যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকামুখী একটি ফ্লাইটের ২৭৫ জন যাত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওই নগরীতে আটকা পড়েছেন। (খবর: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বোয়িং ৭৮৭-৯ মডেলের ওই উড়োজাহাজ বুধবার রাত থেকে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ডেড’ হয়ে আছে; অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকা থেকে চাকা যাওয়ার।
দুবাইয়ে বিমান বাংলাদেশের স্টেশন ম্যানেজার পি এম দস্তগীর বলেন, উড়োজাহাজটির আরেকটি চাকা ঢাকা থেকে সেখানে পৌঁছানোর পর ফ্লাইটটি শুক্রবার ভোরে রওনা হতে পারে।
বিমানের এ ফ্লাইট দুবাইয়ে অবতরণ করেছিল রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। সেখান থেকে ফিরতি ফ্লাইটে রওনা দেওয়ার কথা ছিল বুধবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে স্টেশন ম্যানেজার দস্তগীর বলেন, “হেভি লোড নেওয়ার কারণে বিমানের চাকায় বাতাসের স্ফীতি কমতে পারে। উড়োজাহাজটি বিমানের বহরে অপেক্ষাকৃত নতুন সংযোজন। এটি আমাদের টরন্টো, ইউরোপের গন্তব্যেই বেশি যায়। মঙ্গলবার এটি দুবাই থেকে ক্লিয়ার করেছি, তখনো কোন সমস্যা দেখা যায়নি।”
এ ফ্লাইটের ২৭৫ জন যাত্রীর মধ্যে ৫৫ জন ঢাকার এবং বাকিরা চট্টগ্রামের। ফ্লাইটটিতে শিশু ও প্রবীণ যাত্রীও রয়েছেন।
ফ্লাইটটি বুধবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে দুবাই থেকে ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট উড়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।
পরে চট্টগ্রামে এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার পথে উড়াল দেওয়ার কথা ছিল। এখন এটি প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিলম্বে শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে দুবাই ছাড়তে পারে বলে যাত্রীদের জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় আটকে পড়া যাত্রীদের দুর্ভোগে থাকার তথ্য দিয়ে ফ্লাইটটির বিজনেস ক্লাসের যাত্রী আবুধাবি প্রবাসী আবাসান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশে যাওয়ার জন্য বুধবার রাত আটটায় তিনি আবুধাবি থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
“এখন বিলম্ব হওয়ায় নারী, শিশু, প্রবীণসহ নানা বয়সের যাত্রীরা দুর্ভোগের মধ্যে এখনো দুবাই আটকা পড়ে আছেন।”
চট্টগ্রামের পটিয়ার এই প্রবাসী বলেন, বুধবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে তাদের মূল ফ্লাইটটি ছিল। তারা বোর্ডিং পাস পেয়ে উড়োহাজাজে ওঠার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। প্রথমে বিমান থেকে তাদের জানানো হয় ফ্লাইটটি এক ঘন্টা বিলম্ব হবে। এক ঘণ্টা পর দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, ফ্লাইট ছাড়বে রাত ৩টায়।
“এ সময়ও ফ্লাইট না ছাড়লে বিমানের দুবাই এয়ারপোর্টে কর্মরত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাকে একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে বলেন যে, এয়ারক্রাফটটির একটি চাকায় সমস্যা দেখা গেছে। ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে নতুন চাকা দুবাই এসে পৌঁছালে তা লাগানো হবে।”
তবে এমিরেটসের ওই ফ্লাইটে চাকা পৌঁছেনি দুবাইতে।
কবে আসবে জানতে চাইলে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার দস্তগীর বলেন, “এমিরেটস এয়ারলাইনস কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে ঢাকা থেকে তাদের ফ্লাইটে বিমানের চাকাটি আনতে পারেনি। তাই বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টায় বিমানের একটি ফ্লাইটে চাকাটি আনা হচ্ছে। শুক্রবার আমিরাতের সময় ভোর সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে দুবাই ত্যাগ করবে।
“বিমান যাত্রীদের সবাইকে হোটেল নেওয়া হয়েছে। কেবল ১২ সদস্যের একটি পরিবার নিজে থেকেই হোটেলে যেতে চাননি। তারা বিমানবন্দরের ‘লাউঞ্জেই’ থেকে গেছেন।”