Friday, November 22, 2024
Homeআলোচিতডিবি হারুনের শতকোটি টাকার 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট'

ডিবি হারুনের শতকোটি টাকার ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়াসহ অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ উঠেছে। হারুন অর রশীদ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে শত কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ নামে অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল একটি প্রমোদাগার। হেলিপ্যাড ও অত্যাধুনিক সুইমিং পুলসহ কী নেই সেই রিসোর্টে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও বিত্তশালীদের আনন্দ-ফুর্তির জন্য অত্যন্ত নিরাপদ স্থান হয়ে উঠেছিল হারুনের এই রিসোর্ট।

হারুনের নিজ গ্রামের ৪০ একরের বেশি আয়তনের প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ২০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ডিলাক্স রুমের ভাড়া প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা। রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন তার ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি উদ্বোধন করা হয়।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে হারুনের পরিবারের মাত্র ৫ থেকে ৭ একর জমি থাকলে বাকি জমি নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখল করেছেন তিনি। এ ছাড়া যেসব মালিক জমি বিক্রি করেছেন তারা প্রকৃত মূল্য পাননি। প্রকৃত মালিকদের কেউ ১০ লাখের মধ্যে ১ লাখ, কেউ ২০ লাখের মধ্যে ২ লাখ এই হারে টাকা পেয়েছেন। এখনও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন দাম না পাওয়ায় তাদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি।


হারুনের প্রতরণার শিকার হওয়া তাদের মধ্যের একজন মিঠামইন সদর ইউনিয়নের গিরীশপুর গ্রামের দিলীপ কুমার বণিক। তিনি বলেন, ‘হারুন রিসোর্টের কথা বলে তার এক একর ১০ শতাংশ জায়গা নিয়েছেন। জমির কোনো দরদামও নির্ধারণ করা হয়নি। আমাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। অথচ জমির দাম হবে অন্তত ২০ লাখ টাকা। আমার মতো এমন অন্তত আরও ১২ জন রয়েছেন, যাদের নামমাত্র টাকা দিয়ে জমি নিয়ে গেছে হারুন।’

জনরোষে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে সেদিন থেকেই হারুনের প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রিসোর্টে বুকিং চালু রয়েছে।

দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হারুন ২০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০০০ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশে চাকরি পান। অথচ তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় হারুন। দ্বিতীয় জিয়াউর রহমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক। তৃতীয় জিল্লুর রহমান পুলিশের ইনস্টেকটর হিসাবে কর্মরত। এ ছাড়া হারুনের প্রতিষ্ঠিত বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’-এর এমডি হিসাবে আছেন সবার ছোট শাহরিয়ার।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Last Post