টির আশংকা থাকায় প্রায় প্রতিটি মসজিদেই ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

এসএমপি কমিশনার জাকির হোসেন খান জানান, ঈদের দিন ভোর থেকে পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা থাকবেন। সেই সঙ্গে ক্রাইসিস রেন্সপন্স টিম (সিআরটি) থাকবে নিরাপত্তায়। পাশাপাশি ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা শাহী ঈদগাহ এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করব।