সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে উত্তাল সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুধবার (১৭ জুলাই) সবাইকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, ঢাকার নির্দেশে শাবিতে গায়েবানা জানাযার নামাজ আদায় শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হলটির কয়েকটি কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশিয় অস্ত্র ও মদের বোতল জব্দ করের তারা। পরে বিকাল সাড়ে ৬টায় উদ্ধারকৃত অস্ত্র নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন- দেড় শতাধিক মদের বোতল, ১টি শর্টগান, ১টি রিভলবার, ৩টি চেইন, ১ শ স্টিলের পাইপ, ১০টি রামদা, ১২টি চাকু, হাতুড়ি ৩টা ও কিছু গাঁজা পেয়েছি। শুধু শাহপরাণ হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে এসব আমরা জব্দ করেছি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে আর তল্লাশি চালাতে পারিনি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা বাকি হলগুলোতে তল্লাশি করবো। আমরা জানতে পেরেছি- তল্লাশি শুরু হয়েছে জানতে পেরে সন্ত্রাসীরা অনেক অস্ত্র সরিয়ে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন- আজ থেকে শাবিকে ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসমুক্ত ঘোষণা করলাম। এরা এখানে মাদক কারবার করতো। আজ থেকে শাবিতে এসব বন্ধ। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি- আগামীতে যাতে রাজনৈতিক পরিচয়ে বা শক্তির জোরে হলের সিট বরাদ্দ দেওয়া না হয়, মেধা যাচাইয়ের ভিত্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেন সিট দেওয়া হয়।
গালিব বলেন- যাদের কক্ষে এসব জিনিস পেয়েছি তাদের আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। তবে প্রশাসনের প্রতি দাবি- তারা এদের চিহ্নিত করে তাদের ছাত্রত্ব আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে।
প্রেস ব্রিফিং শেষে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসরেন কাছে হস্তান্তর করেন আন্দোলনকারীরা।
শাবি ক্যাম্পাস থেকে সিলেটভিউ’র নিজস্ব প্রতিবেদক ও শাবি প্রতিনিধি জানান- সোমবার দেশের তিন বিভাগে আন্দোলনকারী ৬ শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে বুধবার বেলা ২টায় ফটকে গায়েবানা জানাযা নামাজ আদায় করেন। পরে কফিন মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলের দিকে আসতে থাকেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যারিকেড দিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘হলে অস্ত্র এবং অছাত্ররা আছে। যারা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই অস্ত্র উদ্ধার করতে চাই।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হল কারো বাপের না, হল মোদের অধিকার’, ‘ছাত্রলীগের চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘মেধা না কোটা, মেধা মেধা’, ছাত্রলীগের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দেন।
এছাড়া হলের সামনে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের ছবি সংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে শিক্ষার্থীরা জুতা দিয়ে পেটান এবং পরে তারা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন।
অন্যদিকে বেলা দুইটার দিকে শাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমান হল ত্যাগ করেন।