আলোচিত
পারফিউম ব্যবসার আড়ালে দেশের সবচেয়ে বড় হুন্ডির ব্যবসা

দেশে পারফিউম ব্যবসার আড়ালে সবচেয়ে বড় হুন্ডি তৎপরতার প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) অনুসন্ধান চালিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য পেয়েছে। হুন্ডি কারবারে অভিযুক্ত কোম্পানিটির নাম আল হারামাইন পারফিউমস। কোম্পানির মালিক সিলেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এ ব্যবসায়ী এখন গোল্ডেন ভিসার আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বসবাস করছেন। খবর- বণিক বার্তাসিলেটি পোশাক
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের তথ্য অনুযায়ী, মাহতাবুর রহমান নাসিরের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বর্তমানে বিশ্বের ৮৬টি দেশে বিস্তৃত। বাংলাদেশ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুম রয়েছে। অন্যান্য দেশে তার দৃশ্যমান ব্যবসা মূলত আমদানি-রফতানির। যদিও অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, মাহতাবুর রহমান নাসিরের পুরো ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কই হুন্ডি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পারফিউম বা আমদানি-রফতানি ব্যবসার আড়ালে তার প্রধান ব্যবসা মূলত এক দেশের অর্থ অন্য দেশে পাচার করা।
এ ব্যবসায়ীর সম্পদ ও অর্থ পাচারের তথ্য অনুসন্ধানে সম্প্রতি সিআইসির একটি দল ইউএই যায়। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে থাকা মাহতাবুর রহমানের সম্পদ ও অর্থ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। পাশাপাশি অন্য যেসব দেশে তার সম্পদ রয়েছে, সেগুলোর তথ্য চেয়েও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দেশে থাকা মাহতাবুর রহমানের সম্পদের বিষয়েও অনুসন্ধান চালিয়েছে সিআইসি। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সিলেটে মাহতাবুর রহমানের বাড়িতে দুই দফায় তল্লাশি চালানো হয়। ওই বাড়ি থেকে ১০৪টি সম্পত্তির দলিলসহ অন্যান্য নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে বলে সিআইসি সূত্রে জানা গেছে।সিলেট জেলা ভ্রমণ প্যাকেজ
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি সিআইসির পক্ষ থেকে মাহতাবুর রহমান নাসির ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করা হয়। এ তালিকায় মাহতাবুর রহমানের ভাই মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, ছেলে মোহাম্মদ এমাদুর রহমান, ভাতিজা মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান ও মোহাম্মদ এহসানুর রহমান এবং আল হারামাইন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সাব্বির আহমেদের নাম রয়েছে। ব্যাংক হিসাব ছাড়াও তাদের আয়কর নথি পর্যালোচনা করা এবং ভূমি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কাছে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
তদন্ত কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুমগুলো মূলত হুন্ডির টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত হয়। ঢাকার বসুন্ধরা সিটির শোরুমে কেউ টাকা জমা দিলে দুবাইয়ের সিটি সেন্টারে সে টাকা দিরহাম আকারে পরিশোধ করা হয়। ছোট কোনো অংকের অর্থ এসব শোরুমে লেনদেন হয় না। বরং বড় ব্যবসায়ী বা টাকা পাচারকারীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকার অর্থ গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে শোরুমগুলোয় কেবল বিশেষ একটি খাতায় হিসাব রাখা হয়। হুন্ডি কারবারের পাশাপাশি মাহতাবুর রহমানের স্বর্ণ চোরাচালানের বিস্তৃত নেটওয়ার্কও রয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমরা ঢাকায় ও দুবাইয়ে আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুমের আশপাশে অবস্থান নিয়ে দেখেছি, ৩-৪ ঘণ্টায়ও সেখানে পারফিউম কিনতে কোনো গ্রাহক আসেনি।’
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) ছাড়াও মাহতাবুর রহমান নাসিরের বিরুদ্ধে বিস্তৃত হুন্ডি নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও প্রভাবশালীদের অর্থ পাচারে সহায়তাসহ নানা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সুশাসনের ঘাটতি ও অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১২ মার্চ এনআরবি ব্যাংক পিএলসির পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয়। ২০১৬ সাল থেকে টানা নয় বছরের বেশি সময় ধরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মাহতাবুর রহমান নাসির।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব বলেন, ‘মাহতাবুর রহমান নাসিরকে নিয়ে আমাদের তদন্ত কার্যক্রমের ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। যেসব নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আর যেসব তথ্য আমরা পেয়েছি, সেগুলোরও সত্যতা নিরূপণের কাজ চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হলে তবেই এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।’
আল হারামাইন পারফিউমসের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, কোম্পানিটির পারফিউমের মূল্য অনেক বেশি। বাংলাদেশের শোরুমগুলোয় সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের পণ্য রয়েছে। দেশে কোম্পানিটির শোরুম রয়েছে ১৫টির বেশি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, সীমান্ত সম্ভার, গুলশানের পিংক সিটি ও সেন্টার পয়েন্ট এবং বায়তুল মোকাররম মার্কেটে কোম্পানিটির শোরুম রয়েছে। চট্টগ্রামে চারটিসহ আল হারামাইন পারফিউমসের শোরুম রয়েছে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, বগুড়া, সিলেট, রাজশাহী ও রংপুর শহরেও।সিলেট জেলা ভ্রমণ প্যাকেজ
প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখনো কোম্পানিটির সবক’টি শোরুমই লোকসানে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে আল হারামাইন গ্রুপ বাংলাদেশের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তার (সিএফও) দায়িত্বে আছেন পরিমল চন্দ্র ধর।
তিনি বলেন, ‘এতগুলো শোরুম থাকলেও বাংলাদেশে আমরা কখনো মুনাফা করতে পারিনি। এখানে পারফিউমের ওপর ১৫০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এত ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে মুনাফা করা সম্ভব নয়। আগে যা ব্যবসা ছিল, গত কয়েক মাসে সেটিও শেষ হয়ে গেছে। আগের তুলনায় বিক্রি অনেক কমে গেছে।’
শোরুমের আড়ালে আল হারামাইন গ্রুপের হুন্ডি তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিমল চন্দ্র ধর বলেন, ‘এনবিআর তার দাবি প্রমাণ করে দেখাক।’
দেড় দশক ধরে মাহতাবুর রহমান নাসির দেশ-বিদেশে একজন আলোচিত চরিত্র। প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করে সিলেটে ‘কাজী প্যালেস’ নামে রাজকীয় বাড়ি নির্মাণ করে প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। বিলাসবহুল ওই বাড়িতে ভিড় জমাতেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি আমলা ও অলিগার্করা। আর প্রভাবশালী এসব ব্যক্তিরা দুবাই ভ্রমণে গেলে থাকতেন মাহতাবুর রহমানের অতিথি হয়ে। তাদের থাকা, খাওয়া, ঘোরাঘুরিসহ চিত্তবিনোদনের আয়োজন করতেন তিনি।
সিলেটের ইসলামপুর এলাকায় নির্মাণ করা বাড়িটি নিয়েও নতুন করে তদন্ত করছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এরই মধ্যে দুই দফায় বাড়িটি পরিদর্শন করেছে সংস্থাটি। দ্বিতীয় দফায় পরিদর্শনের সময় গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ একজন স্থপতিকেও সঙ্গে নেয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় নিরূপণ করা।
বাড়িটিতে ব্যবহৃত বিলাসবহুল উপকরণ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তারা। পরিদর্শক দলের একজন সদস্য বলেন, ‘বাড়িটিতে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, যেসব আসবাবপত্র বাড়িতে আছে, সেগুলো আমরা কখনো দেখিনি। এ কারণে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করাও সম্ভব নয়। এসব উপকরণ আমদানির সময় যথাযথ কর পরিশোধ করা হয়েছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।’
মাহতাবুর রহমান নাসির জানিয়েছেন, আট একর জায়গাজুড়ে নির্মিত তিনতলা বাড়িটির বিল্ডিং জোন প্রায় ৮০ হাজার বর্গফুট। ২৯টি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোকে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে রয়েছে ২৯টি বিলাসবহুল মাস্টার বেড। বাড়িতে এক সঙ্গে পাঁচ হাজার মানুষের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায়। এর নিচতলায় রয়েছে নয়টি ডাইনিং। আসবাবের পাশাপাশি প্রায় সব নির্মাণ উপকরণও বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। জার্মানি, দুবাই, ফ্রান্স ও লেবাননের প্রকৌশলীরা বাড়ি নির্মাণে ভূমিকা রেখেছেন।
এনবিআর কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ হলো বাড়িটি নির্মাণে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, তা আইন মেনে আমদানি করা হয়নি। যে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, সেটিও মাহতাবুর রহমানের আয়কর নথিপত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে।
মাহতাবুর রহমানের অপরাধ তদন্তের দায়িত্বে থাকা অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেসব রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ী বাড়ি-গাড়ি, হোটেল, মার্কেটসহ বিভিন্ন সম্পদ কিনেছেন, তার প্রায় সবারই পথপ্রদর্শক ছিলেন মাহতাবুর রহমান। দেশ থেকে টাকা পাচারে সহায়তা করা, সে দেশে সম্পদ কিনতে সহযোগিতা করা, আমিরাতের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করে দেয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই এ ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। এসব কাজের বিনিময়ে তিনি কমিশন পান, সেটিই তার আয়ের প্রধান উৎস। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই আমরা তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছিলাম। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে সেসব তদন্ত শেষ করা যায়নি।’
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করছেন মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির।
তিনি বলেন, ‘আমার আয়ের প্রধান উৎস আল হারামাইন পারফিউমস। বাংলাদেশে লোকসানে থাকলেও বিশ্বব্যাপী এটি খুবই জনপ্রিয়। আমি কখনো হুন্ডির ব্যবসা করিনি। অবৈধ কোনো ব্যবসা আমার নেই। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়া আর কোথাও আমার কোনো ব্যবসা নেই।’
যদিও আল হারামাইন পারফিউমসের ওয়েবসাইটে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যেও প্রতিষ্ঠানটির শোরুম আছে বলে উল্লেখ রয়েছে। এনবিআরের অনুসন্ধানকারীদের ভাষ্যমতে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ছোট এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে বাংলাদেশীদের রেমিট্যান্সের অর্থ কিনে নেয় মাহতাবুর রহমানের প্রতিষ্ঠান। সেসব অর্থ বাংলাদেশে না পাঠিয়ে বাংলাদেশী অর্থ পাচারকারীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এভাবেই বিশ্বের ৮৬টি দেশে তার ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হয়েছে।
পতিত সরকারের প্রভাবশালীদের আতিথেয়তা দিয়েই এখন বিপদে পড়েছেন বলে দাবি করছেন মাহতাবুর রহমান নাসির। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে এমপি-মন্ত্রীরা দুবাই যাওয়ার আগে আমাকে খবর দিতেন। তারা কেউ দুবাই গেলেই বিমানবন্দরে গাড়ি পাঠাতে হতো। দূতাবাস থেকেও আমাকে বলা হতো, অমুক মন্ত্রী এসেছেন, কী মেহমানদারি করতে হবে, কোথায় রাখতে হবে। ওই সময় মেহমানদারি না করা ছিল অপরাধ। এখন দেখছি মেহমানদারি করাটাই অপরাধ হয়ে গেছে।’
এ আতিথেয়তার বদলে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেননি বলে আরো দাবি করেছেন দীর্ঘ নয় বছর এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখা এ ব্যবসায়ী।
তথ্যসূত্র : বণিক বার্তা
আলোচিত
সিলেট থেকে প্রথম কার্গো ফ্লাইট গেল স্পেনে

স্বপ্ন এবার সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউরোপের উদ্দেশে বাংলাদেশ বিমানে করে ছেড়ে গেল বহুল প্রতীক্ষিত কার্গো ফ্লাইট। প্রথমবারের মতো ৬০ টন গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে কার্গো বিমানের এ ফ্লাইট সিলেট থেকে স্পেনের উদ্দেশে উড়াল দেয়। যার মধ্য দিয়ে সিলেট থেকে বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
রোববার (২৭ এপ্রিল) রাত সোয় ৮টায় কার্গো ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
পরে বিমানবন্দরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সাফল্য কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি যাত্রা। আমরা আজকে যে সাফল্য অর্জন করলাম, এটি কোনোভাবেই গন্তব্য নয়, এটি একটি যাত্রা। ফ্যাসিস্ট সরকারের অনেক দায় আমাদের নিতে হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমাদের সর্বক্ষেত্রে সক্ষমতা বেড়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে অন্য দেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করতেন এখন তার থেকে অনেক কম খরচে দেশ থেকে কার্গো করতে পারবেন। আজকের এই কার্গো যাত্রার ফলে ঢাকা থেকে ইউরোপে কার্গো পরিবহন ব্যয় কমেছে ১৩ শতাংশ। ফ্যাসিস্ট আমলের সৃষ্ট সমস্যাগুলো সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকায় আমরা সমাধান করতে পেরেছি। স্বাধীনতার পর আজই প্রথম ঢাকার বাইরে থেকে কার্গো ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এটি সিলেটবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট চালু হওয়া নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সিলেটের এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের কার্যক্রম ও সেবা নিশ্চিত করা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় বিমান কোম্পানিগুলোর উড়োজাহাজ এখানে উঠানামা করবে। মানুষের উড়োজাহাজ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকবে।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সমৃদ্ধ করতে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা অতুলনীয়। আর সেই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বৃহদাকার অংশ সিলেটের মানুষ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সিলেটবাসী দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখলেও তাদের কাঙ্ক্ষিত এই বিমানবন্দরটিতে আন্তর্জাতিক মানের সেবা ও সুযোগ-সুবিধার তেমন একটা উন্নতি হয়নি। তবে আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সিলেটবাসীর জন্য নতুন একটি মাত্রা শুরু হলো। আমি আশা করছি, এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
এসময় তিনি বিমান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরও বলেন, প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় বিমানবন্দরে ঘুরাঘুরি করে বুঝলাম, উন্নয়নের নামে বিমানবন্দর প্রশস্তকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এই বিষয়টি খুব সুক্ষ্মভাবে আমাদের বিমান উপদেষ্টা ধরতে পেরেছেন। সে কারণে আমি তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি বলছি না, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সব সেক্টর ভালোভাবে কাজ করছে। তবে হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বেশিরভাগ সেক্টরই ঠিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যার প্রমাণ আজকে পাওয়া গেল।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
কার্গো ফ্লাইট কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে আমাদের কার্গো ফ্লাইটের জন্য অন্য দেশকে ব্যবহার করা হতো। আর এখন আমাদের দেশ থেকেই কার্গো ফ্লাইট শুরু হয়েছে। সিলেট থেকে সপ্তাহে দুটি কার্গো ফ্লাইট রাখা যাবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিলেটের সুধীজন।
সভাপতির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবির ভূইয়া বলেন, আজ দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো। এর মাধ্যমে দেশের রপ্তানিখাতে যুগান্তকারী উন্নতি হবে। আপাতত সিলেট থেকে সপ্তাহে দুটি কার্গো ফ্লাইট যাবে। আমরা ধীরে ধীরে এটি আরো বাড়াবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক খন্দকার শিপার আহমদ, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক সালেহ আহমদ খসরু, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জিয়াউর রহমান চৌধুরী ও এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ।
রোববার প্রথম দিন ঢাকার তিনটি কোম্পানি তাদের পণ্য রপ্তানি করে। এর আগে এসব কোম্পানির মালামাল ট্রাকযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে ইতোমধ্যে কার্গো কমপ্লেক্স ও টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। একইসঙ্গে দক্ষ জনবল ও অত্যাধুনিক নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি সংস্থাপন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের র্যাপিড স্ক্যানিং মেশিন থেকে শুরু করে সব যন্ত্রাংশ স্থাপনের কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এই মেশিনটি শুধু সিলেট ও ঢাকা বিমানবন্দরে রয়েছে। জনবল নিয়োগ ও সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ শেষ করা হয়েছে। এছাড়া প্রথম ফ্লাইটে বিমানে মালামাল তোলার জন্য ঢাকা থেকে যেসব জনবল আসবে তাদের অনুমতিসহ বিমান সংশ্লিষ্ট সকল জনবলের অনুমতির কাজ শেষ হয়েছে।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এয়ারফ্রেইট বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. ফিরোজ হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে কার্গো ফ্লাইট চালুর বিষয়টি দেড় বছর ধরে ট্রায়ালে ছিল। সব প্রস্তুতি শেষে এটি উদ্বোধন হচ্ছে। টার্মিনালে যারা দায়িত্বে আছেন তারাই কার্গো সার্ভিসের কাজে সম্পৃক্ত থাকবেন। তবে কার্গো বিমানে মালামাল তোলার জন্য কিছু স্টাফ ঢাকা থেকে এসেছেন। ইতোমধ্যে ১৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ ও ৪ মে আরও দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতে পারে।
এদিকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সিলেট থেকে সরাসরি কার্গো সার্ভিস চালু হওয়ায় নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ীরা। সিলেটের আমদানি-রপ্তানিকারক মো. আবুল কালাম কালবেলাকে বলেন, এটি সিলেটবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। এতে শুধু ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন না, বিভিন্ন সেক্টরের মানুষের আয়ের পথ বাড়বে।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
তিনি আরও বলেন, সিলেটের ব্যবসায়ীরা কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করা ছাড়াও আমদানিও করতে পারবেন। প্রথম কয়েক মাস হয়ত আমদানি করার পথ তৈরি হবে না। কিন্তু যেহেতু কার্গো ফ্লাইট সরাসরি সিলেটে আসবে, সে হিসেবে আমদানি করারও ভালো সুযোগ রয়েছে। কার্গো ফ্লাইট চালুর পর যাতে বন্ধ করা না হয় এ দাবি জানান তিনি।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, সিলেট থেকে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি করার সুযোগ নেই। সিলেটের ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল রপ্তানি করার ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই ফ্লাইট যাতে সব সময় চালু থাকে সে ব্যাপারে সরকারের নিকট জোর দাবি জানান তিনি।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
একই সঙ্গে বিমানবন্দরে কোয়ারেন্টাইন সার্টিফিকেট, প্যাকেজিং ও পণ্য ফ্রিজিং ব্যবস্থা চালু করা গেলে সিলেটের ব্যবসায়ীরা সরাসরি সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
আলোচিত
সিলেটের মাঠে ভারতের বিপক্ষে খেলবেন হামজারা

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচ হচ্ছে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। সিলেটের ফুটবল প্রেমীরা মাঠে বসে দেখতে পারবেন হামজা-সুনীল ছেত্রীদের লড়াই। আগামী ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে করার উদ্যোগ নিয়েছে বাফুফে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) জাতীয় দলের ম্যাচ ঢাকা বাইরে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ সিলেটে এবং বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচ আমরা চট্টগ্রামে আয়োজন করছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা দেওয়ান হামজা চৌধুরীর বাড়ি সিলেট বিভাগে। হবিগঞ্জের বাহুবলের ছেলে এবার খেলবেন নিজের বিভাগীয় শহরে। এরই মধ্যে সিলেটের ফুটবল কর্তারা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
জানা গেছে, আগামী ১৮ নভেম্বর সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি অনুষ্টিত হবে। তার আগে আগামি ১০ জুন বাংলাদেশ ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। ৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের এম. এ. আজিজ স্টেডিয়ামে খেলবে হংকংয়ের বিপক্ষে।
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে এর আগেও আন্তর্জাতিক ফুটবল হয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন জেলা স্টেডিয়ামকে ফুটবলের জন্য চেয়েছিলো। না পাওয়ায় দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ফুটবল ও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ হয়নি সিলেটে। তবে এবার জেলা স্টেডিয়ামে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেরাচ্ছে ফেডারেশন।
আলোচিত
সিলেট বিমানবন্দরে আটক: ৪টি অন্তর্বাস ও পোশাকে ছিল গলানো সোনা

অন্তর্বাস থেকে শুরু করে এক ব্যক্তির গেঞ্জি ও ব্যবহৃত কাপড়গুলোয় ছিল সোনার প্রলেপ। কিন্তু সাধারণ চোখে বিষয়টি বোঝার উপায় ছিল না। সোনা গলিয়ে কাপড়ে লেপে দেওয়া হয়েছিল এগুলো। স্ক্যানারে পরীক্ষার পর বিষয়টি ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে। আটক ব্যক্তির নাম আলীম উদ্দিন (৪০)। তিনি সিলেটের গোয়াইনঘাটের বাসিন্দা।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্র জানায়, আলীম উদ্দিন দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি গোয়াইনঘাটে হলেও তিনি রাজধানী ঢাকায় অবতরণের টিকিট করেছিলেন। অবতরণের পর আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে উড়োজাহাজের ভেতর থেকে নামিয়ে আনেন কাস্টমস ও এনএসআইয়ের গোয়েন্দারা। পরে স্ক্যানারে পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর পরিধেয় কাপড়ে সোনা গলিয়ে আনার বিষয়টি ধরা পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। এ সময় আলীমের পরিহিত চারটি অন্তর্বাস, দুটি গেঞ্জি, একটি শার্ট, প্যান্টসহ আটটি কাপড় জব্দ করা হয়। ওই ব্যক্তির পরিধেয় একাধিক কাপড়ে মেলে সোনার অস্তিত্ব। পরে এগুলো জব্দ করা হয়
গোয়েন্দা সংস্থার আরেক কর্মকর্তা জানান, আলীমের সঙ্গে একই বিমানে আরেকজন সোনা চোরাচালানকারী ছিলেন। তাঁকে ঢাকা বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে।
সিলেট কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব বিমানবন্দর ও এয়ারফ্রেইট বিভাগ) ইনজামাম উল হক বলেন, আলীম উদ্দিন একসঙ্গে কয়েকটি অন্তর্বাস ও গেঞ্জি পরে এসেছিলেন, সেগুলোতে সোনার প্রলেপ দেওয়া ছিল। তাঁর পরিহিত কাপড়গুলো পুড়িয়ে সোনাগুলো উদ্ধার করা হবে। কাপড় পোড়ানো না হলে কত পরিমাণ সোনা আছে, সেটি জানা যাবে না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিধেয় কাপড়ে প্রায় এক কেজি সোনা তিনি এনেছেন।সিলেট জেলা ট্যুর প্যাকেজ
ওই কাস্টমস কর্মকর্তা আরও বলেন, আলীমকে আপাতত সিলেট বিমানবন্দরে রাখা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম শেষে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আলোচিত
সিলেট থেকে আবার কার্গো ফ্লাইট চালু হচ্ছে রবিবার

সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন।
এদিন সন্ধ্যা ৭টায় সিলেট থেকে স্পেনের উদ্দেশে ৬০ টন পণ্য নিয়ে ছেড়ে যাবে বাংলাদেশ বিমানের একটি কার্গো ফ্লাইট।
জানা গেছে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইটটি সরাসরি ইউরোপে পণ্য পরিবহন করবে।
গত ছয় বছর ধরে সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট বন্ধ থাকায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য পাঠাতেন রপ্তানিকারকরা।
বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য প্রথম উদ্যোগ হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো সেবা চালু করছে সরকার। খুব শিগগিরই কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকেও কার্গো ফ্লাইট চালু করা হবে।
সিলেট অঞ্চলের শাক-সবজি, আনারস, লেবুজাতীয় ফল, সাতকড়া, পান, হিমায়িত মাছ, সুগন্ধি চাল, বেতের আসবাবপত্র, নকশিকাঁথা এবং কুটির শিল্পের বিশাল বাজার রয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ উদ্দিন আহমদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “সম্প্রতি ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্গো কমপ্লেক্স ও টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। রবিবারের ফ্লাইটের জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
আলোচিত
টোল প্লাজায় যুবদল নেতার নেতৃত্বে হামলা, ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই

লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা চালিয়ে কর্মীদের মারপিট করে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে টোল প্লাজার পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। টোল না দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু (৪০) নামের স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জনের একটি দল এই হামলা চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি মাহফুজার রহমান রাজু লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকার বাসিন্দা। তিনি গোকুন্ডা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এজাহারে মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রংপুর শহরের মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য মো. নাজমুল আলম মামলাটির বাদী হয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ৩টার দিকে যুবদল নেতা মাহফুজার রহমান (৪০), ফজলুর রহমান (৩৫) ও আবদুর রহিম (৪২) মোটরসাইকেল যোগে তিস্তা সড়ক সেতু পার হচ্ছিলেন। তারা টোল প্লাজায় এসে টোল না দিয়ে যেতে থাকলে থামার জন্য সংকেত দেন টোল প্লাজার কর্মীরা। তারা টোল দেবেন না, এমনকি তাদের আরও যত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলোও টোল দেবে না বলে হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে টোল প্লাজার কর্মীদের কথা–কাটাকাটি হয়। এরপর রাত ৮টার দিকে মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনের একটি দল দা, ছোরা, লোহার রড ও দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মোটরসাইকেল ও অটোযোগে এসে টোল প্লাজায় হামলা চালান। হামলাকারীরা কর্মচারীদের মারপিট করেন।
এ সময় টোল প্লাজার কর্মচারী মো. জুয়েল ইসলামকে (৩৭) মারপিট ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টোল প্লাজার ক্যাশবাক্স থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রধান আসামি মাহফুজার ছিনিয়ে নেন। এ সময় টোল প্লাজায় ভাঙচুর করা হয়। টোল প্লাজায় কর্মরত কর্মীরা প্রাণভয়ে দৌড়ে পাশে থাকা আরেক ক্যাশঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় সেখানেও হামলা চালানো হলে টোল প্লাজার ম্যানেজার সুরুজ্জামান (৪০) গুরুতর আহত হন। সুরুজ্জামানের ক্যাশবাক্স থেকে মিঠু (৩৮) ও আবদুর রহিম (৪২) নামের দুজন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুরুজ্জামান (৪০) ও জুয়েল ইসলাম (৩৭) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া টোল প্লাজার আরও দুই কর্মী মোসলেম উদ্দিন (৪০) ও আক্কাস আলী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আহত আরেক কর্মী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, তার নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মামলার বাদী নাজমুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আসামিরা টোল প্লাজার কর্মীদের বিনা দোষে বিনা উসকানিতে মারপিট করে গুরুতর আহত করেছেন। নগদ ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ১৪ লাখ টাকা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।”
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, “তিস্তা সেতুর টোল প্লাজায় হামলার সংবাদ পেয়ে বুধবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তার ও ছিনিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
আলোচিত
বিয়ানীবাজারে হত্যা মামলার আসামীকে যুবলীগ নেতাকে ধরে পুলিশে দিলো ছাত্র জনতা

বিয়ানীবাজার থানা প্রাঙ্গণে নিহত ময়নুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি ছাত্রলীগ কর্মী ফাহিম আহমদকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি পৌরসভার দক্ষিণ ফতেহপুর (দাসগ্রাম) এর সফিক উদ্দিনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে পৌরশহরের পিএইচজি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলা চলাকালে তাকে আটক করেন ছাত্র-জনতা। এরপর তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। থানার ডিউটি অফিসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃত ফাহিম আহমদ গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গুলিতে নিহত ময়নুল ইসলাম হত্যা মামলার ২৬ নং আসামী। নিহতের স্ত্রী শিরিন বেগম বাদি হয়ে গত বছরের ২৬ আগস্ট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৭। বর্তমানে মামলাটি সিলেট সিআইডি’তে তদন্তাধীন রয়েছে।
- আন্তর্জাতিক12 months ago
বাংলাদেশিদের জন্য সহজ হচ্ছে ব্রাজিলের ভিসা
- বিনোদন12 months ago
জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যে তথ্য জানালেন অপু বিশ্বাস
- বিশেষ প্রতিবেদন12 months ago
বাড়ছে নদীর পানি, সিলেটে আগাম বন্যার শঙ্কা
- সিলেট6 months ago
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রীর হাতে মসজিদের ইমাম খুন
- প্রবাস6 months ago
স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
- বিনোদন7 months ago
আমি একটা ছাগল, এবার আমি মানুষ হব ইনশাআল্লাহ: মাহি
- প্রবাস6 months ago
কানাডায় শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের নতুন নিয়ম
- আন্তর্জাতিক6 months ago
১৪ দেশের শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা