সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ডের নতুন একটি অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। গ্যাসের প্রেসার ঠিক থাকলে এই কূপ থেকে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে এই গ্যাস হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খনন কাজ শুরু হওয়ার সাড়ে ৪ মাসের মাথায় শুক্রবার সকাল থেকে ফ্লো শুরু হয়েছে। আগামী দুইদিন এই পরীক্ষা চলমান থাকবে।
কৈলাশটিলা ৮ নম্বর কূপ থেকে গ্যাসের সঙ্গে উপজাত হিসেবে কনডেনসেটও মিলবে, তবে প্রতি ঘনফুট গ্যাসের সাথে কী পরিমাণ কনডেনসেট মিলবে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই তা জানা যাবে।
সারাদেশে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে নতুন যে সকল প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় তার একটি এই কৈলাশটিলা ৮ নম্বর কূপ। এ কূপের খনন কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি। সাড়ে ৪ মাসে সফলভাবে খনন কাজ শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য গ্যাসের প্রেশারসহ অন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাসের মজুদের পরিমাণ জানাবেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট গ্যাসফিল্ড কোম্পানির এই কূপটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে খনন করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। কূপের মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে বিদ্যমান পাইপলাইন ও আড়াই কিলোমিটার দূরত্বে ব্যবহারযোগ্য প্রসেস প্লান্ট রয়েছে। তাই দ্রুত এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব বলে জানান কর্মকর্তারা।
সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, কৈলাশটিলা ৮ নম্বর কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। কূপের তিন হাজার ৪৪০ থেকে ৫৫ হাজার ফুট গভীরতায় গ্যাস পাওয়া গেছে। পাইপলাইন হয়ে গেলে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
জানা যায়, সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের উৎপাদনে থাকা কূপগুলো থেকে এখন প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। চলতি বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ করে সেই উৎপাদনকে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা সংশ্লিষ্টদের। আর ২০২৫ সালের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারলে শুধু এই কোম্পানি থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২ নম্বর কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট।
তারও আগে গত বছরের নভেম্বরে হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান মেলে। খনন কাজ শেষে ওইদিন গ্যাস প্রাপ্তির তথ্য নিশ্চিত করে এসজিএফএল।
গত বছরের জুনে এই কূপ খনন কাজ শুরু হয়। ১৪৯ কোটি টাকায় সিলেট-১০ নম্বর কূপ খনন করে চীনা কোম্পানি সিনোপেক। কূপটিতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট গ্যাসফিল্ডস কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে এসজিএফএল-এর আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে।
সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশীদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৪টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।