সিলেট নগরীর আবাসিক হোটেলগুলোতে দিন দিন বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ। সন্ধ্যা নামলেই অনেক হোটেল যেন রূপ নেয় মধুচক্রে, যেখানে তরুণ-তরুণীদের অবাধ যাতায়াত আর অনৈতিক কর্মকাণ্ড গভীর রাত পর্যন্ত চলে। শহরের মিরাবাজার, শিবগঞ্জ, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, কাজলশাহ ও দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন হোটেল স্থানীয়দের চোখে এখন অশান্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
অভিভাবকদের দাবি, এ ধরনের কার্যকলাপ তরুণ সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। প্রেম, বন্ধুত্ব আর আড্ডার আড়ালে নষ্ট হচ্ছে নৈতিকতা। ফলে শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, যা সামগ্রিকভাবে সামাজিক কাঠামোকে দুর্বল করছে।
এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অভিযান শুরু করেছে। গত আট দিনে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও বিভিন্ন থানার অভিযানে ২৭ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়েছে। ‘আলী বাবা’, ‘শেরাটন’, ‘ভাই ভাই আবাসিক হোটেল’, ‘মা আবাসিক হোটেল’, ‘ঢাকা প্যালেস’, ‘আল ইসলাম’, ‘তালহা গেস্ট হাউজ’, ‘সিলেট রেস্ট হাউজ’, ‘গ্র্যান্ড সাউদা’ ও ‘হোটেল জাহান’— এসব স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, “শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.)-এর পবিত্র মাটিতে অনৈতিক কার্যকলাপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ধরনের হোটেলবৃত্তিক অসামাজিক কাজ রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এদিকে নতুন পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী দায়িত্ব গ্রহণের পরই অসামাজিক কর্মকাণ্ড দমনে কড়া অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “সিলেট একটি পূণ্যভূমি, এখানে অনাচার চলতে পারে না। অপরাধ শূন্যে না আসা পর্যন্ত অভিযান চলবে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কাজ করবে নগরবাসীর ইচ্ছা অনুযায়ী।”
নগরবাসী এখন আশা করছে, পুলিশের এ ধারাবাহিক তৎপরতায় সিলেটের হোটেলগুলো থেকে মধুচক্রের অবসান ঘটবে এবং তরুণ সমাজ সঠিক পথে ফিরে আসবে।




