সিলেটসহ দেশের পুলিশ বাহিনী একদিন লন্ডন পুলিশের মতো হবে উল্লেখ করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) নতুন কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী (পিপিএম-সেবা) বলেছেন, আমি সবসময় এই স্বপ্ন দেখি। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশি সেবা নিশ্চিত করা হবে। তার অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে সিলেটে চালু হওয়া GenieA অ্যাপ।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে এ্যাপসটির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথাগুলো বলেন তিনি।
কমিশনার জানান, এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা সহজেই পুলিশের সহায়তা পাবে এবং বিভিন্ন জরুরি সেবার সাথে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারবে। কমিশনার জানালেন, ১৬ অক্টোবর থেকে সিলেটের মোগলাবাজার থানায় অ্যাপটির কার্যক্রম শুরু হবে এবং একমাসের মধ্যে পুরো সিলেট শহরের সকল থানায় এটি চালু করা হবে। অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের জন্য সহজে পুলিশের সাথে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করবে, বিশেষ করে এসওএস বাটন ব্যবহার করে যেকোনো বিপদে পুলিশের সহায়তা পাওয়া যাবে। একটি ক্লিকেই সংশ্লিষ্ট থানায় নোটিফিকেশন যাবে এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে।
কমিশনার আরো জানালেন, GenieA অ্যাপটি প্লে স্টোর ও আই স্টোরে পাওয়া যাবে এবং এটি সিলেটের সকল নাগরিকের জন্য একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা টুল হয়ে উঠবে। অ্যাপটির মাধ্যমে জিডি, মামলা, তথ্য প্রদান, আইনি পরামর্শ সহ বিভিন্ন জরুরি সেবা পাওয়া যাবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এবং যানজট সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করা হবে।
সিলেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়নে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে শহরের সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়ন। কমিশনার জানিয়েছেন, পুরো শহরকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে এবং এআই ভিত্তিক এনালাইসিসের মাধ্যমে তা মনিটর করা হবে। এর ফলে শহরের প্রতিটি প্রান্তে পুলিশের নজরদারি থাকবে, বিশেষত স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কমিশনার আরো জানান, বর্তমানে মোবাইল চুরি একটি বড় সমস্যা, তবে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং অপরাধীদের তথ্য জানাতে নাগরিকদের উৎসাহিত করছে।
কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী বলেন, “আমরা পুলিশের আচরণগত পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছি। একসময় সিলেটসহ বাংলাদেশের পুলিশ লন্ডন পুলিশের মতো হবে, আমি সেই স্বপ্ন দেখি।”
এছাড়া, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, গত ৩ দিন ধরে আগের মতো নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে অভিযান না করলেও, সন্ধ্যার পর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।
সিলেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই নতুন দিগন্তটি নাগরিকদের জন্য এক নতুন আশার আলো নিয়ে আসবে, যা সমাজে অপরাধ দমন এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।