Thursday, September 12, 2024
Homeআলোচিতসিলেটে ছয় মামলায় সাবেক তিনমন্ত্রী-এমপি, মেয়রসহ আসামি ৬৪০৪

সিলেটে ছয় মামলায় সাবেক তিনমন্ত্রী-এমপি, মেয়রসহ আসামি ৬৪০৪

সিলেটের চারটি থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার মিছিলে হামলা, গুলি বর্ষণ, হত্যা ও হত্যা প্রচেষ্টা এবং ভাচঙুর, লুটপাটের ঘটনায় পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি করে সিলেট নগরীর কোতোয়ালি ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় এবং ফেঞ্চুগঞ্জে এবং অপরটি গোলাপগঞ্জ থানায় (হত্যা) মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় সাবেক তিনমন্ত্রী-এমপি, সিলেট সিটি মেয়র ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৬ হাজার ৪০৪ জনকে আসামি করা হয়।

এমপি-মেয়রসহ ৪০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় (৪ই আগস্ট) সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা ও গুলির ঘটনায় মামলা হয়েছে। সাবেক এক সংসদ সদস্য ও তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০১জনের র নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের আব্দুছ ছালামের ছেলে মো. আব্দুর রহমান।

এ মামলায় এজারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, এসএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্তি পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম উত্তর) মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই কল্লোল গোস্বামী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান, সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, মুহিবুর রহমান উরফে বম কামাল, ফরহাদ বক্স, সুব্রত পুরকায়স্ত, আব্দুল হাই মামুন, আশফাকুল ইসলাম সাব্বির, পান্না দাস, পলাশ দাস, মো. নুরুল ইসলাম খাঁন, দক্ষিণ কাজল শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ বাবলু, শরিফ মিয়া, মুজিবুর রহমান মুজিব, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মৃনাল কান্দি দাস, মো. ছায়েদ আলী, মো. আমীর আলী, তারেক, আব্দুল হাই মামুন, শেখ সুয়েব আহমদ মজনু, শেখ হেলাল আহমদ, আছমত আলী আমীর, আশফাকুল ইসলাম ছাব্বির, আল মাহমুদ মলয়, বাবু আহমদ, বিমান দেব নাথ, যুবলীগ নেতা রাহিন আহমদ, নাহিদ চৌধুরী, সম্ভু শাহ, ১নং জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক মিয়া, হারুন মিয়া, মনি লাল ভৌমিক, রাসেল আহমদ, বিষ্ণু দেব নাথ, সেলিম আহমদ জুবেল, ছালেদ আহমদ ডালিম, ফলিক আহমদ, হারুন আহমদ, জুবায়ের আহমদ জুবা, রুহুল আমিন রনি, চমক লাল দেব, জাবেদুর রহমান ডেনেস, হাবিবুর রহমান নিজু, মাসার আহমদ শাহ, মাহবুবুল ইসলাম চৌধুরী মিছলু, রয়েল আহমদ, জয়নাল আবেদীন, ফখরুল ইসলাম, দিদারুল আলম, ফরিদ উদ্দিন, মো. শাকিল চৌধুরী জুবেল, কুরুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বুরহান উদ্দিন রাজন, জালাল আহমদ, ফরহাদ বক্স, সুব্রত পুরকায়স্ত, পান্না দাস, পলাশ দাস, মো. নুরুল ইসলাম, টিপু সুলতান, আব্দুল মুমিন, সিপার আহমদ, দেবাসিশ দেবু, সাইফুর রহমান, হোসেন মিয়া, কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন, আকবর হোসেন (মেম্বার), দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আলী, সাইদ আহমদ, রোমন আহমদ, ছারোয়ান আহমদ, হোসাইন আহমদ, শহিদুল আলম, বেলাল মিয়া, আব্দুল বাছিত, জুনেদ আহমদ, ফারহান সাদিক, মেহরাব হোসেন জুনেল, পারভেজ আহমদ, নাহিদ সুলতান পাশা, সুয়েব মিয়া, মো. সেকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম জয়নাল, গবিন্দ দাস, রিফাত ইসলাম, আকিবুল রহমান রাসেল, ফয়ছল আহমদ, আওয়াল মাছুম রিদয়, শেখ টিটু আহমদ, মাহফুজুর রহমান জাহাঙ্গীর, মাশার আহমদ শাহ, আশরাফুল হক এমাদ, আব্দুল আওয়াল কয়েছ, বিজন কুমার দেবনাথ, ডি.এম ফয়ছল, জাবের আহমদ।

কোম্পানীগঞ্জে দুই মামলায় আসামি ৫৪৩
কোম্পানীগঞ্জে আবু তাহের মুমিনের অপহরণের ঘটনায় ১০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) কোম্পানীগঞ্জ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার পাড়ুয়া মাঝপাড়া গ্রামের মো. শওকত আলী বাবুল (৬০)।

মামলায় আসামি হলেন সিলেট-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী ইমরান আহমদ (৭০), গোয়াইনঘাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক (৫৫), অকিল বিশ্বাস (৪৭), তামান্না নাজমুন হেনা (৪১), ফারুকুজ্জামান রানা (৩২), আহমদ রেজা রুবেল (২৭), আব্দুর রহমান (৩৫), শাহ আলম স্বাধীন (৩০), কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী, কোম্পানীগঞ্জ থানা এসআই জাহাঙ্গীর আলম।

বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় ১২০ ব্যাগ ত্রাণ নিয়া বিতরণের জন্য যান ইমরান আহমদ। বাদি তার ফেইসবুক আইডিতে একটি পোষ্টে মত প্রকাশের অধিকার হিসেবে পোষ্টে উল্লেখ করি যে, রাতের ভোটের অবৈধ কর্মহীন মন্ত্রী কোম্পানীগঞ্জের ক্ষুর্ধাত মানুষের সাথে ত্রাণ দেওয়ার নামে মশকরা করতে এসেছিলেন। শুধুমাত্র ফাটোসেশনের জন্য’। উল্লেখিত পোষ্টগুলোর কারণে বাদির ছোট ভাই ‘আবু তাহের মুমিন’ ভিকটিমকে ৯ ও ১০ নং আসামির নেতৃত্বে সাদা পোষাকে আরো ১২জন অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী আসামিরা বাদির ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করেন। কালো কাপড়ে চোঁখ বেধে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে কালো গ্লাসযুক্ত একটি মাইক্রোতে করে তুলে নিয়ে যায়। অতপর বাদির আত্মীয়স্বজন পরদিন কোম্পানীগঞ্জ থানায় গিয়ে মুমিনের সন্ধান করলে ৯ ও ১০ নং আসামীসহ থানা কর্তৃপক্ষ ভিকটিমের ব্যাপারে কিছু জানে না বলে বিদায় করে দেয়। ফেইসবুক পোষ্টের কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অপহরণপূর্বক হত্যা করে লাশ গুম করতে চেয়েছিল। ২৫ জুলাই রাতে বাদির ভাইকে অজ্ঞাতনামা আসামীরা কোম্পানীগঞ্জ ধলাই ব্রীজের পশ্চিমে চোখ ও হাত বাধা অবস্থায় ফেলে যায়।

অপরদিকে কোম্পানীগঞ্জে আরেকটি মামলা দায়ের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ মামলায় ৩৩ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইয়াকুব আলী (৫৭), যুগ্ম সম্পাদক অখিল চন্দ্র বিশ্বাস (৫৫), কোম্পানীগঞ্জ থানা যুব লীগের সভাপতি হাজী আলা উদ্দিন (৫০), কোম্পানীগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি উমর আলী (২৮), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম স্বাধীন (২৭), কোম্পানীগঞ্জ যুবলীগের সদস্য জাফর মিয়া (৩৭), আজিম উদ্দিন (৩০),জাকির হোসেন (৩৮), ফারুকুজ্জামান রানা (৩৫), আতাউর রহমান (৪৫) ও মজনু মিয়া (৫৫), সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল (৬০), কোম্পানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সদস্য জাকির হোসেন (৩৫), আনোয়ার হোসেন (৫০), ইকবাল হোসেন (৫০), শরীফ আহমদ (২০), ইকবাল হোসেন (২৬), নাঈম আহমদ অনন্ত (৩০), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলাল আহমদ (৫৫), আলাম উদ্দিন (৫০), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তামান্না আক্তার হেনা, আজমল হোসেন সেলিম (৫২), আনোয়ার সেলিম, জুনাইদ ইভান (২৮), জীবন মিয়া (৩৬), আব্দুর রহমান, ফরিদ মিয়া (৩৬), সাতাই (৩৭), নাজমুল ইসলাম, ছালেক আহমদ, সিরাজ উদ্দিন, রাসেল মিয়া (২৫), ৬নং দক্ষিণ রনিখাই ইউ/পি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন এমাদ।

গোলাপগঞ্জে হত্যা মামলায় আসামি ৪৮
গোলাপগঞ্জে আরেক হত্যা মামলায় এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেকমন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ ২৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার বারকোট গ্রামের মৃত তাজ উদ্দিনের স্ত্রী রুলী বেগম।

মামলায় নুরুল ইসলাম নাহিদ ছাড়াও্ এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, (৬০), কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর ফখর (৪৫), কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম সুয়েব (৫৫), আওয়ামী লীগ নেতা গুলজার হোসেন (৪৫), দক্ষিণ সুরমার সাইদুল ইসলাম (৩৮) ও সাহেদ আহমদ (৩২), লিটন আহমদ (৩৫), আমুড়ার কামাল মিয়া (৪৫), উপজেলার শেরপুরের হাবিবুর রহমান (৪৫) ও শাকিল আহমদ (৩৫), বাঘা সোনাপুরের সুরমান আলী (৫৫), হাজিপুরের বদরুল ইসলাম (৪৫), কায়স্তগ্রামের মনসুর আহমদ (৩৭), জকিগঞ্জের কসকনকপুরের নজরুল হক তফাদার (৪৫), বুধবারিবাজরের আবজাল হোসেন (৪০), চন্দরপুরের হাসান আহমদ (৩৪), কায়স্তগ্রামের কবির আহমদ মেম্বার (৪০), হাবিবুর রহমান শোভন (৩০), শরীফগঞ্জের দুলাল আহমদ (৪০), ইসলামপুরের রাসেল আহমদ (৩৫), খাটকাইয়ের এনামুল হক এনাম (৩৫), জইন খান (৩০), জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), জসিম উদ্দিন (৪০),আজিজুর রহমান (৫০), নাহিদ আহমদ (৩০)।

নগরীতে দুই মামলায় আসামি ৫৪১১
সিলেট নগরীর কোতেয়ালি থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। এর একটিতে পুলিশ। অন্যটির বাদি ব্যবসায়ী।
৫ আগস্ট বিকেলে কোতোয়ালি থানায় হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত ৪/৫ হাজার জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মামলাটি দায়ের করেন কোতোয়ালি থানার থানার এসআই রমাকান্ত দাস।

ওইদিন সিলেট নগরীর নয়াসড়ক পয়েন্টে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার নিজগাও গ্রামের মৃত ছুরত আলীর ছেলে নগরীর নয়াসড়ক নান্না বিরিয়ানির স্বত্ত্বাধিকারী মো. আক্কাছ আলী।
মামলায় সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদসহ (৩৬) ১১১ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় অপর আসামিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ (৩০), মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশোর জাহান সৌরভ (৩২), জেলার সভাপতি নাজমুল ইসলাম (৩৫), ২৪নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি আকবর হোসেন অপু (২৯), একই ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা হাবিব আহমদ সাফাত (২৫), আতিকুর রহমান মুন্না (২৭), এসএম. আলী হোসেন (৫০), তৌসিফ নিমাদ (২৪), মিসবাউল ইসলাম কয়েছ (৪৫), সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ (৪০), তুষার আহমদ (২৮), জাবেদ আহমদ (৪০), হুমায়ুন রশিদ সুমন (৩৭), বেলাল আহমদ (৪২), রায়হান খান রুহান (২৮), জামাল উদ্দিন (৩৮), নজরুল ইসলাম (৪৫), আব্দুল বাছিত রুম্মান (৩৫), হায়দর (৩৪) আব্দুস সালাম রাহাত (৩০), সাহিদুর রহমান (৩৫), জুয়েল আহমদ (৩৬) প্রমুখ।
তথ্যসূত্র: শ্যামল সিলেট

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Last Post