Tuesday, August 26, 2025
Home Blog Page 80

লাশ রেখে গোপনে কানাডা পাড়ি দেন পারভীন, রেখে যান প্রতিশোধের বার্তা

‘আমার জীবনের শান্তি নষ্ট করে দিয়েছে এই র‍্যাপিস্ট, ব্ল্যাকমেইলার। সে তার নিজের ইচ্ছায় আমার হাতে ধরা দিয়েছে। নিজের হাতে এই র‍্যাপিস্ট, ব্লাকমেইলারকে মেরে শান্তি নিলাম।’

গত শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ‘স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট’ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের পাশ থেকে এই চিরকুটটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম আরিফুল ইসলাম (২৭)। তিনি গত ১৭ মে পারভীন আক্তার (৩৩) নামে এক নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ওই অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছিলেন। পারভীন আক্তার কানাডা প্রবাসী। তাঁর বাড়িও নরসিংদীর মনোহরদী।

পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে, পারভীন আক্তার ওই যুবকের লাশ রেখে কানাডায় পালিয়ে গেছেন। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

পুলিশ জানিয়েছে, আরিফুল ও পারভীন পূর্ব পরিচিত। দুজনে ওই অ্যাপার্টমেন্টে গত ১৭ মে বিকেল ৪টায় ওঠেন। পরদিন সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে পারভীন একাই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান।

পুলিশের ধারণা, ১৭ মে রাতের কোনো এক সময় আরিফকে হত্যা করে থাকতে পারেন পারভীন। এরপর সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কুয়েত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে কানাডা চলে যান। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি–ব্লকের সাফায়েত সড়কের ১ /এফ বাড়িটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট হিসেবে পরিচালনা করে আসছে মাটি প্রপার্টিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ভবনটিতে থিয়েটার হল, ছোট ছোট বেশ কয়েকটি কক্ষ, রেস্ট রুম, বিনোদন রুম, রেস্টুরেন্ট, সুইমিংপুল রয়েছে। এখানে দেশি বিদেশি মানুষ অবসর যাপনের জন্য আসেন।

গত ১৭ মে আরিফুল ইসলাম ও পারভীন আক্তার স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে দোতলার একটি ফ্ল্যাটে ওঠেন। অনলাইনে সাত দিনের জন্য বুকিং দিয়েছিলেন আরিফুল। তাঁরা ওঠার ১৪ দিন পর গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে মাটি প্রপার্টিজ থেকে ভাটারা থানায় ফোন কল করে জানানো হয়, দোতলার ফ্ল্যাটে একজনের লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গলা ও বুক কাটা, পচা–গলা লাশ পায়। প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

এই ঘটনায় রোববার (২ জুন) আরিফের বড়বোন সাফরিজা আক্তার রেলি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় পারভীন আক্তার, তাঁর কানাডা প্রবাসী স্বামী নাজমুল ইসলাম বাবু (৩৩), মাটি প্রোপার্টিজের মালিক, ম্যানেজার, কর্মচারীসহ অজ্ঞাত আরও কয়েক জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত নাজমুল ও পারভীনের বাড়িও নরসিংদী।
লাশ রেখে গোপনে কানাডা পাড়ি দেন পারভীন, রেখে যান প্রতিশোধের বার্তা
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, লাশ উদ্ধারের পর সিআইডি ক্রাইমসিন আলামত সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পারভীন আক্তার গোপনে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর নোটারি পাবলিক করে আরিফুল ইসলামকে বিয়ে করেন। এরপর স্বামীর সঙ্গে কানাডায় চলে যান। আরিফুল চলে যান জাপানে। সেখানে নাচুকি নামে এক জাপানি তরুণীকে বিয়ে করেন। এতে পারভীন আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় হুমকি দিতেন। পারভীন ও তাঁর স্বামী পরিকল্পনা করে জাপান থেকে ঢাকায় এনে আরিফকে খুন করেছেন।

এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৩১ মে রাত সোয়া ৮টার দিকে আরিফুলের জাপানি স্ত্রী বাদীকে ফোন কল দিয়ে জানান, গত ১৭ মে আরিফ ঢাকায় এসেছেন। কিন্তু কয়েক দিন ধরে তাঁকে ফোনে পাচ্ছেন না। এরপর আরিফকে তাঁর পরিবার থেকেও ফোন করা হয়। কিন্তু নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

আরিফের বোন সাফরিজা আক্তার রেলি বলেন, পারভীন ও তাঁর স্বামী এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। পারভীন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঠান্ডা মাথায় ডেকে এনে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আরিফুল গোপনে দেশে আসেন। পরিবারের কেউ জানতেন না। এরপর পুরোনো বান্ধবী পারভিন আক্তারকে নিয়ে তিনি বসুন্ধরার স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট ওঠেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেছে তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশের দৃশ্য ধরা পড়েছে। পারভীনের মোবাইল নম্বরের সর্বশেষ অবস্থান ছিল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৮ মে পারভীন দেশ ছেড়ে কানাডা চলে গেছেন।

আরিফুলের লাশের পাশ থেকে চিরকুট ছাড়াও একটি নোটারি উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, আরিফ এবং পারভীন ২০২১ সালে নোটারি পাবলিক করে বিয়ে করেন। সেখানে পারভীন ও আরিফের স্বাক্ষর রয়েছে।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিযুক্ত পারভীন ১৮ মে সকালে পালিয়ে কানাডা গেছেন। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

প্রেমের টানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নারী

প্রেমের টানে ফেনীর সোনাগাজীতে এসে জামশেদ আলম রাজুকে (২৫) নামের এক যুবককে বিয়ে করেছেন সেন্ডোরা ব্রোক্স (৫৫) নামের যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা। আজ সোমবার তাদের বিয়ে হয়।

জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে রাজু ও সেন্ডোরা ব্রোক্সের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ে উপলক্ষে শনিবার সেন্ডোরা ব্রোক্স বাংলাদেশে আসেন। আজ বিয়ের পর নব দম্পতিকে দেখতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা।

জামশেদ আলম রাজু ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট রাজু। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। আর সেন্ডোরা ব্রোক্স যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা।

রাজু বলেন, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। এরপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে দু’জনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ জুন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসে সেন্ডোরা ব্রোক্স। সে আমাকে ভালোবেসে এখানে এসেছে। সুখে-দুঃখে আমরা দুজন একসঙ্গে থাকতে চাই বলে অঙ্গীকার করেছি। এজন্য সকলের দোয়া চাই।’

ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কস্থ অভিজাত রেস্টুরেন্টে সোমবার দুপুরে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয় এ দম্পতির। ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়। এর আগে সেন্ডোরা ব্রোক্স খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তার নাম লামিয়া।

স্বজন ও বর যাত্রীরা বলেন, প্রেমের টানে কনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেনীতে এসেছে। এই বিয়েতে এসে খুব ভালো লাগছে। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক।

ফেনী জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, কনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয়। দশ লাখ টাকা দেন মোহরে ও এক লাখ টাকা উসুলে মুসলিম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তারা। এদেশের একজন ছেলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একজন উচ্চ শিক্ষিত নারীর বিয়ে হয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুন্দর হোক।

সিলেট নগরের ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ

রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টি সিলেট নগরের প্রায় ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষঅ

সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের কথাও জানিয়েছে নগর কতৃর্পক্ষ।

রোববার রাত থেকে সোমবার ২১৪ মি.মি (দুপুর ১২টা) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে ১০.৯৪ সে.মি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় কাউন্সিলর মাধ্যমে বন্যায় আক্রান্তদের মাঝে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পেঁৗছে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি ও আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ মখলিছুর রহমান কামারন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী,কাউন্সিলর ফজলে রাব্বি চৌধুরী মাসুম,হমায়ুন কবির সুহিন,জয়নাল আবেদীন,সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ সোমবার (০৩ জুন) দুপুর ২টায় নগরীর মিরাবাজার, তেররতন, উপশহর ও ১০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় তারা আশ্রয় কেন্দ্রসহ পানিবন্দিদের খোঁজ খবর নেন।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোষ্টার ডিউটি পালন করবেন সিসিকের কর্মকর্তাগণ। জরুরি সেবায় কন্ট্রোলরুম যোগাযোগের ফোন নম্বর (০১৯৫৮—২৮৪৮০০) ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে।

সিলেট নগরের ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ
সিলেট নগরের ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সোমবার মধ্যরাত থেকে টানাবর্ষণ হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডে এরও ১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সকাল থেকে নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে। আজ রাতে ওইসব এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। নগরীর সকল ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে নগর ভবন।

তিনি আরও জানান, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নগরীর ছড়া—খাল পানি ভরে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল ওয়ার্ড সমূহে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিসিক। আশ্রয় কেন্দ্রসহ ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সিসিক কতৃর্পক্ষ। ইতিমধ্যে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডে কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বসন্ত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, মওদুদ আহমের বাসায় আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। ১৩ নং ওয়ার্ড মির্জা জাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৪ নং ওয়ার্ড তেররতন স্কুল, ওমর শাহ স্কুল ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ ঘাসিটুলা স্কুল, জালালাবাদ মডেল স্কুল, মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ, কানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কাউন্সিলর তাদের নিজ বাস ভবনে পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয় প্রদান করছেন। ইতিমধ্যে মহানগরীতে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী আবস্থায় রয়েছেন।

সাজলু লস্কর আরও জানান, কাউন্সিলরদের দেয়া তথ্যমতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।

যুক্তরাজ্যের সান্ডওয়েলের প্রথম বাঙালি নারী মেয়র সিলেটরে আমিনা

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মেয়ে সৈয়দা আমিনা খাতুন এমবিই যুক্তরাজ্যের সান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের মিডল্যান্ডসের সান্ডওয়েলের প্রথম বাংলাদেশী মুসলিম নারী মেয়র আমিনা খাতুনের বাড়ি উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর আগুনকোনা গ্রামে। তার জন্ম সৈয়দপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সৈয়দ মদব্বির আলী ও নূরিয়া বিবি দম্পতির বড় মেয়ে।

তাঁর মেয়র হওয়ার খবরে দেশে থাকা স্বজনদের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে সৈয়দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দা আমিনা খাতুন। ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে ছয় বছর বয়সে বাবার হাত ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে সক্রিয় হন রাজনীতিতে। ১৯৯৯ সালে লেবার পার্টির হয়ে প্রথমবারের মতো স্যান্ডওয়েল মেট্রোপলিটন টিপটন গ্রিন এলাকা থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

২০০৪ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে সামাজিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এমবিই খেতাব দেয়। তিনি বামিংহামের স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিল থেকে লেবার পার্টির প্রার্থী হয়ে ষষ্ঠবারের মতো টানা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এবার তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত ২৩ মে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সৈয়দপুর আদর্শ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাংবাদিক মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান জানান, স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিলের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ও বাঙালি নারী মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করছেন সৈয়দা আমিনা খাতুন। তাঁর গৌরবে যুক্তরাজ্যের বাঙালি কমিউনিটি গৌরবান্বিত।

দেশে থাকা তাঁর চাচাতো ভাই সৈয়দ মাজুর জানান, ২০২২ সালে সৈয়দা আমিনা খাতুন তাঁর মা কে নিয়ে সর্বশেষ দেশে এসে কিছুদিন বাড়িতে সময় কাটিয়ে গেছেন। দেশে থাকা আত্বীয় স্বজনদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ রয়েছে। সুযোগ পেলে তিনি দেশে আসেন এবং এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা ও মানবিক সেবামূলক কাজ করেন।

তিনি বলেন, দুই ভাই আট বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বিয়ে করেছেন চাচাতো ভাই সৈয়দ রাজা মিয়াকে। দাম্পত্য জীবনে তিনি দুই ছেলে দুই মেয়ের জনক।

মেয়র নির্বাচিত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দা আমিনা খাতুন বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে আমি স্যান্ডওয়েল সিটি এলাকায় নারী ও শিশুদের শিক্ষা, ভাষা নিয়ে কাজ করছি। এছাড়াও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে উদ্ধুদ্ধকরণের ভূমিকা রাখছি। আমি আমার বাবার নামে ট্রাস্ট গঠন করে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে দেশে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। আজীবন মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, এ বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে যুক্তরাজ্যের মূলধারার রাজনীতিতে ব্রিটিশ বাঙালি তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তাঁর এ সাফল্যের জন্য তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

দংশনের পর রাসেলস ভাইপার হাতে ঝুলিয়ে হাসপাতালে হাজির কৃষক

প্রতিদিনের মতো জমিতে ধান কাটতে গিয়েছিলেন রাজশাহীর চারঘাট থানাধনী পিরোজপুর এলাকার কৃষক হেফজুল ইসলাম।

শুক্রবার (৩১ মে) সকালে হেফজুলের সঙ্গে জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষকেরা। এক পর্যায়ে তারা রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় হেফজুল সাপটিকে ধরতে এগিয়ে এলে তার মুখে কামড় দেয় সাপটি।

এরপর তিনি সাপটিকে মেরে বস্তাবন্দি করে চিকিৎসা নিতে মৃত সাপটি নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকের সামনে হাজির হন।

সাপের কামড়ে গুরুতর আহত হেফজুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, সকালে জমিতে কৃষকদের সঙ্গে তিনি ধান কাটছিলেন, এ সময় কৃষকেরা সাপ সাপ বলে চিৎকার শুরু করে। তখন এগিয়ে গিয়ে সাপটিকে মারতে গেলে আমার মুখে কামড় দেয়। পরে আমি সাপটিকে মেরে বস্তাবন্দি করে হাসপাতালে চিকিৎসকের সামনে হাজির হই। এরপর তারা আমার চিকিৎসা শুরু করেন।

এদিকে সাপ মেরে হাসপাতালে কৃষকের চিকিৎসা নিতে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, হেফজুলকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন অনেকে।

অন্যদিকে সাপের কামড়ে আহত হেফজুলকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে আহত হেফজুল শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

রামেক হাসপাতালের ১৬নং ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ফাহিমা সুলতানা আরটিভি নিউজকে জানান, সাপের কামড়ে আহত হেফজুল বিপদমুক্ত নয়। তাকে দুই ঘণ্টা পরপর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা তাকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

এ ঘটনার পর থেকে রাসেলস ভাইপার সাপের কারণে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ চাষের কাজে জমিতে যেতে চাচ্ছেন না।

সিলেটে বন্যা : কোথাও উন্নতি, আবারও কোথাও অবনতি

ভারী বৃষ্টি ও হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজারে ও গোলাপগঞ্জে। তবে এই তিনটিতে ভয়াবহতা এখনো তীব্র হয়নি।

সীমান্ত এলাকায় পানি কিছুটা কমলেও বাড়ছে শহর ও নিম্নাঞ্চলে। অকাল বন্যায় এরইমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে সিলেট শহরের কিছু অংশসহ সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে সিলেটে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজারে ও গোলাপগঞ্জের একাধিক এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙ্গে বিয়ানীবাজার উপজেলার একাধিক স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

এদিকে সিলেট মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা সুরমা নদীর পানি বেড়ে এ জলাব্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত ৯টার পর থেকে মহানগরের তালতলা, মেন্দিবাগ, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে সড়কে পানি উঠতে শুরু করে। শুক্রবার (৩১ মে) সকালে তালতলা ও মেন্দিবাগ-মাছিমপুর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক দুটিতে প্রায় হাটু পানি জমে গেছে।

এইসব উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেটের নদ-নদীর পানি জেলার পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। তবে অনেকের অভিযোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানো কোন সহযোগিতা বা ত্রাণ আসেনি তাদের কাছে।

গত বুধবার বিকেল থেকে এসব উপজেলায় পানি বাড়তে শুরু করে। মধ্যরাতে অনেকের ঘরে হাটু পানি থেকে কারো ঘর গলা পানিতে ডুবেছে। অনেকের ঘর-বাড়ি তলিয়ে যায়। ভেসে যায় গবাদি পশু ও পুকুর-খামারের মাছ।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে এসব উপজেলায় ৫৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযাযী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭ উপজেলায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০২ জন বন্যাকবলিত হয়েছেন। আর আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেছেন ৪ হাজার ৮০২ জন।।

এছাড়া বন্যাকবলিত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ২০০ বস্তা করে মোট ১ হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ মেট্রিক টন করে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, বেশ কয়েকটি উপজেলায় বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। বিকাল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের নদ নদীগুলির তিনটি পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক দুর্গত এলাকাগুলোর খোঁজখবর নিচ্ছি। ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২শ মি.মি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন যা ছিলো সাড়ে ৬শ মি.মি। ভারতে বৃষ্টির পরিমাণ কমে গেলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

শাকিবের জীবনে প্রথম প্রেমিকা আমি : অপু বিশ্বাস

ঢালিউড বাদশাহ শাকিব খান। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। গত সোমবার (২৮ মে) চলচ্চিত্রে ২৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করে ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

সাকিবের ক্যারিয়ারের বিশেষ এ দিনকে ঘিরে অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ ভক্তরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি নায়িকা অপু বিশ্বাসও। তবে শুভেচ্ছাবার্তায় নিজেকে শাকিবের স্ত্রী বলেই দাবি করেছেন তিনি।

নিজেকে শাকিবের স্ত্রী বলে দাবি করাতে ভক্তদের মাঝে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারণ বছর খানেক আগেই এ তারকা দম্পতির বিচ্ছেদ হয়েছে।

গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘শাকিব খান আমার সন্তানের বাবা।আমিই তাকে প্রথম সন্তান উপহার দিয়েছি। সেই হিসেবে তার সফলতার এই বিশেষ দিনটির জন্য আমি নিজেও খুশি। আমার সঙ্গে শাকিব খানের প্রথম ছবি ‘কোটি টাকার কাবিন’। তার আগে তিনি অনেক ছবিই করেছেন। কিন্তু এই ছবিই শাকিবের অভিনয়জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।’

তিনি জানান, শাকিব খানের নায়িকা হিসেবে সর্বোচ্চ ৭২টি সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। তার জীবনে প্রথম প্রেমিকা ও স্ত্রী হিসেবে এসেছিলেন। তাই শাকিব খানের অভিনয়জীবনের সফলতার ২৫ বছরের পথে পথে তিনি জড়িয়ে আছেন বলে মনে করেন এই নায়িকা।

উল্লেখ্য, আগামী ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় শাকিব খানের ‘তুফান’। ইতোমধ্যে নির্মাতা রায়হান রাফীর এই সিনেমার শুটিং ও ডাবিং শেষ হয়েছে। ভারতে প্রায় ৪১ দিন ধরে চলেছে এই সিনেমার শুটিং।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টায় ‘তুফান’র প্রথম গান ‘লাগে উরাধুরা’ প্রকাশ্যে এসেছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ’র ইউটিউব চ্যানেলে গানটি মুক্তি পায়।

২ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের এই গানে পর্দায় রীতিমতো কাঁপন ধরিয়েছেন শাকিব খান ও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। প্রথমবারের মতো শাকিব খানের এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী প্রীতম হাসান।

বিয়ানীবাজারের ৪ ইউনিয়ন প্লাবিত- তলিয়ে গেছে বহু সড়ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ও শেওলা ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এলাকা কবলিত হয়েছে। এ দুই ইউনিয়নে কুশিয়ারা নদীর ১০টি ডাইক (নদী রক্ষা বাঁধ) বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এবং ডাইক দিয়ে প্রবল বেড়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শংকা রয়েছে।

এরই মধ্যে নিজ উদ্যোগে দুবাগ বাজারের ব্যবসায়ী ও নয়াদুবাগ এলাকার বাসিন্দারা বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ডাইক মেরামত করেছেন। পানির প্রবল স্রোতের কারণে এসব মেরামত কাজের স্থায়ীত্ব নিয়ে খোদ এলাকাবাসীর শংকা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে বিয়ানীবাজারের পুরাতন ফেরীঘাট সড়ক, জিরোপয়েন্ট-জকিগঞ্জ সড়কের খাড়াভরা অংশসহ বেশ কিছু গ্রামীন সড়ক।

দুবাগবাজার, বৈরাগীবাজারেও পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে। একই সাথে কবলিত দুই ইউনিয়নের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

সরেজমিন, বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর দুবাগ ইউনিয়নের নেরাউদি, মেওয়া, নয়া দুবাগ, গুচ্ছগ্রাম এবং শেওলা ইউনিয়নের দিগলবাক এলাকার ১০টি অংশের ডাইক ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। দুবাগের মেওয়া এলাকার আসলম উদ্দিন, বাবলু হোসেনসহ কয়েকজন বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মাটি ব্যবসায়ীরা রাতে কোন এক সময় ডাইক কেটে দেয়া তারা দুর্ভোগে পড়েছেন।

প্রত্যেক বন্যায় এভাবে ডাইক কেটে দিয়ে ওই শ্রেণির কথিপয় লোক লাভবান হলেও কয়েক ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাদের দাবি উপজেলা প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে (মাটি ব্যবসায়ী) আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে হঠাৎ বন্যার কবল থেকে এলাকার মানুষ রক্ষা পেতেন।

আকস্মিক বন্যার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামীম কবলিত এলাকা ও ভেঙ্গে ডাইক পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব ডাইক মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

একই সাথে কবলিত এলাকায় ৬৬ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে কবলিত পরিবার সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। একই সাথে ৩শ’ প্যাকেট শোকনো খাবার এবং অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ডাইক কেটে দেয়ার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। আমাদের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে বিয়ানীবাজারের পাঠানো হয়েছে। ডাইক মেরামতে প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিলেটের সব পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা

নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়া ও বন্যার কারণে সিলেট জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বুধ ও বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয়।

সিলেটের উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো হচ্ছে- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর, গোয়াইনঘাটের জাফলং, রাতারগুল ও বিছানাকান্দি এবং জৈন্তাপুরের লালাখাল।

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের অন্ততঃ ৮টি উপজেলায় বন্যা হয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। বুধবার (২৯ মে) বিকাল থেকে এসব উপজেলায় হু হু করে বাড়তে শুরু করে পানি। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। রাতে খবর পাওয়া যায়- অনেকের ঘরে গলা পর্যন্ত ঢুকে পড়ে পানি। অনেকের ঘর-বাড়ি তলিয়ে যায়। ভেসে যায় গবাদি পশু ও পুকুর-খামারের মাছ। এ অবস্থায় যে যেটুকু পারছেনে সেটুকু নিয়ে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজে।

কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ জানান- উপজেলার ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাদাপাথর পর্যটন ঘাটসহ সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

জাফলং পর্যটন স্পট বন্ধের বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন- গতকাল (বুধবার) এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ- এই ৫টি উপজেলায় মোট ২১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬, জৈন্তাপুরে ৪৮, কানাইঘাটে ১৮, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫ ও জকিগঞ্জে ৫৮টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার বিকাল থেকে মানুষজন উঠতে শুরু করেছেন।

এছাড়া বন্যাকবলিত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ২০০ বস্তা করে মোট ১ হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ মেট্রিক টন করে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।

সিলেটে আকস্মিক বন্যায় ডুবেছে সড়ক-মহাসড়ক, প্রস্তুত সেনাবাহিনী

সিলেটে টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চারটি উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। বুধবার (২৯ মে) থেকেই সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি ছিল বিপদসীমার ওপরে।

এদিন রাতে ভারতের মেঘালয় থেকেও নামে ব্যাপক ঢল, যাতে বন্যা দেখা দেয়। সিলেটে গত ২ বছরের মধ্যে এ বছরের মে মাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পানিবন্দি হয়েছেন অন্তত তিন লক্ষাধিক মানুষ। এদিকে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের উদ্ধার অভিযানে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে সেনাবাহিনী।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। দ্রুত উদ্ধার অভিযান চলছে। সেনাবাহিনীও ইতোমধ্যে রেকি করেছে। প্রয়োজনে তারাও উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে যোগ দেবে।‘

জানা যায়, বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কসহ ওই চার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। এতে ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন সড়কে।

সিলেটে আকস্মিক বন্যায় ডুবেছে সড়ক-মহাসড়ক, প্রস্তুত সেনাবাহিনী
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপরে ও কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়াও সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি নদী বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং গোয়াইনঘাট উপজেলায় সারিগোয়াইন নদী ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, পানিবন্দি হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। উপজেলার ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘২০২২ সালের মে মাসে সিলেট আবহাওয়া অফিসের রেকর্ডকৃত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৩৯ মিলিমিটার। ২০২৩ সালের মে মাসে ছিল ৩৩০ মিলিমিটার এবং ২০২৪ সালের মে মাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭০৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।