সিলেটের বিয়ানীবাজারে আলোচিত ট্রাকভর্তি ৪’শ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জাহিদুল হক তাহমিদ (২৬) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ জুন) ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের সময় পৌরশহরতলীর নিদনপুর এলাকার তার নিজবাড়ি থেকে তাহমিদকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত জাহিদুল হক তাহমিদ নিদনপুর গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তবে তাহমিদকে গ্রেপ্তার করলেও সে এজাহারভুক্ত আসামী নয় বলে জানায় পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি ও কল রেকর্ড ফাঁসে সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিয়ানীবাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সন্দেহের ভিত্তিতে জাহিদুল হক তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার সকালে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে রিমাণ্ডের আবেদন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ট্রাকভর্তি চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার ও অবশিষ্ট ৩২০ বস্তা চিনি উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এদিকে, এর আগে এ ঘটনায় গত সোমবার ৮০ বস্তা চিনি ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার এবং গত মঙ্গলবার এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা হচ্ছে- কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসাইনপুর গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে মো. লিটন মিয়া (২৬)। সে বর্তমানে বিয়ানীবাজার পৌরসভার দাসগ্রামের লিচুটিলাস্থ ছাত্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। অন্য আরেক আসামী হাসান (২১)। সে বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বোবারগুল এলাকার মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৮জুন) ভোর ৬টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বিয়ানীবাজার অংশের চারখাই লালপুর এলাকায় সরকারি নিলাম থেকে কেনা বদরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর ২৪ লাখ টাকার ৪’শত বস্তা চিনি ও চিনি বহনকারী একটি ট্রাক অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। এরপর থেকে বিষয়টি হয়ে উঠে টক অব দ্যা টপিকে, ঝড় উঠে সমগ্র উপজেলাজুড়ে।
চিনি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় শুরু হলেও ঘটনার চারদিন পর ৪’শ বস্তার চিনির বৈধ মালিক দাবি করা ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার এজাহারে ঘটনার সাথে জড়িত ১১ জনের নামোল্লেখ্যসহ অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামী করা হয়।
মামলার আসামীরা হলেন- ছোটদেশ ছুটিয়াংয়ের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে তারেক আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী), খাসাড়িপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪, ছাত্রলীগ কর্মী), শ্রীধরার মুজিবুর রহমানের ছেলে বক্কর (২৫, স্যানেটারী মিস্ত্রী), একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আনু (২৩, দিনমজুর) ও আজির উদ্দিনের ছেলে ছাদিক আহমদ (৩০, সবজি ব্যবসায়ী), কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসাইনপুর গ্রামের (বর্তমানে পৌরশহরের দাসগ্রাম লিচুটিলা ছাত্তার মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া) মো: খলিল মিয়ার ছেলে মো: লিটন মিয়া (বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা শাহবাজপুর এলাকার বোবারতল গ্রামের (বর্তমানে সুপাতলা) মোস্তফা উদ্দিনের ছেলে হাসান (২১, বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডার), নবাং গ্রামের শরফ উদ্দিনের ছেলে জিবান (২২, বখাটে ছাত্রলীগ কর্মী), চট্রগামের বাসিন্দা বর্তমানে সুপাতলার নছরুল্লাহর ছেলে শফিউল্লাহ সাগর (২৮, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি), খাসাড়িপাড়া গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে ফাহাদ আহমদ (২৩, ছাত্রলীগ কর্মী) ও চারখাই জালালনগরের হেলাল মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২৪, মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭-৮জন।