উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ও শেওলা ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এলাকা কবলিত হয়েছে। এ দুই ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীর ১০টি ডাইক (নদী রক্ষা বাঁধ) বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এবং ডাইক দিয়ে প্রবল বেড়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শংকা রয়েছে।
এরই মধ্যে নিজ উদ্যোগে দুবাগ বাজারের ব্যবসায়ী ও নয়াদুবাগ এলাকার বাসিন্দারা বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ডাইক মেরামত করেছেন। পানির প্রবল স্রোতের কারণে এসব মেরামত কাজের স্থায়ীত্ব নিয়ে খোদ এলাকাবাসীর শংকা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে বিয়ানীবাজারের পুরাতন ফেরীঘাট সড়ক, জিরোপয়েন্ট-জকিগঞ্জ সড়কের খাড়াভরা অংশসহ বেশ কিছু গ্রামীন সড়ক।
দুবাগবাজার, বৈরাগীবাজারেও পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। একই সাথে কবলিত দুই ইউনিয়নের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
সরেজমিন, বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর দুবাগ ইউনিয়নের নেরাউদি, মেওয়া, নয়া দুবাগ, গুচ্ছগ্রাম এবং শেওলা ইউনিয়নের দিগলবাক এলাকার ১০টি অংশের ডাইক ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। দুবাগের মেওয়া এলাকার আসলম উদ্দিন, বাবলু হোসেনসহ কয়েকজন বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মাটি ব্যবসায়ীরা রাতে কোন এক সময় ডাইক কেটে দেয়া তারা দুর্ভোগে পড়েছেন।
প্রত্যেক বন্যায় এভাবে ডাইক কেটে দিয়ে ওই শ্রেণির কথিপয় লোক লাভবান হলেও কয়েক ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাদের দাবি উপজেলা প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে (মাটি ব্যবসায়ী) আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে হঠাৎ বন্যার কবল থেকে এলাকার মানুষ রক্ষা পেতেন।
আকস্মিক বন্যার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামীম কবলিত এলাকা ও ভেঙ্গে ডাইক পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব ডাইক মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।
একই সাথে কবলিত এলাকায় ৬৬ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে কবলিত পরিবার সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। একই সাথে ৩শ’ প্যাকেট শোকনো খাবার এবং অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ডাইক কেটে দেয়ার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। আমাদের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে বিয়ানীবাজারের পাঠানো হয়েছে। ডাইক মেরামতে প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।