ঢাকার শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ভারতীয় নাগরিকের সন্দেহজনক চলাফেরা চোখে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের। সন্দেহ হওয়ায় তার ব্যাগ তল্লাশী করে পাওয়া যায় হাজার হাজার পাখির নখ। মেপে যার ওজন পাওয়া যায় ৪ কেজির বেশি। যা আইন লঙ্ঘন করে গোপনে বহন করছিলেন তিনি।
শুক্রবার দিবাগত রাতে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে পাখির নখ নিয়ে আসেন ভারতীয় নাগরিক জাকির হোসাইন। কেন পাখির নখ নিয়ে এসেছে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে মিরপুরের একজন ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে এই নখগুলো এনেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় জাকির হোসাইনকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছে বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
এ বিষয়ে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট পরিদর্শক অসীম মল্লিক বাংলাভিশনকে বলেন, তাকে সন্দেহ হলে কাস্টমস আমাদের খবর দেয়। আমরা এসে প্রথমে জানতে চাইলে সে তথ্য দেয় এগুলো আর্টিফিশিয়াল। কিন্তু, চেক করে আমরা দেখতে পাই পাখির নক। তখন সে জানায় এগুলো স্যুপ হিসেবে খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু পাখির নখ খাবার হিসেবে গ্রহণের কোন নজির নেই জানিয়ে আমরা পুনরায় জবাবদিহীতা করলে সে জানায়, এই নখগুলোর ব্যাপারে সে কিছুই জানে না, শুধু সে বহন করেছে।
তিনি আরও বলেন, জাকির হোসাইনের কথায় কোন মিল না থাকায় আমরা তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় হস্তান্তর করেছি এবং অধিকতর তদন্তের জন্য আমাদের ল্যাবে নখের নমুনা পাঠিয়েছি। সে মিরপুরের একজন ব্যক্তির কাছে আসার কথা জানিয়েছে। সে আসলে কার কাছে এসেছে, কেন এগুলো এনেছে সেটি নিয়ে গভীর তদন্ত প্রয়োজন। আশা করি পুলিশ কাজ শুরু করবে। নিশ্চয়ই পুরো চক্র ধরা পড়বে বলে আমরা আশাবাদী।
এদিকে চলতি সপ্তাহে ঢাকা বিমানবন্দর হয়ে পাচারের সময় কাছিমেরও একটি চালান জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। সংস্থাটি বলছে, একটি এই বন্যপ্রাণী ও প্রাণীর অংশগুলো চীনে পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে তারা।
উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী বা প্রাণীর শরীরের কোনো অংশ আমদানি, রফতানি ও বহন আন্তর্জাতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত। এটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ। বৈধ কোন কারণে এটি আমদানি রফতানি করতে হলে প্রয়োজন হয় আমদানিকারক ও রফতানিকারী উভয় দেশের লিখিত অনুমতি। কিন্ত, এই নিয়ম না মেনে সম্পূর্ণ গোপনে পাখির নখগুলো বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন জাকির।