Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ সিলেটের পারভীন ‘বাংলাদেশী নারী’দের সম্মানিত করে গেলেন







মনোবিজ্ঞান বলে, চঞ্চল মেয়েরা নাকি স্ত্রী হিসাবে ভালো হন। একথায় মানতে যাদের আপত্তি, তাদের সরাসরি প্রমাণ দিয়ে গেলেন এই সিলেটেরই মেয়ে হোসনে আরা। নিউজিল্যান্ড ট্র্যাজিডি কেড়ে নিয়েছে গোলাপগঞ্জ উপজেলার জাঙালহাটা গ্রামের নুর উদ্দিনের এই মেয়েটিকে। আত্মরক্ষার বদলে স্বামীর জীবন বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় তার জীবন।



শুধু গোলাপগঞ্জ বা সিলেটই নয়, স্বামীভক্তির এই অনন্য নজির স্থাপন করে হোসনে আরা আসলে বাংলাদেশের নারীদের সম্মানিত করে গেলেন বিশ্বের সামনে।
অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে গিয়েছিলেন মসজিদে। পুরষদের মসজিদে তাকে রেখে তিনি গিয়েছিলেন পাশের নারীদেরটায়।

কিন্তু হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টার বদলে ছুটলেন অসহায় (প্যারালাইজড) স্বামীর জীবন বাঁচাতে। তখনি ঘাতকের বুলেট ঝাঁঝরা করে দেয় তার বুক। স্বামী বেঁচে গেলেও বাঁচলেন না তিনি। জীবন বিসর্জন দিয়ে জানান দিলেন, বাংলাদেশের নারীদের দয়িত্বশীলতার কথা। পাশাপাশি স্বামী ভক্তিরও।



জানা গেলো, তিনি আসলে ছোটবেলা থেকে খুব চঞ্চল স্বভাবের ছিলেন। শনিবার তারা জাঙালহাটার বাড়িতে গেলে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপ হয় হোসনে আরার বড় ভাই নাজিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী এবং চাচাতো বোন শিরিনের সাথে। তারা সবাই তাকে কাছে থেকে দেখেছেন। বলতে গেলে মাত্র দেড় বছর বয়সে মাতৃহীন হোসনে আরা তাদের কোলেপিঠে চড়েই বড় হয়েছেন।



তার ভাবি বললেন, তিনি যখন শশুড়বাড়ি এলেন তখন ছোট এই ননদটি মাত্র চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। খুব চঞ্চল। সারাদিন খেলাধুলায় তার রাজ্যের ব্যস্ততা। পাশাপাশি নামাজ রোজা তেলাওয়াতও চলত তার সমানতালে। প্রতিটি সকাল তার শুরু হতো নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে।

বড় হয়ে কিছুটা শান্ত হলেও মেয়েলি আড্ডায় যথারীতি শিশুতোষ সারল্য আর দুষ্টামিতে রীতিমতো মাতিয়ে রাখতে তিনি। প্রবাসী হলেও ভাই, ভাবি ভাইপো ভাইঝি বা বোনঝিদের প্রতি তিনি যেমন দায়িত্বশীল ছিলেন তেমনি দায়িত্বশীল ছিলেন স্বামীপক্ষের আত্মীয় স্বজনের প্রতিও-বলতে বলতে গলা যেন কিছুটা কেঁপে উঠে তার।



হোসনে আরার চাচাতো বোন শিরিন (৪৯/৫০) কথা বলতে বলতে বারবার কাঁদছিলেন। বললেন, ক্লাস সিক্সে ভর্তি হওয়ার পর আতহারিয়া স্কুলে আমার সাথে যেতো। পথে যেতে যেতে সামান্য ব্যতিক্রম কিছু দেখলেই হাসিতে ফেটে পড়তো। একবার হাসতে শুরু করলে আর তা সহজে বন্ধ হতোনা।

নানাভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চলতে থাকতো। আমার বান্ধবীরা দুষ্টামি করে ওকে নানাভাবে হাসানোর চেষ্টা করতো। বাড়িতেও তেমন ছিল। খেলাধুলার পাশাপাশি চঞ্চল হরিণীর মতোই ছিল তার আচরণ। তবে খুবই ধর্মপ্রাণ ছিল আমার এই বোনটি। আরেকবার চোখ মুছলেন শিরিন।



হোসনে আরার বড়ভাই নিজাম উদ্দিনে শোকে প্রায় পাথর। তবু আলাপচারিতায় জানালেন, ছোটবেলায় ও দুষ্ট-মিষ্টি ছিল। স্কুলে খেলাধুলা করতো। যেকোন অনুষ্ঠান পরিচালনায় শিক্ষকদের ভরসা ছিল আমার এই চঞ্চল বোনটি। মন্ত্রী এমপিরা এলে মানপত্রও পড়তো সে। স্কুলে খেলাধুলায় প্রচুর পুরস্কারও জিততো।

শুধু কি তাই? তার আরো অনেকগুণের পরিচয় পাওয়া যায় পরিবারের লোকজনের স্মৃতিচারণে। তার অন্যতম একটি হচ্ছে অসচ্ছল আত্মীয় স্বজনকে নিয়মিত সাহায্য করা।
সূত্রঃ সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম














You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.