বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে জোরজবরদস্তি করে গণভবনে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই রমজান আলী।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস রংপুরে আবু সাঈদের বাড়িতে আসলে নিজের অনুভূতি প্রকাশের সময় আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী এ অভিযোগ করেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার নিজে থেকে আমাদের আহ্বান জানিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনা জোর করে জবরদস্তি করে ডাকে নিয়া গেছে, আর এনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আসার (ক্ষমতায়) সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাসায় আসছে। এটাতো আমাদের সৌভাগ্য। আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি আমাদের পাশে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।’
ড. ইউনূসের সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছেলের নামে সরকারি হাসপাতাল চাইছি, যাতে মানুষ বিনামূল্যে ওষুধ পায়। একটা মসজিদের দাবি জানাইছি। রাস্তা, কলেজের নামকরণ করতে বলছি। মাদরাসা যেন হয়। আর ছেলের হত্যার বিচার চাইছি। উনি সব করবে কথা দিছে। শুধু আজ না, সব সময় পাশে থাকবে। তিনি অনেক ভালো মানুষ।’
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। ১৭ জুলাই বাবনপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয় তাকে।
আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সারা দেশে আন্দোলন জোরদার করা হয়। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান। এরপর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ৮ আগস্ট রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্যসংখ্যা ১৭ জন।