Beanibazarview24.com
বড়লেখায় পান্না বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূ খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পান্নার স্বামী মতছিন আলীকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাকে বড়লেখা থানার সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মতছিন উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের কলারতলিপার গ্রামের মৃত মাহমুদ আলী ওরফে মাখই মিয়ার ছেলে।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর মতছিন পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, পান্না বেগমকে হত্যার পর স্বামী মতছিন আলীকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযানে নামে পুলিশ। বিভিন্নস্থানে অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে মতছিনের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে শুক্রবার তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। এদিন দুপুর দুইটার দিকে বড়লেখা থানার সামনে থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মতছিন আলীকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধারে নামে পুলিশ। তবে স্ত্রীকে হত্যার পর মতছিন ছুরাটি বিয়ানীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেওয়ায় তা উদ্ধার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখার শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, মতছিনকে প্রযুক্তির সাহায্যে বড়লেখা থানার সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তিনি মৌলভীবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। তবে ছোরাটি বিয়ানীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেওয়ায় সেটি উদ্ধার করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, মতছিন স্ত্রীকে হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শনিবার তাকে আদালতে নেওয়া হবে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের কলারতলিপার গ্রামের মাখই মিয়ার ছেলে মতছিন আলীর সাথে বিয়ানীবাজার উপজেলার পাড়িয়াবহর গ্রামের ইসমাইল আলীর মেয়ে পান্না বেগমের বিয়ে হয়। পরিবারের তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। প্রায় ৪ মাস আগে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুই বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি পাড়িয়াবহরে চলে যান পান্না বেগম।
ওই সময় বড় মেয়ে সুহানাকে (৭) শ্বশুর বাড়ির লোকজন রেখে দেয়। এদিকে সম্প্রতি সুহানা নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইটাউরী গ্রামে তার ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেয়ে সুহানার অসুস্থতার খবর পেয়ে পেয়ে পান্না বেগম তাকে দেখতে ইটাউরীতে আসেন। সোমবার সকাল ৭টার দিকে সুহানাকে স্থানীয় এক হুজুরের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় দৌলতপুর এলাকার একটি মসজিদের পাশের রাস্তায় পান্নার স্বামী মতছিন তাকে বাধা দেন।
একপর্যায়ে মতছিন পান্নাকে তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করেন। এরপর মতছিন পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত পান্না বেগমকে উদ্ধার করে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে পান্নার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ১১ নিহত পান্নার ছোটভাই রাজিব আহমদ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.