Wednesday, October 15, 2025

Top 5 This Week

Related Posts

সৌদি আরবে ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি দুই ভাইকে হত্যা

সৌদি আরবে একটি ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি প্রবাসী কামরুজ্জামান কাকন (২৬) ও কামরুল ইসলাম সাগর (২২) নামে আপন দুই ভাই খুন হয়েছেন।

বুধবার (২১ মে) সৌদি পুলিশ দাম্মাম শহরের একটি বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নিহতদের পরিবার।

নিহতরা হলেন- কামরুজ্জামান কাকন ও কামরুল ইসলাম সাগর উত্তর ভুরুলিয়ার আদর্শপাড়ার ব্যবসায়ী মো. মোশারফ হোসেন লম্বরির ছেলে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কামরুজ্জামান কাকন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরির খোঁজ করছিলেন। ঢাকার নয়াপল্টনের সামিয়া ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক বাহার উদ্দিন ২১ লাখ টাকা চুক্তিতে জব ভিসায় কাকনকে কানাডায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন বাবা মোশারফ হোসেন লম্বরির কাছে।

৩ লাখ টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও তিনি কাকনকে কানাডা পাঠাতে পারেননি। পরে বাহার উদ্দিন ভালো বেতনে ছোট ছেলে সাগরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকায় সৌদি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। রাজি হলে গত বছরের অক্টোবর মাসে সৌদি যায় সাগর।

কিন্তু কাজের পরিবর্তে তাকে দাম্মামে একটি ঘরে আটকে রেখে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করায় হয় বাবা মোশরফ হোসেনের কাছে। ছেলের কথা ভেবে আরও ৪ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। টাকা নিয়েও ছেলেকে ভালো চাকরি না দিয়ে খাবার ডেলিভারির কাজ দেয়।

কানাডা পাঠানোর জন্য নেওয়া ৩ লাখ টাকা ফেরত চাইলে বড় ছেলে কাকনসহ দুই ছেলেকে সৌদির মদিনা ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রস্তাব দেন বাহার উদ্দিন। নতুন করে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কাকনকে সৌদি নিয়ে যান বাহার।

সেখানে কাজ না দিয়ে দুই ভাইকে একটি ঘরে আটকে রাখেন। বিষয়টি জানার পর বাহার উদ্দিন কাকন ও সাগরের বাবা মোশারফ হোসেনকে ওমরা ভিসায় সৌদি গিয়ে ছেলেদের দেখে আসার প্রস্তাব দেন। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বাহার উদ্দিনের সঙ্গে সৌদি আরব যান মোশারফ হোসেন। এ সময় বাবা দুই ছেলেকে কাজের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, তাদের খাবার ডেলিভারির কাজ দেওয়া হয়েছে। ঠিকমত খেতে দেওয়া হয় না। রাখা হয়েছে ছোট্ট ঘরে।

পরে সৌদি আরব থেকে ২২ ডিসেম্বর মোশারফ হোসেন দেশে ফিরেন। তবে ছেলেদের কাগজপত্র ঠিক করার জন্য থেকে যান বাহার। কিন্তু সেখানে বাধে আরেক বিপত্তি। এজেন্সি মালিক স্বর্ণ দিয়ে দেশে পাঠালেও কাগজপত্র না থাকায় তা বিমানবন্দরেই আটকে দেয় বলে দাবি করেন মোশারফ হোসেন। সেই ঘটনা নিয়ে আইনি লড়াইও চলছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে নিহতের পরিবার।

যদিও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে বাহার উদ্দিন দাবি করেন, উল্টো দেশে পৌঁছে দেয়ার নামে আমার প্রায় ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১০০ গ্রাম স্বর্ণ কৌশলে ফেরত দেয়নি মোশাররফ।

নিহতের পরিবার সূত্রে আরও জানা গেছে, নিহতদের মরদেহ ফিরে পেতে এরইমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছে পরিবার।

Popular Articles