Connect with us

প্রবাস

ইতালির সড়কে ঝরলো সিলেটের নাঈমের স্বপ্ন

ইতালির সড়কে ঝরলো সিলেটের নাঈমের স্বপ্ন

সংসারের হাল ধরতে প্রায় ৪ মাস আগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পাড়ি জমিয়েছিলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মিসপাউর রহমান নাঈম (২২) নামে এক যুবক। ইতালি পৌছার মাত্র ৪ মাসের মাথায় স্বপ্নবাজ তরুণ নাঈমের মৃত্যুর সংবাদ পেল তার পরিবার।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাঈমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহত নাঈমের স্বজনরা। এর আগে ইতালির ট্রাইসেস স্পেসিয়া প্রাদেশিক সড়কে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান উপজেলার ৭নং করগাঁও ইউনিয়নের মিল্লিক গ্রামের সাঈদুর মিয়ার পুত্র মিসপাউর রহমান নাঈম।

জানা যায়, ওই সময় নাঈম স্কুটারযোগে কাজে যাচ্ছিলো। ট্রাইসেস স্পেসিয়া প্রাদেশিক সড়ক লুকুগনানো ক্রীড়া মাঠের কাছে পৌছামাত্র একটি কারের ধাক্কায় একটি বাইসাইকেল ও স্কুটার আরোহী নাঈমসহ দুই বাংলাদেশী তরুণ ছিটকে পড়েন।

মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মিসপাউর রহমান নাঈম (২২) মৃত্যুবরণ করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় অপর যুবককে ট্রাইকেস পানিকো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিক ঘাতক গাড়ি চালককে আটক করে তার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

নাঈমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার চাচা মশিউর রহমান টিটু জানান, প্রায় ৪ মাস আগে নাঈম ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌছায়। ইতালিতে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা গেছে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি আমার ভাতিজার লাশ যাতে বাড়িতে এনে দাফন করতে পারি। দুই ভাইয়ের মধ্যে নাঈম সবার ছোট। পরিবারকে ভালো রাখার জন্য গিয়েছিল ইতালি।

Continue Reading

আলোচিত

কানাডায় থাকার আশা ভঙ্গ! ফিরে যেতে হবে

কানাডায় থাকার আশা ভঙ্গ! ফিরে যেতে হবে

গানের কথার সঙ্গে মিল রেখে দিয়ে যদি শুরু করি তাহলে বলা যায় “এ কানাডা এখন তো আর সে কানাডা নেই”

হ্যাঁ, এটাই সত্যি। একটা সময় ছিল মানুষ নানাভাবে কানাডায় এসেছেন। বিশেষ করে বৈধভাবে আসার একটা মাধ্যম ছিল স্টুডেন্ট ভিসা। স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে এসেছেন সারা বিশ্বের স্টুডেন্টরা। তারমধ্যে বাংলাদেশ থেকে আসা স্টুডেন্টের সংখ্যাও কম নয়।

এই স্টুডেন্টরা আগে যারা এসেছেন তাদের জন্য সমস্ত প্রক্রিয়াটা সহজ ছিল। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া সহজ ছিল। তারপর পিআরও পেয়ে যেতেন সহজে। তারপর সিটিজেন হয়ে যেতেন নির্দিষ্ট সময়ে। তারপর তাদের বাবা-মা স্পন্সর ভিসায় এসে এখানে নাগরিকত্ব পেয়ে যেতেন। কিন্তু এখন উল্টে গেছে পাশার দান। বলতে পারেন এখন প্রায় সবকিছুর রুলস কঠিন হওয়া বা পাল্টে যাওয়া, CRS পয়েন্টস বেশি হওয়া, PGWP এ কড়াকড়ি সব মিলিয়ে গোন্ডগোল বেঁধে গেছে। এখন আর পিআর পাওয়া সহজ হচ্ছে না। আবার স্টুডেন্টদের বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব আবেদনের সুযোগও স্থগিত করা হয়েছে।

এসব অসুবিধার আওতায় পড়েছেন অসংখ্য স্টুডেন্ট। যারা এখানে এসে পড়ালেখা শেষ করেছেন ডিপ্লোমা বা পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদের কথা বলছি তারা CRS পয়েন্টস মিট না হওয়া ও ওয়ার্ক পারমিট শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন আর কানাডায় থাকা সম্ভব হচ্ছে না। চলে যেতে হবে বাড়িতে। এমন সংখ্যা অসংখ্য। এ বছরেই দেশে ফিরে যেতে হবে বারো লক্ষ বা তার বেশি স্টুডেন্টকে। আর যারা বর্তমানে পড়াশোনায় চালু আছেন তাদের তো আরো সমস্যা। তাদের তো ওয়ার্ক পারমিট পাওয়াতেই নানা বাঁধা হবে নতুন রুলসে। সবার জন্য ইজি হবে না।

আমার ফেসবুকের মেইন আইডিতে ফ্রেন্ডলিস্টের একজন ছোট ভাই আছে। ২০২০ সালে সে এসেছিল টরন্টোতে। সে আমাকে মাঝেমাঝে মেসেজ দিত। তার একটা কথা আমার মনে আছে। একদিন আমার এক খাবারের পোস্ট দেখে সে বলেছিল “আপু, আমাকে খাওয়াবেন?” তখন আমি তাকে চিকেন বিরিয়ানি ও অন্যান্য অনেক কিছু রান্না করে দিয়ে এসেছিলাম। তখন সে বলেছিল “আপু, আপনি আমার জন্য যা করেছেন, আমার আপন বোনও সেটা করত না।”

যাই হোক, সেই ছেলে তো পড়া শেষ করে তিন বছরের ওয়ার্ক পারমিটে ছিল। টরন্টোতে একটা ইন্টারন্যাশনাল রেস্টুরেন্টে কাজ করত। তারপর সে অন্টারিও থেকে অন্য প্রভিন্সে মুভ হয়েছিল যদি ভিসা পেতে সুবিধা হয় সেইজন্য। সেখানে গিয়েও সে একটা রেস্টুরেন্টে কাজ নিয়েছিল।

অনেক দিন তার খবর জানতাম না। ফেসবুকে তার ছবি দেখে তাকে মেসেজ দিয়ে বললাম, তুমি কি পিআর পেয়েছ?
সে বলল ” না আপু। আমার হবে না মনে হচ্ছে। আমার ফিরে যেতে হবে।”

তারপর তার কাছে তো অনেক কিছু শুনলাম। সে বলল, টরন্টো থেকে অন্য প্রভিন্সে গিয়ে তার সবচেয়ে বড়ো ভুল হয়েছে। ওখানের রেস্টুরেন্ট তাকে কোনো রকম হেল্প করে নি। তারপর সেখানে একটা কার না হলে চলাই যায় না। একটা কার কিনতে হয়েছে। যার জন্য তার খরচ হয়েছে মাসে $600 cad করে। যেটা টরন্টোয় থাকলে তার খরচ হতো না।

আমি জিজ্ঞেস করলাম তার কতো খরচ হয়েছিল সেটা উঠেছে কিনা আর কিছু জমাতে পেরেছে কিনা।

সে বলল, তার পড়ার টিউশন ফি বাবদ খরচ হয়েছে $39 cad. যার অর্ধেক সে আসার আগে ও বাড়ি থেকে শোধ করেছে। আর বাকিটা চাকরি করে দিয়েছে। পড়া+অন্যান্য খরচ সবকিছু মিলিয়ে সে চাকরি করে ওঠাতে পেরেছে।
আমি জানতে চাইলাম কিছু কি জমাতে পেরেছ? সে বলল, “জি আপু। $30 cad জমাতে পেরেছি সব খরচের বাইরে।

তারমানে ধরেন ২৫ লাখ টাকার মতো হবে। খারাপ কী! আমি তো মনে করি এই অর্থ দিয়ে সে দেশে একটা বিদেশি রেস্টুরেন্ট চালু করতেও পারবে। আরো অনেক স্টুডেন্ট আছে যাদের থাকার সম্ভাবনা নেই, তারা এখন শুধু ইনকাম করে টাকা জমানোর চেষ্টা করছে। তবে কেউ কেউ হয়তো এতোটা পারছে না।

সেই ছেলে বলছে, “আপু, কানাডায় এসে অনেক কিছু শিখেছি। এতেই আমি হ্যাপি। দেশে থাকলে তা পারতাম না।” এখন তার ভবিষ্যৎ ভাবনায় অন্য পরিকল্পনা। সে জানাল, সে জার্মানির দিকে মুভ হবে। সেখানে ব্যাচেলর ডিগ্রি করে মাস্টার্সও করবে। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা রাখলে জার্মানিতে টিউশন ফি লাগে না বলে সে জানাল।

যাই হোক, এটাই হলো জীবনের মান বোঝার উপযুক্ত পরিকল্পনা। কোনো বাঁধাতেই জীবনকে কোনো এক নির্দিষ্ট আঙ্গিকে আটকে রাখতে হয় না। মুভ অন হতে হয়। যেটা চাওয়া হয় সেটা না পেলে খুশি হয় না মন। তাই বলে হতাশায় যেন মন আচ্ছাদিত না হয় তাই ঐ ছেলের মতো বলতে হবে আমি যা পেয়েছি বা শিখেছি তাতেই আমি খুশি। চেষ্টা তো সবাই করেছে।

অসংখ্য স্টুডেন্ট এখন মেন্টালি রেডি। ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টের সংখ্যা বেশি। এমনকি আমার বেসমেন্টে থাকা স্টুডেন্টদের সবার হয়তো হচ্ছে না। তাতে তারা মোটেও বিচলিত না। বরং বলেছে, আমরা দেশে ফিরে যাব। পিআর হলেও থাকতাম না। তারা রেডি টু গো ব্যাক টু দ্যা কান্ট্রি। আমি বলব, সবাই ব্যাকে না, সামনে এগিয়ে যেতে হবে। হয়তো সামনের কিছু জীবনের জন্য আরো ভালো, আরো মসৃণ হবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।
কাজী হালিমা আফরীন
টরন্টো, কানাডা।

Continue Reading

আলোচিত

কানাডায় নিখোঁজ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

কানাডায় নিখোঁজ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

কানাডার টরেন্টোতে নিধুয়া মুক্তাদির নামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সময় শনিবার (৪ জানুয়ারি) ইরি লেকের তীরে পোর্ট ব্রুস সৈকত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) নিধুয়ার ভাই আব্রাহাম মুক্তাদির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিধুয়া মুক্তাদির (১৯) কানাডায় বাংলাদেশি লেখক ও উপস্থাপক সামিনা নাসরিন চৌধুরীর মেয়ে। তিনি মায়ের সঙ্গে স্কারবারোর ক্রিসেন্ট টাউনে বসবাস করতেন।

জানা গেছে, নিহত নিধুয়া মুক্তাদির কানাডার ফানশাওয়ে কলেজের নার্সিং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ৪ ডিসেম্বর পোর্ট স্ট্যানলি থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে হক ক্লিফ রোড থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাকে খুঁজে পেতে পুলিশ ডুবুরি এবং ড্রোনের সাহায্য নিয়েছিলেন। তবুও তার সন্ধান মিলছিল না। শনিবার ওয়ানেটা বিচে এক কানাডিয়ান নাগরিক নিধুয়ার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। মঙ্গলবার অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ নিশ্চিত করে যে, এটি নিখোঁজ নিধুয়ার লাশ।

কানাডা পুলিশ জানিয়েছে, কানাডার ফানশাওয়ে কলেজে নার্সিংয়ে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ৪ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের শরীরে অস্বাভাবিক কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

আব্রাহাম মুক্তাদির বলেন, পুলিশ আমার বোনের মরদেহ খুঁজে পেয়েছে। আমার পরিবার খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমার বোন খুব সাহসী এবং দৃঢ়চিত্তের অধিকারী ছিল। তাকে হারিয়ে আমার পরিবার খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

নিধুয়া মুক্তাদির মা সামিনা নাসরিন চৌধুরী বলেন, মেয়ের সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়েছে গত ২৯ নভেম্বর। আমার মনে হয় আমি একটি খারাপ স্বপ্ন দেখছি, জেগে উঠে দেখব সব ঠিক আছে। আমার মেয়ে বেঁচে আছে। আমি শুধু মেয়েকে ফিরে পেতে চাই, আমার আর অন্য কোনো চাওয়া নেই।

Continue Reading

আলোচিত

কানাডায় মা-বাবা নিয়ে স্থায়ী হওয়ার সুবিধা বন্ধ, বিপাকে বাংলাদেশিরা

কানাডায় মা-বাবা নিয়ে স্থায়ী হওয়ার সুবিধা বন্ধ, বিপাকে বাংলাদেশিরা

এত দিন নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কানাডায় স্থায়ী হওয়া সন্তানরা তাদের মা-বাবা, দাদা-দাদি ও নানা-নানির জন্য স্থায়ী আবাসনের (পিআর) ব্যবস্থা করতে পারতেন। তবে ২০২৫ সালে এ ধরনের সুবিধা নতুন করে আর দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন, উদ্বাস্তু ও নাগরিকত্ব বিষয়ক বিভাগ (আইআরসিসি)।

প্যারেন্ট অ্যান্ড গ্রান্ডপ্যারেন্টস স্পন্সরশিপের (পিজিপি) আওতায় নতুন বছরে আর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না বলে নিশ্চিত করেছে আইআরসিসি। এতে করে কানাডার স্থায়ীভাবে বসবাসকারীরা আগের মতো মা-বাবা, দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানির জন্য পিআরের ব্যবস্থা করতে পারবেন না।

আইআরসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যারা পিজিপির আবেদন করেছিলেন নতুন বছরে শুধু সেসব আবেদনপত্র নিয়ে কাজ চলছে। তবে কেউ চাইলে দেশটির সুপার ভিসা সুবিধার আওতায় নিজের নিকটাত্মীয়দের কানাডা বসবাসের সুযোগ করে দিতে পারবেন। এ ভিসার আওতায় এক নাগাড়ে পাঁচ বছর কানাডা থাকার সুযোগ পাবেন তারা।

অভিবাসীর সংখ্যা কমাতে ২০২৫ সালে আইআরসিসি ২০ শতাংশ পিআর সুবিধা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এতে বছরের শুরুতেই প্রভাব পড়েছে পিজিপি প্রোগ্রামের ওপর। আগের আবেদনের ভিত্তিতে পিজিপি প্রগামে এ বছর সাড়ে ২৪ হাজার মানুষকে কানাডায় স্থায়ীকরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আইআরসিসি।

অভিবাসনে কড়াকড়ি
বিগত বছরগুলোতে কানাডা অভিবাসননীতিতে উদার থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, বর্তমানে কানাডা অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে চায়।

অভিবাসনের ব্যাপারে কঠোর নীতির ফলে ২০২৫ সালে পিআর প্রগ্রামের বাইরে কানাডায় বসবাসকারী অস্থায়ী ১২ লাখ বিদেশি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন- এমন তথ্য উঠে এসেছে টরন্টোভিত্তিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।

এখন থেকে প্রতিবছর পিআর সুবিধা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইআরসিসি। বিগত সময়ে প্রতিবছর পাঁচ লাখ পিআর দেওয়া হলেও এখন সেটি কমিয়ে ২০২৫ সালে ৩ লাখ ৯৫ হাজার অভিবাসীকে পিআর দেবে বলে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। এ সুবিধা ২০২৬ সালে কমিয়ে ৩ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৭ সালে আরো কমিয়ে ৩ লাখ ৬৫ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০২৫ সালে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ৯৪ হাজার ৫০০ ফ্যামিলি, অর্থাৎ পারিবারিক ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আইআরসিসির। এর মধ্যে ৭০ হাজার ভিসা পাবে স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাসকারীদের স্ত্রী-সন্তানরা।ফ্যামিলি ট্যুর প্যাকেজ

ট্রুডো সরকার কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধি থামানোর প্রয়াস হিসেবে এই নীতি গ্রহণ করেছে। ২০১৫ সাল থেকে উদারনীতির আওতায় বিগত এক দশকে কানাডায় অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। এতে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন সুবিধা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তাই অভিবাসনের ওপর কড়াকড়ি আরোপে অটুট থাকছে দেশটির সরকার।

বিপাকে বাংলাদেশিরা
ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাশ জয় (৩৫) পাঁচ বছর ধরে কানাডার একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কানাডায় পিআর পাওয়া রীতিমতো দুরূহ হয়ে উঠেছে। পিআর পেতে সরকার-নির্ধারিত নির্দিষ্ট পয়েন্ট অর্জন করতে হয়, যার মান বাড়ানো হয়েছে সম্প্রতি। এতে যেসব বাংলাদেশি পিআর ছাড়া কানাডায় বাস করছেন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’

শুধু প্রসেনজিৎ নন, কানাডায় প্রায় এক দশক ধরে ব্যবসা করছেন সালাহউদ্দিন বাচ্চু (৩৭)। তিনি জানান, তার কানাডা যাওয়ার প্রথমদিকে চাইলে নিজ খরচে স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মাকে নিয়ে আসা যেত। দিন দিন এই অবস্থা কঠিন হয়েছে। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ পিজিপির আবেদন করছেন আর সুযোগ পাচ্ছেন লটারিতে নাম ওঠা হাতেগোনা কয়েকজন।

কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে ১ লাখের বেশি বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ষাটের দশক থেকে কানাডায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের বসবাস শুরু হলেও আশির দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ গত দুই দশকে কানাডায় বাংলাদেশির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

এত দিন কানাডায় বাংলাদেশিদের কাজ পাওয়া কিংবা পিআর সুবিধার জন্য কোনো বেগ পেতে না হলেও দিন দিন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে। এর ওপর পিজিপি সুবিধা বন্ধ হওয়ায় যারা পিআর পেয়েছেন, পরিবার নিয়ে তারাও পড়েছেন বিপাকে।

Continue Reading

আলোচিত

কানাডা নেওয়া যাবে না বাবা-মা ও দাদা-দাদিকে

কানাডা নেওয়া যাবে না বাবা-মা ও দাদা-দাদিকে

কয়েক দশক ধরে কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দারা বাবা-মা এবং দাদা-দাদি স্পনসরশিপ (পিজিপি) কর্মসূচির আওতায় স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্য বাবা-মা এবং দাদা-দাদিকে দেশটিতে নেওয়ার জন্য স্পনসর করতে পারতেন। কিন্তু বহুল জনপ্রিয় এই সুযোগ আর থাকছে না।

দেশটির অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক মিলারের জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান আবেদনের ব্যাকলগ দ্রুত শেষ করার দিকে মনোনিবেশ করায় বাবা-মা এবং দাদা-দাদির জন্য স্থায়ী বসবাসের স্পনসরশিপের নতুন আবেদন গ্রহণ করা সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে কানাডা।

কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব (আইআরসিসি) বিভাগ ঘোষণায় বলেছে, তারা চলতি বছরে এই কর্মসূচির আওতায় আর নতুন কোনও আবেদন গ্রহণ করবে না। কানাডার সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে অনেক বাংলাদেশি পরিবারও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছেন।

বিষয়টি পরিষ্কার করে আইআরসিসি বলেছে, তারা ২০২৪ সালে জমা দেওয়া আবেদনগুলোর প্রক্রিয়াকরণ চালিয়ে যাবে। চলতি বছরে পিজিপি কর্মসূচির আওতায় কোনও নতুন আবেদন গ্রহণ করা হবে না। অতীতে এই কর্মসূচির আওতায় কানাডার স্থায়ী বাসিন্দারা দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য তাদের বাবা-মা এবং দাদা-দাদিকে নিয়ে যেতে পারতেন।

এখন এর পরিবর্তে দেশটিতে বসবাসরত পরিবারগুলো সুপার ভিসা কর্মসূচিকে বিবেচনায় নিতে পারবেন। এই ভিসার আওতায় স্থায়ী বাসিন্দাদের আত্মীয়রা টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত কানাডায় বসবাসের অনুমতি পাবেন।

দেশটিতে অভিবাসীদের সংখ্যা হ্রাসের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আইআরসিসি নতুন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ২০২৫ সালে পিআর বরাদ্দের হার ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি বছরের জন্য আইআরসিসির পিজিপি কর্মসূচির আওতায় ২৪ হাজার ৫০০ জনের আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আগামী কয়েক বছরে এই সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছে কানাডার অভিবাসন বিভাগ।

ঐতিহাসিকভাবে অভিবাসী-বান্ধব নীতির জন্য পরিচিতি রয়েছে কানাডার। কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নেতৃত্বাধীন প্রশাসন দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে কানাডার এই নীতিতে পরিবর্তন এনেছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম কানাডা গেজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণ করায় চলতি বছরের মাঝেই ১২ লাখেরও বেশি অস্থায়ী বাসিন্দা কানাডা ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারেন।

এ ছাড়াও বার্ষিক পিআর কোটা আগে ৫ লাখ নির্ধারিত থাকলেও চলতি বছরে তা কমিয়ে ৩ লাখ ৯৫ হাজার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই সংখ্যা ২০২৬ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৭ সালে ৩ লাখ ৬৫ হাজারে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

হ্রাসকৃত কোটার মাঝে ২০২৫ সালে কেবল ৯৪ হাজার ৫০০টি ভিসা পারিবারিক স্পনসরশিপের জন্য বরাদ্দ পাওয়ার কথা রয়েছে; যার মধ্যে ৭০ হাজার পিআর-ধারীদের স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

Continue Reading

আলোচিত

অপহরণ কাণ্ডে নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি দম্পতি

অপহরণ কাণ্ডে নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি দম্পতি
অপহরণ কাণ্ডে নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি দম্পতি

নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের জ্যামাইকায় বিডি ফ্রিশ সুপার মার্কেটের মালিক আবু চৌধুরী (৩৫) এবং তার স্ত্রী ইফফাত লুবনার (২৪) বিরুদ্ধে বাঙালি প্রবাসীদের মুক্তিপণের জন্য অপহরণ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ১৮ ডিসেম্বর এফবিআই তদন্ত শেষে এই দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে সোপর্দ করেছে।

ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টের কৌঁসুলিরা জানান, একটি ঘটনা অনুযায়ী আবু চৌধুরীর গাড়িতে হাত-পা বেঁধে বেশ কদিন আটকে রাখার সময় এক প্রবাসী যুবককে বেধড়ক মারপিট করা হয়। অবিলম্বে মুক্তিপণের অর্থ প্রদান এবং পুত্রের জন্য বিমানের টিকিট পাঠানোর দাবিতে বাংলাদেশে তার বাবাকে ফোন করানো হয়।

ওই যুবক ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে এসে জ্যামাইকার লুবনার সহায়তা চেয়েছিলেন। লুবনা নিজ অ্যাপার্টমেন্টে তাকে থাকার ব্যবস্থা করেন। একটি চাকরি সংগ্রহ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। এ সময় যুবকটির পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজপত্র নিজের কব্জায় নিয়ে নেন। এমনকি বাংলাদেশ থেকে যত ডলার এনেছিলেন সেগুলোও লুবনা নিজের কাছে রাখার জন্য নিয়ে নেন। অ্যাসাইলামের আবেদনের সব ব্যবস্থা করার কথাও বলেছিলেন লুবনা। এফবিআই এ চক্রের নাম দিয়েছে ‘বাঙালি ছিনতাই চক্র’।

২০২৩ সালের ১৩ মে পর্যন্ত আটক ছিলেন উল্লিখিত ওই যুবক। পরে মুক্তি দেওয়া হলেও তার পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজপত্র রেখে দেওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয়েছিল, এই ঘটনা কাউকে বললে খুন করা হবে।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ মে এই যুবককে নানা শর্তে ছেড়ে দেওয়ার পর একই বছরের জুলাই মাসে আরেক বাঙালি যুবক এবং এ বছরের জানুয়ারিতে মুক্তিপণ দাবিতে আরেক বাঙালিকে অপহরণ করেছিল এ চক্র। সেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এদিকে সর্বশেষ মামলায় আবু চৌধুরী আড়াই লাখ ডলার এবং লুবনা জামিন লাভ করেছেন লাখ ডলার বন্ডে। তাদের আরেক সহযোগী শাহ শহিদুল চৌধুরী গত বুধবার দেড় লাখ ডলার বন্ডে জামিন লাভ করেছেন।

এই চক্রের অন্য সদস্যরাও জামিনে আছেন। তারা হলেন সৈয়দ রুবেল আহমেদ (৪৩), শাহেদ আলম (২৯), আঞ্জু খান (২৮) এবং সুলতানা রাজিয়া (৩৮)। সবার বাড়ি সিলেট ও বৃহত্তর ঢাকায় বলে জানা গেছে।

Continue Reading

আলোচিত

অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে ২ মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশি দম্পতির মৃত্যু

অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে ২ মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশি দম্পতির মৃত্যু
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে ২ মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশি দম্পতির মৃত্যু

অস্ট্রেলিয়ার ওয়ালপোলের সমুদ্র সৈকতে সন্তানদের বাঁচাতে গিয়ে ভাটার টানে ডুবে মারা গেছেন অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি দম্পতি শহিদুল হাসান স্বপন ও সাবরিনা আহমেদ পাপড়ি। তবে তাদের দুই মেয়ে সুস্থ রয়েছেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরের কাছে ওয়ালপোল নামক স্থানে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পুলিশ সমুদ্র সৈকত থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এবং তাদের সহপাঠী শাফায়েত হোসেন।

জানা গেছে, শহিদুল হাসান স্বপন ও সাবরিনা আহমেদ পাপড়ি বড়দিনের ছুটিতে ৪-৫টি পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ালপোল পশ্চিম শহরে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। এ সময় স্বপন-পাপড়ির দুই মেয়ে সমুদ্রের পানির ভাটার টানে ডুবে যাচ্ছিলেন। দ্রুত তাদের বাঁচাতে সমুদ্রে নেমে পড়েন। সন্তানেদের জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও তারা দুইজন ডুবে যান।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা (ইউআরপি) ডিসিপ্লিনের ৯৭ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন শহিদুল হাসান স্বপন ও একই ডিসিপ্লিনের ৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন সাবরিনা আহমেদ পাপড়ি। তারা দুইজন স্বামী-স্ত্রী। স্বপন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।

এদিকে তাদের মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (কুআ), বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্ল্যানার্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।

এই দম্পতির আত্মত্যাগ ও অকাল মৃত্যু তাদের বন্ধু, সহপাঠী, পরিচিতজন এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। তাদের দুই মেয়ের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ যেন সুরক্ষিত থাকে, সে জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিও সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।

Continue Reading

Trending