আন্তর্জাতিক
কলকাতায় হাহাকার, বাংলাদেশিদের অভাবে পথে বসছেন ব্যবসায়ীরা

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ এলাকা, যেখানে এক সময় বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকত; কিন্তু সেটা এখন এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে।
এই এলাকার ব্যবসায়ীরা পুরোপুরি বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল এবং তাদের অনুপস্থিতিতে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয়, অনেক ব্যবসায়ী বলতে বাধ্য হচ্ছেন—‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়।’
প্রসঙ্গত, কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিট, হগ মার্কেট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, কলিন স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড এবং কেওয়াইডি স্ট্রিটের মতো এলাকার ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোতে এখন কোনো প্রাণ নেই। রেস্টুরেন্ট, হোটেল, শপ—সব কিছুই প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, আর ব্যবসায়ীরা তাদের বিক্রি পুরোপুরি শূন্য হয়ে যাওয়ায় ঋণে ডুবে যাচ্ছেন।
এই এলাকায় গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল একটি বিশেষ ব্যবস্থা—বাংলাদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট, হোটেল এবং সেবা—যা এখন একেবারে মরে যাচ্ছে।
দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলি খান বলেন, আমরা একেবারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছি। বাংলাদেশি পর্যটকরা না এলে আমাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই। তাদের উপস্থিতি ছিল আমাদের ব্যবসার একমাত্র জীবিত প্রাণ। এখন তারা আসছেন না, আর আমরা ভীষণ আর্থিক সংকটে পড়েছি।
বাংলাদেশি পর্যটকদের নির্ভর করে গড়ে ওঠা হোটেল মালিক পিন্টু বসাক বলেন, দুই দশক ধরে এই এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সব কিছু সাজিয়ে রেখেছি—হোটেল রুম, খাবারের রেস্টুরেন্ট, দর্শনীয় স্থান—সব কিছু। কিন্তু এখন তারা আর আসছেন না। আমাদের হোটেল রুম ভাড়া ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে গেছে এবং আমরা আর্থিকভাবে তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি।
আবেগতাড়িত হয়ে মার্কুইস স্ট্রিটের রেস্টুরেন্ট মালিক এনসি ভৌমিক বলেন, এটি শুধু একটি ব্যবসা ছিল না, এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি প্রতীক ছিল। আজ যখন বাংলাদেশি পর্যটকরা আর আসছেন না, তখন আমাদের মনে হচ্ছে, এই সম্পর্কের প্রতীকও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা যতটুকু চেষ্টা করছি, ততটুকু ভাঙনের হাত থেকে এই এলাকায় বাঁচানো যাচ্ছে না।
কলকাতার ব্যবসায়ীরা এক ভয়াবহ অবস্থা মুখোমুখি হয়েছেন। হোটেল রুম ভাড়া কমে গেছে, দোকান-পাটে ক্রেতা নেই, রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশি খাবারের অর্ডার নেই—যে ব্যবসা এক সময় ছিল লাভজনক, তা এখন বিলুপ্তপ্রায়। তাদের আর্থিক সঙ্কট এতটা গভীর হয়ে উঠেছে যে, অনেকের পক্ষে ব্যবসা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কলকাতার ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) একটি জরুরি বৈঠক করেছেন, যেখানে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খবর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
অনুষ্ঠানে তাদের একমাত্র লক্ষ্য—বাংলাদেশি পর্যটকদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা, যাতে তারা কলকাতায় ফিরে আসেন এবং ব্যবসা আবার চাঙ্গা হয়।
তবে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশঙ্কা এখনো কাটেনি। তারা জানেন না, এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে এবং তাদের টিকে থাকার জন্য কত দিন লড়াই করতে হবে। কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ এলাকা এখন এক কঠিন সময় পার করছে এবং যদি অবস্থা দ্রুত না বদলায়, তাহলে অনেক ব্যবসায়ী হয়তো তাদের জীবিকা হারিয়ে ফেলবেন।
আন্তর্জাতিক
ভারতের রাস্তায় প্রকাশ্যে মুসলিম নারীর হিজাব খুলে হেনস্তা

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে জোর করে এক মুসলিম নারীর হিজাব খুলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষকেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী ওই নারী ও পুরুষ উৎকর্ষ স্মল ফাইন্যান্স নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন বলে জানিয়েছে।
গতকাল সোমবার ওই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। তবে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে ছয়জনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুরুষ জোর করে নারীর হিজাব খুলে ফেলছে। অন্যরা তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা পুরুষকে গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, মুজাফফরনগরের খালপাড় এলাকার একটি গলিতে এই ঘটনাটি ঘটে। ২০ বছর বয়সী নারী ফারহিন ও শচীন নামে এক ব্যক্তি ঋণের কিস্তি তুলতে যাচ্ছিলেন। মায়ের নির্দেশে শচীনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন ফারহিন। পথে ৮-১০ জন পুরুষের একটি দল তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় ফারহিন ও শচীনকে লাঞ্ছিত ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।
পুরো ঘটনাটি একজন পথচারী মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন এবং পরে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে এবং দুজনকে নিরাপদে থানায় নিয়ে যায়। ফারহিনের অভিযোগ দায়েরের পর ভারতীয় ন্যায় সংহিতার প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
মুজাফফরনগর সিটি সার্কেল অফিসার (সিও) রাজু কুমার সাও বলেন, গত ১২ এপ্রিল আনুমানিক ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার দিকে ভবন এলাকার একজন হিন্দু পুরুষ ও খালপাড়ের একজন মুসলিম নারী ঋণের কিস্তি আদায় করে সুজদু থেকে ফিরছিলেন। দরজি ওয়ালি গলিতে স্থানীয় কিছু লোক তাদের থামিয়ে মারধর করেন।
সিও রাজু কুমার সাও বলেন, ভিডিও থেকে আরও লোককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে, তারপরই গ্রেপ্তার করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে উন্মুক্ত মাঠে ঈদের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করল পুলিশ

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মিরাট শহরে উন্মুক্ত মাঠে ঈদের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করেছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের প্রশাসন।
এ নিয়ম ভঙ্গ করলে মুসলিমদের পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, শুধুমাত্র মসজিদেই ঈদের নামাজ পড়তে পারবে মুসলমানরা। যারা উন্মুক্ত মাঠে নামাজ পড়বে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর মিরাটে উন্মুক্ত মাঠে ঈদের নামাজ পড়ায় ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতকে ‘কান্ট্রি অফ পার্টিকুলার কনসার্ন’ বা সিপিসি-এর তালিকাভুক্ত করতে সুপারিশ করেছে আমেরিকার সরকারি সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ।)
সিপিসি’র সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যেসব দেশে সরকার বিশেষ করে গুরুতর ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনে সম্পৃক্ত হয় বা লঙ্ঘনের ব্যাপারে সহনশীল হয় সেসব দেশ কান্ট্রি অফ পার্টিকুলার কনসার্ন হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইউএসসিআইআরএফ‘র প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষত মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন এবং তাদের জীবন ও সম্পদের ওপর আক্রমণের বেশ কিছু ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি দেশটির কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষকরে মুসলিমদের ওপর একের পর একের হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদীরা। আর এসব কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যেই পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে বিজেপি। মুসলিমদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ যেন ভারতের নিত্য দিনের ঘটনা। মুসলিম স্থাপত্য আর অবকাঠামোর ওপর বিজেপি সরকারের বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর মুসলিম নিপীড়নের সকল রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ভারতকে ‘কান্ট্রি অফ পার্টিকুলার কনসার্ন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ প্রশংসনীয়।
আন্তর্জাতিক
জুমার নামাজের সময় ভূমিকম্প, মসজিদ ধসে নিহত অন্তত ২০

শুক্রবার দুপুরে মিয়ানমারে আঘাত হানে শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্প। এটির প্রভাবে কেঁপে ওঠে থাইল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ। শক্তিশালী এসব ভূমিকম্পে মিয়ানমারে অসংখ্য অবকাঠামো ধসে পড়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৫ জন এবং থাইল্যান্ডে একজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশটিতে একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে অন্তত ৪৩ জন আটকা পড়ে আছেন।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খিত তিতের বরাতে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মান্দালয় প্রদেশের ফো শিং মসজিদ ধসে পড়েছে। এছাড়া সেখানে আরও অন্তত তিনটি মসজিদ ভেঙে পড়ে। মসজিদ ধসে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন মারা গেছেন।
একজন উদ্ধারকর্মী বলেছেন, “আমরা যখন নামাজ পড়ছিলাম তখন এটি ধসে পড়ে। তিনটি মসজিদ ধসে পড়েছে। মানুষ আটকে আছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেশি হতে পারে। শি ফো শিং মসজিদও ধসে পড়েছে।”
এছাড়া মান্দালয়ের ঐতিহাসিক আভা সেতুটি ধসে পড়েছে। এছাড়া মান্দালয় প্রাসাদটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে তুয়াঙ্গো সিটির মঠ ধসে পাঁচ উদ্বাস্তু শিশু নিহত হয়েছে। তারা সেখানে আশ্রয়ে ছিল।
মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রথমটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৭। দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি ছিল ৬ দশমিক ৪ মাত্রার।
মিয়ানমারের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য স্থানেও কম্পনের খবর পাওয়া গেছে। মিয়ানমারের এই ভূমিকম্প ব্যাংককে বেশ তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে এবং কম্পনের তীব্রতায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার ভিডিও ফুটেজও সামনে এসেছে।
সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন ভবনটি খাড়াখাড়িভাবে ধসে পড়ছে। পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই ভবনটিতে ৫০ জন কাজ করছিলেন। যারমধ্যে সাতজন বের হয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু আটকে পড়েন ৪৩ জন। যাদের উদ্ধারে এখন ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে।
মিয়ানমারের স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৫০ মিনিটে সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।
সূত্র: আনাদোলু
আন্তর্জাতিক
তুলশী গ্যাবার্ডের সামনেই এবার ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতন!

সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলশী গ্যাবার্ড। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্প প্রসাশনের উদ্বেগের কথাও জানান তিনি। ভারতের পক্ষ নিয়ে যেভাবে তাদের মিথ্যা ছড়ানো প্রোপাগাণ্ডা নিয়ে কথা বলেছেন এবার সেই ভারতে বসেই তিনি দেখলেন কিভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নীপিড়ন চালাচ্ছে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদিরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিম নিধনের জন্য নিজ দেশেই পরিচিত কসাই হিসেবে। তার সময়ে যেভাবে দেশজুড়ে বেড়েছে মুসলিমদের ওপর অন্যায় অত্যাচার তা ভারতের ইতিহাসে কোন সরকারের সময়ই হয়নি। এবার ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লিতে অবস্থানকালেই মাহারাষ্ট্রের নাগপুরে ঘটতে থাকা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চাক্ষুস স্বাক্ষী হলেন তুলশী গ্যাবার্ড।
উগ্র হিন্দুত্ববাদি সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও এর সাথে আরও কয়েকটি হিন্দুত্ববাদি সংগঠন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং সমাধির পুস্পস্তলিকা পুড়িয়ে দেয়। অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর ছাড়াও মুসলমানদের ওপর নেক্কারজনক হামলার ঘটনাও ঘটায় তারা। বর্তমানে সেখানে কারফিউ চলছে। এখন কি এসব দেখবেন তুলশী গ্যাবার্ড? নাকি তিনি এরপরও গলা ফাটাবেন মুসলিম নিধনকারী উগ্রবাদের জনক নরেন্দ্র মোদির হয়ে?
এইতো কদিন আগে ভারতে হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের ওপর মসজিদের সামনেই হামলা চালাতে দেখা যায় উগ্র হিন্দুত্ববাদিদের। এমনকি মোদির অন্যতম আস্থাভাজন একজন পুলিশ কর্মকর্তা সরাসরি মুসলিমদের জুম্মার নামাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু কি এতটুকু? শেষ পর্যন্ত হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে পবিত্র রমজান মাসেই মুসলিমদের উপাসনালয় মসজিদ ঢেকে দেয় ত্রিপল দিয়ে। এটা সেই ভারত যেখানে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে রাম মন্দির। এছাড়াও আরও অসংখ্য মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়ার খবর পাওয়া যায় কসাই নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে।
তুলশী গ্যাবার্ডকে দিয়ে ভারত তার স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পালানোর পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতনের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ভারত। সর্বশেষ মোদি আমেরিকা সফরকালে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে ট্রাম্পের মনোযোগ আকর্ষণ করে। কিন্তু তখন ট্রাম্প তাতে সায় দেয়নি আর তাই এবার মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলশী গ্যাবার্ডকে দিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে উদ্ভট মন্তব্য করিয়ে ভারত তার স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ইসলাম বিদ্বেষী মোদির দেশে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র খুব কাছ থেকে দেখলেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলশী গ্যাবার্ড। এবারও কি তবে তিনি চুপ থাকবেন? নাকি উদ্বেগ জানাবেন?
আন্তর্জাতিক
ভারতের নাগপুরে আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানো নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডব, কারফিউ জারি

ভারতের নাগপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিতে বিক্ষোভের পর তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার দুপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিতে নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল। বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি ও ঘাসে ভরা সবুজ কাপড়ে আবৃত একটি প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেয় তারা।
পুলিশ জানায়, এদিন কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভিএইচপির বিক্ষোভ চলাকালে মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র গ্রন্থ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন বেশ ক্ষুব্ধ হয় ও পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
সোমবার (১৭ মার্চ) নাগপুরের গণেশপেঠ, মহাল ও গান্ধীবাগ এলাকায় ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। এসময়, পাথর নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এদিন, হিন্দু পুণরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের মূল কার্যালয়ের একেবারে কাছের এলাকাগুলোতেই এসব সংঘর্ষ বাঁধে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ৬ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৩ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন। এদিন, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসও ছোঁড়ে পুলিশ। এছাড়া, নাগরিকদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হওয়ার আহ্বানও জানান তারা।
মঙ্গলবার নাগপুর পুলিশ জানিয়েছে, কোটওয়ালি, গণেশপেঠ, তাহসিল, লাকড়গঞ্জ, পাচপাওলি, শান্তিনগর, সাক্কারদারা, নন্দনবান, ইমামবাড়া, যশোধরানগর ও কপিলনগর থানা এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এদিকে, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী যোগেশ কদম সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, এখনও সহিংসতার কারণ খুঁজে বের করা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
হনসাপুরি অঞ্চলের এক দোকান্দার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করছিলেন। এসময়, তিনি দেখেন একদল লোক গাড়িতে আগুন লাগাচ্ছে। দ্রুত তিনি পানি নিয়ে আগুন নেভাতে গেলে তারা তার মাথায় পাথর ছোঁড়ে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা এএনআইকে জানান, সংঘর্ষ শুরুর আগে প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে আক্রমণকারীরা। সবার মুখই ঢাকা ছিল। তারা ধারালো অস্ত্র, লাঠি ও কাঁচের বোতল নিয়ে এসেছিল। এসেই দোকানগুলোতে তারা হামলা চালায়, পাথর ছোঁড়ে ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
আন্তর্জাতিক
অবৈধভাবে ইসরাইল প্রবেশের চেষ্টা, গুলিতে নিহত ভারতীয়

জর্ডান থেকে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে ঢোকার সময় জর্ডান সেনার গুলিতে প্রাণ হারালেন এক ভারতীয়। নিহতের নাম থমাস গ্যাব্রিয়েল পেরেরা। তিনি ভারতের কেরালা রাজ্যের থুম্বার বাসিন্দা। ঘটনাটি ঘটেছে ১০ ফেব্রুয়ারি। যদিও কেন তিনি ইসরাইলে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য জানা যায়নি।
জর্ডানের ভারতীয় দূতাবাস গতকাল রোববার (২ মার্চ )বিষয়টির কথা জানিয়েছে। একটি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির কারণে ওই ভারতীয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে জর্ডানের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে। এ নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দূতাবাস জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে দূতাবাস।
পরিবারের কাছে দেহ ফেরানোর জন্য জর্ডানের প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।পেশায় মৎস্যজীবী ও রিকশাচালক থমাস চলতি মাসে তিন বন্ধু মিলে পর্যটক ভিসা নিয়ে জর্ডানে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার ৫ দিন পর, থমাস ও তার এক বন্ধু এডিশন অবৈধভাবে ইসরাইলে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় থমাসের। পাশাপাশি আহত হয়ে দিনদুয়েক আগে কেরালায় ফিরেছেন থমাসের বন্ধু এডিশন।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জর্ডানের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে একটি চিঠি আসে। যেখানে বলা হয়, থমাস ও অন্য একজন বন্ধু কারকাক জেলা দিয়ে অবৈধভাবে ইসরাইলে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে তাদের সতর্ক করা হয়। তারপরও সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করলে গুলি চালায় পুলিশ। থমাসের মাথায় গুলি লাগায় সেখানেই মৃত্যু হয় তার। থমাসের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে দূতাবাসের তরফে হাসপাতালে যাওয়া হবে।
সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে। থমাসের পরিবারের কাছে তার পরিচয়পত্রও চেয়ে পাঠানো হয়েছে। অ-আবাসিক কেরালাইটস অ্যাফেয়ার্স (NORKA) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অজিথ কোলাসেরি বলেছেন এটি একটি অবৈধ অভিবাসনের ঘটনা। বৈধ চাকরির ভিসা ছাড়াই তারা ইসরাইলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সমাজের নিম্নস্তরের নিরীহ মানুষ অসাধু রিক্রুটিং এজেন্টদের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে। NORKA -কে এ ধরনের নিয়োগের বিষয়ে কখনই অবহিত করা হয় না। ট্যুরিস্ট ভিসার আড়ালে চলছে অবৈধ নিয়োগ। লোকেরা যখন সমস্যায় পড়ে তখনই আমরা বিশদ বিবরণ পাই।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
- আন্তর্জাতিক12 months ago
বাংলাদেশিদের জন্য সহজ হচ্ছে ব্রাজিলের ভিসা
- বিনোদন12 months ago
জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যে তথ্য জানালেন অপু বিশ্বাস
- বিশেষ প্রতিবেদন12 months ago
বাড়ছে নদীর পানি, সিলেটে আগাম বন্যার শঙ্কা
- প্রবাস6 months ago
স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
- সিলেট6 months ago
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রীর হাতে মসজিদের ইমাম খুন
- বিনোদন7 months ago
আমি একটা ছাগল, এবার আমি মানুষ হব ইনশাআল্লাহ: মাহি
- প্রবাস6 months ago
কানাডায় শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের নতুন নিয়ম
- আন্তর্জাতিক5 months ago
১৪ দেশের শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা