প্রবাস
কানাডার টিকিট কাটার আগে যা করা জরুরি

স্বপ্নের দেশ কানাডা এখন অনেকের কাছেই বাস্তবের। একসময় কানাডার ভিসা প্রাপ্তি নিয়ে যে পরিমাণ সম্ভব না ছিল; বর্তমানে সেটি সম্ভাবনাতেই রূপ নিয়েছে। আমাদের পরিচিত-অপরিচিত বাংলা কমিউনিটির বড় একটি অংশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চাইতে এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কানাডামুখী। কানাডায় আসার পর এখানকার স্বচ্ছ বাস্তবতা অনেকের সামনেই এক কঠিন-জটিল এবং অস্বস্তিকর বাস্তবতার মুখোমুখি করে দিচ্ছে।
তারপরও যাদের প্রস্তুতি আছে; আছে মানসিক দৃঢ়তা এবং আর্থিক সচ্ছলতা কিংবা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মত সংগতি রয়েছে; তারা নিঃসন্দেহে কানাডার অর্থনীতি এবং সমাজনীতিতে একসময় শুধু যুক্তই হবেন না অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির স্টিয়ারিংয়ে বসে হয়তো নেতৃত্বও দেবেন।
ইমিগ্র্যান্টদের দেশ কানাডাতে অরিজিন খোঁজা আটলান্টিকে ঝিনুক খোঁজা প্রায় সমার্থক। এখানে রেসিজম যা আছে সেগুলির চামড়ার। দক্ষিণ এশিয়ার মতো পদবির নয়; তবে সেখান হতে আসা কিছু সংখ্যক সেই ইর্ষাবেড়ায় আটকা আছে এখানেও। তাদের জন্য সরি বলুন। নিজেকে শক্ত রাখুন।
কানাডায় এই ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে অনেকেই নিজে প্রসেস করছেন। আবার বড় একটি অংশ কোনো না কোনো এজেন্ট কিংবা কোন তৃতীয় মাধ্যমে তাদের ভিসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন কিংবা করছেন। এই ভিসা প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর যে বা যারা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন; তারা নিশ্চয়ই দেশের স্থাবর-অস্থাবর সকল কিছু গুছিয়ে স্থায়ীভাবে চলে আসার জন্য যে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন এজন্য ফ্লাই করার ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।
অনেকেই তাদের ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে সকল ডকুমেন্ট দিয়েছেন; সেটার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। সেজন্য কানাডায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে কিংবা কখনো তৃতীয় কারো ইন্ধনে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন কিংবা রেনডমলি ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশন চালাচ্ছে। যা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়াও বটে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে অনেকেই ফেঁসে যাচ্ছেন অর্থাৎ তথ্যে গরমিলের কারণে কিংবা তথ্যগোপনের সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভিসা ডিএক্টিভ করে দিচ্ছে।
এক্ষেত্রে এজেন্ট মাধ্যমে ভিসা প্রাপ্তরা তাদের চুক্তিবদ্ধ টাকা লেনদেন করে ফেললে পরবর্তীতে সেটি যেমন ফেরত পাচ্ছেন না; তেমনি কানাডা অভিমুখেও যাত্রা করতে পারছেন না। যা সব দিক দিয়ে এসব ভিসাপ্রাপ্তদের জন্য এক বিশাল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর্থিক এবং সামাজিকভাবে তারা এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
এই লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনারা যারা নিজে অথবা এজেন্ট মাধ্যমে ভিসাপ্রাপ্ত হয়েছেন তারা বিমানের টিকেট কনফার্ম করার পূর্বে; এমনকি যাত্রার প্রারম্ভে আপনাদের ভিসার ভ্যালিডিটি চেক করুন অথবা ভ্যালিডিটি চেক করে তবেই টিকেট কাটুন। টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর সাথে ফ্লাইং পর্যন্ত চুক্তি করুন।
ইতিমধ্যে চারপাশে চেনাজানা অনেকেরই ভিসা ডিএক্টিভের সংবাদ অনেকেই শুনেছেন; আমিও শুনেছি। এবার পরিচিত একজনের কাছে আসা ইমেইল পেয়ে তাহার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার কারণে এই সতর্কতামূলক লেখাটির উদ্দেশ্য হলো হয়তো কারো উপকারে আসতে পারে।
ভিসা ইনভ্যালিড হওয়ার সম্ভাব্য প্রধান কারণ হলো আবেদনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ভুল তথ্য প্রদান করা হয়েছে যা পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ কিংবা ভিসা অফিসারের কাছে ধরা পড়েছে। যার কারণে ভিসা ডিএক্টিভ করা হয়েছে। বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানোর কারণ হচ্ছে ইমিগ্রেশনে আপনার ভিসা যাচাই করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসার সেটি ডিএক্টিভ কিংবা ইনভ্যালিড দেখতে পাচ্ছেন। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে অনলাইন টিকেট খুঁজে না পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গত সপ্তাহে ঢাকা হতে ফ্লাই করে ট্রানজিট পয়েন্ট হংকং থেকে ফেরত এসেছেন আমাদের পরিচিত দুইজন।
ভিসা ডিএক্টিভ বা ইনভ্যালিড করার সাথে সাথে আইআরসিসি থেকে আপনার আবদেনকৃত মাধ্যমে ইমেইলে জানানো হয়; কিন্তু আপনি মেসেজ/ইমেইল চেক করেননি বা যিনি আপনার ফাইল প্রসেস করেছেন তিনি আপনাকে সেটা জেনেও জানাননি।
আর্থিক ক্ষতি এড়াতে টিকিট কনফার্ম করার পূর্বে এবং বিমানবন্দরে যাওয়ার পূর্বে আপনার ভিসার ভ্যালিডিটি চেক করুন। এটা চেক করা খুবই সহজ। আপনার জিসি কি একাউন্টে ঢুকলেই ভিসা স্ট্যাটাস ভ্যালিড/ ডিএক্টিভ অথবা ইনভ্যালিড লেখা থাকবে। এছাড়া ইমেইলে মেসেজ আসবে জিসি কি চেক করার জন্য।
আইআরসিসি যদি মনে করে আপনি তাদেরকে কোন ভুল তথ্য দিয়ে ভিসা পেয়েছেন এবং ভিসা ইস্যু করার সময় সেটা ধরা পড়েনি পরবর্তীতে সেটা ধরা পড়েছে; তখন তারা আপনার ভিসা বাতিল/ ডিএক্টিভ /পেন্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এক্ষেত্রে ভিসা বাতিল/পেন্ডিং করার জন্য আপনার পাসপোর্ট তাহারা যেহেতু পাচ্ছে না সেজন্য সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় ইমেইল করে জানিয়ে দিচ্ছে!। কারণ আপনাকে বললেও আপনি নিশ্চয় ভিসা বাতিল করার জন্য পাসপোর্ট আবারো তাদের কাছে জমা দেবেন না।
তাই কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনের সাথে অটো জেনারেটেড ইউসিআই নাম্বার বা ভিসা নাম্বার ব্লক করে দেয় অনলাইন সিস্টেমে। এই ব্লক করার নাম হচ্ছে ভিসা ইনভ্যালিড/ ডিএক্টিভ /পেন্ডিং কিংবা বাতিল।
বিশ্বের যে কোন দেশেই আপনার যাত্রা শুভ হউক। ট্রাভেলিং এর ক্ষেত্রে নানাবিধ ও সমস্যা আসতেই পারে তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কানাডা ভিজিটের ক্ষেত্রে আপনার সর্তক পদক্ষেপ আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে। সবার প্রবাসজীবন হউক আনন্দময় এই শুভকামনা সবসময়ই।
আলোচিত
নিউ জার্সিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি বাবা-মেয়ে নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং তার আট বছর বয়সী মেয়ে নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) নিউ জার্সিতে মেয়ে ও বাবাকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। এদিন তাদের জানাজায় অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
নিহত শরফু উদ্দিনের (৩৬) বাড়ি ফেনীর ফরহাদ নগরে। তার ৮ বছর বয়সী মেয়ে রামিসাও মারা গেছে দুর্ঘটনায়। গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন শরফুর ২৬ বছর বয়সী স্ত্রী। অচেতন অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ১০টায় বার্লিংটন কাউন্টির ইন্টারস্টেট ২৯৫ মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নিউ জার্সি পুলিশের মুখপাত্র জেফরি লেবরন। নিউ জার্সির এলিজাবেথ সিটির বাসা থেকে এই পরিবার যাচ্ছিল পেনসিলভেইনিয়ার ডেলাওয়ার স্টেটে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জেফরি লেবরন জানান, শরফু একটি “হুন্দাই টুসন” গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রী ও মেয়ে ছিলেন। এসময় একটি “হুন্দাই সান্তা ফে” গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রচণ্ড বেগে রাস্তার পাশের গার্ডরেলে ধাক্কা খেয়ে ফের মহাসড়কে ওঠে আসে এবং শরফুর গাড়িতে সজোরে ধাক্কা দেয়। এরপর দুইটি গাড়িই রাস্তা থেকে বেরিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
হুন্দাই সান্তা ফে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ২৯ বছর বয়েসী এক তরুণী। তিনি থাকেন ফ্লোরিডায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থাও ভালো নয়।
নিউ জার্সির বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা জানান, অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে নিউ জার্সিতে থাকতে শুরু করেন শরফু উদ্দিন। একটি ফাস্টফুডের দোকানের ম্যানেজার ছিলেন তিনি।
আলোচিত
যুক্তরাষ্ট্রে ‘গ্রিন কার্ড’ প্রক্রিয়া সাময়িক স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিবাসি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য অভিবাসন আইন কঠোর করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরইমধ্যে কঠোর যাচাই-বাঁচাইয়ের জন্য সাময়িকভাবে ‘গ্রিন কার্ড’ আবেদন স্থগিত করেছে দেশটি। দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ছাত্র এবং অন্যান্য বিদেশী নাগরিকদের আটক এবং নির্বাসন নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সম্প্রতি অভিবাসন প্রক্রিয়া কড়াকড়ি করে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে অভিবাসন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ‘গ্রিন কার্ড’ বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার আবেদন কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, তারা কিছু শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিবাসন প্রক্রিয়া ও গ্রিনকার্ড আবেদন পর্যালোচনা স্থগিত করেছে। যা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ও সংঘাতপূর্ণ দেশ থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এতে প্রতারণা বন্ধ এবং জাতীয় ও জননিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে। এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের মতো নিরাপত্তা ঝুঁকির আওতাভুক্ত দেশ থেকে আগত অভিবাসনপ্রত্যাশীরাও বেশি প্রভাবিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন ভেটিং তথা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আগত শরণার্থীদের জন্য আরেকটি দফা জটিলতা তৈরি করবে।
এই সিদ্ধান্ত দেশটিতে অবস্থানরত হাজারো বাংলাদেশি পরিবারকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, যারা তাদের আত্মীয়স্বজনদের গ্রিন কার্ড প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরণের বাধা যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন সিস্টেমে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করতে পারে এবং ইউএসসিআইসি-এর আয়তেও প্রভাব ফেলতে পারে, যেহেতু এটি একটি ফি-ভিত্তিক সংস্থা।
এদিকে ট্রাম্প গত মঙ্গলবার নতুন একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে মার্কিন নাগরিকদের। ডাকযোগে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রেও আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ।
আলোচিত
অবশেষে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেলেন ‘সিলেটি শামীমা’

অবশেষে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন সিলেটি বংশোদ্ভূত নারী শামীমা বেগম। দুই ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব ফেরত পাওয়ার মামলার আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট শামীমা ও অন্য আবেদনকারীর পক্ষে রায় দেন। ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন ইউকে হিউম্যান রাইটস ব্লগ এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
শামীমার পিতার বাড়ি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের উত্তর দাওরাই গ্রামে।
এন ৩ ও জেডএ বনাম যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (২০২৫) ইউকেএসসি-৬ মামলায় শামীমার পক্ষে রায় দেন আদালত। এই মামলাটি ছিল মূলত—জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় এ দুই ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল সম্পর্কিত আদেশ নিয়ে। বিবাদীপক্ষ যুক্তি দিয়েছিল যে, এই সিদ্ধান্ত (নাগরিকত্ব বাতিল) তাদের রাষ্ট্রহীন করে তুলবে না। কারণ, তাঁরা ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি দ্বৈত নাগরিকত্বধারী।
এই মামলায় পরে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, এই আদেশ প্রত্যাহারের ফলে আপিলকারীদের পুরো সময়জুড়ে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবেই গণ্য করতে হবে। অর্থাৎ, শামীমা অতীতে ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন, এখনো আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে যখন যুক্তরাজ্য ছাড়েন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সিরিয়ায় যাওয়ার পর তিনি ইসলামিক স্টেটের ডাচ সদস্য ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন। সেখানে তাঁর তিনটি সন্তান হয়, যাদের সবাই মারা যায়। এরপর স্বামী রিয়েডিও এক কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা যায়।
সেই ঘটনাপ্রবাহের পর শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান। কিন্তু ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। ওই সময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়েছিল, শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের মূল কারণ ছিল জাতীয় নিরাপত্তা।
নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের সেই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য ২০২৩ সালে ২৪ বছর বয়সী শামীমার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেছিলেন। আপিল আদালতের তিনজন বিচারক সর্বসম্মতিক্রমে তাঁর নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারের আবেদন খারিজ করে দেন।
২০১৯ সালে আইএস পরাজিত হওয়ার পর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আল–রোজ শিবিরে শামীমার সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি এখনো সেখানেই আছেন। শামীমার আইনজীবীরা বলছেন, সেই শিবিরের অবস্থা করুণ! সেখানে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে মানুষ। রোগবালাই নিত্যকার ঘটনা। সেখানে শামীমাকে অন্য ব্রিটিশ নারী ও শিশুদের সঙ্গে নির্বিচারে আটকে রাখা হয়েছে। অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে সেখানে।
শামীমা বেগম জেনেশুনে একটি নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগদানের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এই কাজের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত। তবে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার যুক্তরাজ্যের সুরক্ষা এবং তা বজায় রাখা। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এমন যেকোনো সিদ্ধান্ত রক্ষার্থে আমরা অটল থাকব।’
আলোচিত
লন্ডনে বাংলাদেশি দম্পতিকে ৯২ হাজার পাউন্ড জরিমানা

যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ত্রুটিপূর্ণ ই-বাইকের ব্যাটারি থেকে একটি ফ্ল্যাটে আগুন লেগে একজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশি দম্পতি সোফিনা বেগম (৫২) ও আমিনুর রহমানকে (৫৫) ৯২ হাজার পাউন্ডেরও বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৫ মার্চ ভোরে পূর্ব লন্ডনের শ্যাডওয়েল এলাকায় ওই ফ্ল্যাটে আগুন লাগার পর ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মিজানুর রহমান নামে ৪১ বছর বয়সী একজন বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও অনেকে।
শ্যাডওয়েলের ম্যাডক্স হাউজ নামক ভবনে অবস্থিত দুই বেড রুমের এই ফ্ল্যাটে তিনজন থাকার অনুমতি থাকলেও সেখানে ২৩ জন বসবাস করতেন বলে জানা যায়। ফ্ল্যাটটিতে ১৮টি বিছানা ছিল, যেখানে কেউ কেউ বাংক বেড ভাগ করে ঘুমাতেন, আবার অনেকেই মাটিতে শুয়ে থাকতেন।
যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ত্রুটিপূর্ণ ই-বাইকের ব্যাটারি থেকে একটি ফ্ল্যাটে আগুন লেগে একজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশি দম্পতি
সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের স্নেয়ার্সব্রুক ক্রাউন কোর্টে বিচারপ্রক্রিয়া শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা রা হয়। এতে দম্পতি সোফিয়া বেগম ও আমিনুর রহমানকে পৃথক ধারায় ৯২ হাজার পাউন্ডেরও বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
বিচারক এমা স্মিথ এই দম্পতিকে আবাসন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে বলেন, বাড়িওয়ালারা আইন এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তার প্রতি সম্পূর্ণ অবহেলা দেখিয়েছেন। তারা কেবল নিজেদের আর্থিক লাভের জন্য মানুষকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ত্রুটিপূর্ণ ই-বাইকের ব্যাটারি থেকে একটি ফ্ল্যাটে আগুন লেগে একজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশি দম্পতি
কোর্ট সেফিনা বেগমকে ১০ হাজার পাউন্ড জরিমানা, দুই হাজার পাউন্ড প্রসিকিউশন খরচ এবং প্রাণনাশের অপরাধের জন্য ৭৮ হাজার ৪৯ পাউন্ড বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন। আমিনুর রহমান, ‘অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ অসচ্ছল’ বলে আদালতে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, তাকে দুই হাজার পাউন্ড জরিমানা এবং মাত্র ১.০১ পাউন্ড বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মামলাটি পরিচালনা করা গেমা গিলেট আদালতে বলেন, এটি স্পষ্ট যে ফ্ল্যাটটি দীর্ঘদিন ধরেই ভয়াবহভাবে গাদাগাদি ছিল। সেখানে ২৩ জন বসবাস করছিলেন, যার মধ্যে একজন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মারা যান।
যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ত্রুটিপূর্ণ ই-বাইকের ব্যাটারি থেকে একটি ফ্ল্যাটে আগুন লেগে একজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশি দম্পতি
টাওয়ার হ্যামলেটসের এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, কিছু বাড়িওয়ালা এখনও ভাড়াটিয়াদের শোষণ করে চলেছে, নিরাপত্তা নিয়ম উপেক্ষা করছে এবং মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে—এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
তিনি সরকারকে জাতীয় পর্যায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভাড়াটিয়াদের সুরক্ষায় নতুন আইন প্রণয়নের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আলোচিত
কানাডার সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ডলির হ্যাট্রিক

কানাডার প্রাদেশিক নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মৌলভীবাজারের কৃতি সন্তান ডলি বেগম। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে স্কারবোরো সাউথ ওয়েস্টের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে জয়লাভের পর ডলি বেগম বলেন, আজকের জয় পুরো দল এবং স্কারবোরোর জন্য। আমি আপনাদের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ যারা পুরো নির্বাচনজুড়ে এই কঠিন লড়াই জয়ে পাশে ছিলেন।
অন্টারিও নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য ডলি বেগম এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রাদেশিক আইনপ্রণেতার দায়িত্ব নিচ্ছেন। ২০১৮ সালে প্রথমবার প্রাদেশিক নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। এরপর এখন পর্যন্ত তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করলেন তিনি।
ডলি বেগম মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনূমূখ ইউনিয়নের সন্তান। পরিবারের সঙ্গে শৈশবে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। তার বেড়ে ওঠা অন্টারিওর স্কারবোরোতে। পরবর্তী সময়ে টরন্টোর ডব্লিউ এ পোর্টার কলেজিয়েট ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করেন। তিনি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে উন্নয়ন, প্রশাসন ও পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
আলোচিত
ভিসা বাতিল করছে কানাডা!

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে যেসব দেশ তার মধ্যে ভারত অন্যতম। ইতোমধ্যে কয়েকটি সামরিক বিমানে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ভারতীয় শিকলে বেঁধে ফেরত পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। ভারতে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক চর্চা।
এর মধ্যেই এবার খবর বের হয়েছে কানাডায়ও বাতিল হচ্ছে ভারতীয়দের ভিসা। সম্প্রতি কানাডা প্রশাসন ভিসাসংক্রান্ত নতুন একটি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা সেদেশে ভারতীয় অভিবাসীদের জন্য ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, আমেরিকার পরে এবার কানাডার নিশানায় ভারতীয় অভিবাসীরা। ভারত-কানাডা সম্পর্কের অস্থিরতার মধ্যে কানাডা প্রশাসন নতুন একটি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বহু ভিসা বাতিলের তৎপরতা শুরু হয়েছে। যা মূলত ভারতীয় অভিবাসীদের জন্য নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে চলেছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, খালিস্তানি বিতর্কের পর এবার ভিসা বাতিলের পদক্ষেপ। ভারত ও কানাডার বিদ্বেষে আরও একটি নতুন বিন্দু তৈরি হলো। সে দেশে কর্ম এবং অধ্যয়নরত কয়েক লাখ ভারতীয় এর ফলে সমস্যায় পড়তে চলেছেন। বর্তমানে কানাডায় ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ২৭ হাজার!
অন্য আরেকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতীয় অভিবাসীদের জন্য কানাডার নতুন নীতি তাদের আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছে। ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে কানাডার অভিবাসন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার ফলে সেদেশে অবস্থানরত ভারতীয় কর্মী এবং ছাত্রদের জন্য বিপদ বাড়বে।
গত কয়েক বছরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে। কানাডার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভারতের সঙ্গে অনেক বিষয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত খালিস্তানি ইস্যু নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং জার্মানির পর, কানাডাও তার অভিবাসন নীতিতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা ইতোমধ্যেই ৩০০-রও বেশি ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে। ব্রিটেনেও অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে এবং সম্প্রতি জার্মানিতে ক্ষমতায় এসেছেন কট্টরপন্থি নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ, যিনি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, শরণার্থী আইন এবং অভিবাসীদের সামাজিক সুবিধা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে কানাডা অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।
কানাডার গৃহীত নতুন নীতিতে ‘অস্থায়ী আবাসিক ভিসা’ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে সে দেশে কাজ করতে যাওয়া ভারতীয় কর্মী এবং কানাডার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ভারতীয় ছাত্ররা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই নীতির কারণে প্রায় ৪ লাখ ২৭ হাজার ভারতীয় ছাত্র এবং অনেক কর্মীরই ভিসা বাতিল হতে পারে।
তবে, এই নতুন নীতির প্রভাব শুধু ভারতীয় অভিবাসীদের ওপরই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কানাডার অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ায়, দেশটিতে বিভিন্ন দেশের অভিবাসী কমিউনিটি সমস্যায় পড়বে। বিশেষত, যারা ওয়ার্ক ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কানাডায় আছেন, তাদের জন্য এখন নতুন করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়া সহজ হবে না।
- আন্তর্জাতিক12 months ago
বাংলাদেশিদের জন্য সহজ হচ্ছে ব্রাজিলের ভিসা
- বিনোদন12 months ago
জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যে তথ্য জানালেন অপু বিশ্বাস
- বিশেষ প্রতিবেদন12 months ago
বাড়ছে নদীর পানি, সিলেটে আগাম বন্যার শঙ্কা
- প্রবাস6 months ago
স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
- সিলেট6 months ago
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রীর হাতে মসজিদের ইমাম খুন
- বিনোদন7 months ago
আমি একটা ছাগল, এবার আমি মানুষ হব ইনশাআল্লাহ: মাহি
- প্রবাস6 months ago
কানাডায় শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের নতুন নিয়ম
- আন্তর্জাতিক5 months ago
১৪ দেশের শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা