রাজধানী ইম্ফলে গভর্নরের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের পর ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুরের রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্য প্রশাসন দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অনিবার্য কারণে আজ বিকেল ৩ টা থেকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ দিন রাজ্যজুড়ে লিজ লাইন, ভিএসএটি, ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএনসহ সকল প্রকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।”
ভারতীয় সংবাদমাধ্যগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইম্ফলে মণিপুর রাজ্যের গভর্নরের কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিল শিক্ষার্থী-জনতার। সেই অনুযায়ী তারা দুপুর একটার দিকে মিছিল গভর্নর হাউসের কাছাকাছি পৌঁছালে সেখানে মোতায়েন থাকা পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে।
প্রায় এক ঘণ্টার সংঘর্ষ শেষে দুপুর ২টার কিছু পরে শিক্ষার্থী-জনতাকে পুরোপুরি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। তার কিছুক্ষণ পরই ইন্টারনেট বন্ধের বিবৃতি দেয় মণিপুর রাজ্য সরকার।
জাতিগত বৈচিত্রে ভরপুর মণিপুরে গত বছর মে মাস থেকে মেইতেই সম্প্রদায়ের হিন্দু এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকি-চিন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। মাঝখানে কয়েক মাস খানিকটা থিতিয়ে এলেও সম্প্রতি ফের তীব্র রূপ নিয়েছে সংঘাত। গত প্রায় দেড় বছরের সহিংসতায় উভয় সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে গত সপ্তাহে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। সংঘাত-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে রাজধানী ইম্ফল ও তার আশপাশের এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
যাত্রীর ব্যাগ থেকে অর্থ চুরি করায় বিমানের ৫ ট্রাফিক হেল্পার গ্রেপ্তার
৬ ব্যাংকে এস আলম গ্রুপ ও পরিবারের সদস্যদের ১.০৯ লাখ কোটি টাকা জমা, এনবিআরের অনুসন্ধান
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে মণিপুরে তৎপর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীও। গত বছর থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় তাদের। এতদিন সাধারণ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গ্রেনেড ব্যবহার করে আসা এই গোষ্ঠীর সদস্যরা সম্প্রতি লাদেন ড্রোন এবং বিস্ফোরক রকেটের প্রয়োগ করা শুরু করেছেন, যা ভাবিয়ে তুলেছে রাজ্যের প্রশাসনকে।
মঙ্গলবারের বিবৃতিতে ইন্টারনেট বন্ধের ঘোষণার পাশাপাশি ভুয়া সংবাদ না ছড়ানোর জন্যও কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি