Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মাদকের নতুন রুট আকাশপথ, ধরার প্রযুক্তি নেই বিমানবন্দরে







মাদক পরিবহনে নিত্য নতুন ও অভিনব কৌশল অবলম্বন করছে ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম, টেকনাফ-কক্সবাজার থেকে রাজধানীতে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক আসার খবর নতুন নয়। সড়ক, রেল কিংবা নৌপথে মাদকের চালান এলেও বেশ কিছুদিন ধরে তা আসছে আকাশপথে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা বলছেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে মাদক পাচারের ক্ষেত্রে ট্রানজিট হিসেবে রাজধানীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত বছর মাদক বিরোধী অভিযানের পর সড়ক, রেল ও নৌপথে নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় কৌশল পাল্টেছে মাদক কারবারিরা। এখন আকাশপথে আসছে মাদক। সম্প্রতি আকাশপথে আসা বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও মাদকসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে অর্ধশত কারবারি।



বিমানবন্দরে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরে স্ক্যানার দিয়ে সহজেই ধরা পড়ে স্বর্ণ। কেউ স্বর্ণ নিয়ে আর সহজে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যেতে পারছেন না। কিন্তু মাদক ধরার ক্ষেত্রে স্ক্যানার কাজে আসছে না। কারণ ইয়াবা বা অন্য মাদক মেটাল জাতীয় পদার্থ নয়। ইয়াবা ধরার ক্ষেত্রে এক্স-রে কার্যকরী।

সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ শাহরিয়ার পারভেজ, জাহাঙ্গীর, নেপাল পাল ও হাবিব নামে চার মাদক কারবারিকে আটক করে র‌্যাব।



র‌্যাব-১ এর উপ অধিনায়ক (কোম্পানি কমান্ডার, সিপিসি-২) মেজর মোহাম্মদ রাকিবুজ্জামান জানান, বেসরকারি একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালানটি ঢাকায় আনেন শাহরিয়ার। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে চালানটি সরবরাহের সময় ওই চারজনকেই আটক করা হয়। শাহরিয়ারকে তল্লাশি করে তার কোমরে থাকা বেল্টে ইয়াবাগুলো পাওয়া যায়।

তিনি জানান, শাহরিয়ার অসংখ্যবার বিমানযাত্রী হয়ে ঢাকা-কক্সবাজার যাতায়াত করেছেন। একবার গেলেই ২০-২৫ হাজার পিস ইয়াবা আনেন। কখনো দিনে দুবারও কক্সবাজার-ঢাকা যাতায়াত করতেন তিনি।



গত ৩১ জানুয়ারি এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ আটক করে রইছ মিয়া নামে এক মাদক কারবারীকে। তার কাছে থেকে উদ্ধার করা হয় ৬৫৫ পিস ইয়াবা। ৩ ফেব্রুয়ারি বাহরাইনগামী গালফ এয়ারের যাত্রী বাবুল সুত্রধরকে একটি ছোট প্যাকেট বাহারাইনে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানান গালফ এয়ারের ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট রাশেদ মিয়া। তবে সন্দেহবশত: তিনি বিষয়টি কর্তব্যরত পুলিশকে জানান। পরে প্যাকেট খুলে পাওয়া যায় ১২০০ পিস ইয়াবা। সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় রাশেদ মিয়াকে।

গত ৯ নভেম্বর বিমানবন্দরে ২১টি প্লাস্টিক ও কালো টেপ দিয়ে বানানো নকল খুরমা খেজুরের ভেতরে করে পাচারকালে এক হাজার ৫০ পিস ইয়াবাসহ চার যাত্রীকে আটক করে এপিবিএন। গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়।



আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এএপিবিএন) সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে রাজধানীতে আকাশপথে আসছে ইয়াবা। শাহজালাল বিমানবন্দরে গত ছয় মাসে প্রায় ৭০ হাজার পিস ইয়াবা আটক করা হয়ে। টাকার অঙ্কে যার মূল্য প্রায় দুই কোটি। আটক করা হয়েছে ৪০ জনের মতো। আটকদের মধ্যে নারী মাদক কারবারিও রয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৭টির বেশি।

বিমানবন্দরে সুরক্ষা ভেদ করে কীভাবে ঢুকছে ইয়াবা? জানতে চাইলে বিমাবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিমানবন্দরে দেহের ভেতরে বহন করা মাদক শনাক্তের প্রযুক্তি না থাকায় এ পথকে বেছে নিয়েছে মাদক চক্র। শুরুতে যাত্রী বেশে ব্যাগে লুকিয়ে আনলেও, এখন শরীরের নানা অঙ্গে বা পেটের ভেতরেই মাদক বহন করছে পাচারকারীরা যা স্ক্যানারে ধরা পড়ে না। কারণ মাদক আসলে মেটাল না। মাদক ধরতে প্রয়োজন এক্স-রে মেশিন, যেটি বিমানবন্দরে নেই।



তিনি বলেন, মাদক আসছে কক্সবাজার চট্টগ্রাম থেকে ডোমেস্টিক ফ্লাইটে। আর ডোমেস্টিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইন্টারন্যাশনাল মানের নজরদারি নেই। এছাড়া হাত বা ব্যাগেও নয়, মাদক কারবারিরা মাদক আনার ক্ষেত্রে পাকস্থলি ও গোপনাঙ্গ ব্যবহার করছে। যা এক্স-রে মেশিন ছাড়া ধরা সম্ভব নয়।

সীমাবদ্ধতার পরও শুধুমাত্র গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও সন্দেহভাজনদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজনে হাসপাতালে এক্স-রে করে মাদকের আলামত চেক করা হয়। এভাবেই ৪০ মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় ধরা পড়ছেন নারীও। গত ২৫ জানুয়ারি গোপনাঙ্গে ৭২০টি ইয়াবা আনার সময় আটক করা হয় এক নারীকে।

এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ঢাকা মেট্রো-উত্তর অঞ্চল) সহকারী পরিচালক (এডি) খুরশিদ আলম বলেন, সত্যি উদ্বেগের বিষয় যে ইয়াবা আসছে আকাশপথে। আমরা শুধু গেল জানুয়ারিতেই শাহজালাল বিমানবন্দরে ১২ জনকে আটক করেছি, যারা গোপনাঙ্গ ও পাকস্থলিতে করে ইয়াবা বহন করছিল। বিমানবন্দরে মাদক ধরার জন্য প্রযুক্তিগত সুবিধার জন্য ডিজি নির্দেশনা দিয়েছেন। খুব শিগগিই মাদক ধরার মেশিন ক্রয় করা হচ্ছে।

মাদক বিশেষজ্ঞ সাবেক সচিব ভূইয়া শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদকের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের লোকজনও জড়িত। কতজনের লাগেজ তল্লাশী করা সম্ভব? স্ক্যানারে বা এক্স-রে মেশিনে ভিআইপিতে লাগেজ তল্লাশি করাও কঠিন। এক্ষত্রে শাহজালালে যদি প্রশিক্ষিত কুকুর মোতায়েন করা যায় তা হবে বেশি কার্যকরী। কারণ কুকুর ভিআইপি চিনবে না, চিনবে মাদক।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ড. এম এ মোমেনও একই মন্তব্য করে বলেন, মাদক কারবারিরা টেকনোলজিতে অনেক বেশি আপডেটেট। সে তুলনায় পিছিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশিক্ষিত কুকুর মোতায়েনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসালে ফল পাওয়া যাবে।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.