সিলেট
সিলেট নগরের ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ

রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টি সিলেট নগরের প্রায় ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষঅ
সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের কথাও জানিয়েছে নগর কতৃর্পক্ষ।
রোববার রাত থেকে সোমবার ২১৪ মি.মি (দুপুর ১২টা) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে ১০.৯৪ সে.মি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় কাউন্সিলর মাধ্যমে বন্যায় আক্রান্তদের মাঝে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পেঁৗছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি ও আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ মখলিছুর রহমান কামারন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী,কাউন্সিলর ফজলে রাব্বি চৌধুরী মাসুম,হমায়ুন কবির সুহিন,জয়নাল আবেদীন,সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ সোমবার (০৩ জুন) দুপুর ২টায় নগরীর মিরাবাজার, তেররতন, উপশহর ও ১০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় তারা আশ্রয় কেন্দ্রসহ পানিবন্দিদের খোঁজ খবর নেন।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোষ্টার ডিউটি পালন করবেন সিসিকের কর্মকর্তাগণ। জরুরি সেবায় কন্ট্রোলরুম যোগাযোগের ফোন নম্বর (০১৯৫৮—২৮৪৮০০) ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে।

সিলেট নগরের ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সোমবার মধ্যরাত থেকে টানাবর্ষণ হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডে এরও ১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সকাল থেকে নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে। আজ রাতে ওইসব এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। নগরীর সকল ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে নগর ভবন।
তিনি আরও জানান, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নগরীর ছড়া—খাল পানি ভরে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল ওয়ার্ড সমূহে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিসিক। আশ্রয় কেন্দ্রসহ ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সিসিক কতৃর্পক্ষ। ইতিমধ্যে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডে কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বসন্ত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, মওদুদ আহমের বাসায় আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। ১৩ নং ওয়ার্ড মির্জা জাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৪ নং ওয়ার্ড তেররতন স্কুল, ওমর শাহ স্কুল ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ ঘাসিটুলা স্কুল, জালালাবাদ মডেল স্কুল, মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ, কানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কাউন্সিলর তাদের নিজ বাস ভবনে পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয় প্রদান করছেন। ইতিমধ্যে মহানগরীতে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী আবস্থায় রয়েছেন।
সাজলু লস্কর আরও জানান, কাউন্সিলরদের দেয়া তথ্যমতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
সিলেট
আসাম-মেঘালয়ে ভারী বর্ষণ, সিলেটে বন্যার শঙ্কা

সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত। সেই সাথে সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি কয়েকদিন আগেরচে বেড়েছ কয়েকগুণ, যদিও মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার কিছুটা কমেছে। এ অবস্থায় পাল্লা দিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা আর আতঙ্কও।
বুধবার (২১ মে) সিলেটে সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘন্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আর ২৪ ঘন্টায় এর পরিমাণ ১৯৩ দশমিক ৮ মিলিমিটার। আরও কয়েকদিন ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে আবার সিলেটের উজানে ভারতের আসাম এবং মেঘালয়েও গত কয়েকদিন থেকে ভারী বৃষ্টি ঝরছে। সেখানকার গণমাধ্যমগুলো ঘেঁটে জানা গেছে, এমন বৃষ্টি আরও কয়েকদিন ঝরতে থাকবে।
সিলেট মহানগরীর অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলগুলোতে জলাবদ্ধতা সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। হাঁটা-চলাতো দায় হয়ই, এমনকি বাসস্থানেও তখন থাকা দায় হয়। সমস্যাটা অনেক পুরানো হলেও ২০২২ সালের বন্যার পর থেকে এই আতঙ্ক বেড়েছে সহস্রগুণ। সেবার বারংবার ডুবেছে সিলেট মহানগরী। এমনকি উপশহর ও সুবহানীঘাট পয়েন্টসহ আরও কিছু এলাকা দীর্ঘদিন ছিল পানির নিচে। সঙ্গে ছিল অবর্ননীয় দুর্ভোগ। এই দুর্যোগের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সিলেটের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অতিবৃষ্টি।
সিলেট মহানগরীর মাঝ দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর পানি যখন বিপৎসীমা অতিক্রম করে তখন এই নগরীর অবস্থা হয় ভয়াবহ। কারণ, তখন আর পানি নামার জায়গা থাকেনা। এমনিতে পর্যান্ত ড্রেনেজ সিস্টেম না থাকা, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন তৈরি ও নগরীর ছড়া বা খালগুলোর অধিকাংশই দখল হয়ে যাওয়ায় সিলেট মহানগরীর বৃষ্টির পানি নামতে দেরী হয়। তবে সুরমার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলে তা হয় আরও ভয়াবহ। তখন পানি নামার বদলে হু হু করে প্রবেশ করতে শুরু করে। নাগরিক দুর্ভোগ তখন রূপ নেয় মহাদুর্ভোগে।
বুধবার সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ২ দশমিক ৮৮ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের পর সুরমার তীর রক্ষা বাঁধ বা শহররক্ষা বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল সিলেট সিটি করপোরেশন। সেটা নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আলাপ আলোচনা হলেও কাজে কাজ কিছু হয়নি। কেবল আলোচনাই হয়েছে।
আবার নিম্নাঞ্চলের পানি পাম্প দিয়ে সেচের একটি প্রকল্পের ব্যাপারেও সিসিক’র আলোচনা হয়েছে বিস্তর। কিন্তু ঐ পর্যন্তই। কাজের কাজ কিছু আর হয়নি। আর তাই সিলেট মহানগরী বলতে গেলে অরক্ষিত। যে হারে বৃষ্টি চলছে বা আসাম মেঘালয় থেকে ঢল নামার যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় নগরবাসীর জন্য মহাদুর্ভোগ নেমে আসতে পারে।
সিলেট নগরীর উপশহর এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ হোসেন (৪৫) বলেন, ২০২২ এর পর এখন পর্যন্ত মানুষ আমাদের নিয়ে টিজ করে। পানি নেমেছে কি না জিজ্ঞেস করে মুচকি হাসে। আর তাই বর্ষা আসতে না আসতেই আমাদের উদ্বেগ আতঙ্কও বাড়তে থাকে। এবারও তাই। কখন যে ভারতের ঢল সুরমার তীর ডুবিয়ে আমাদের দুর্ভোগে ফেলে দিবে তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দিন দিন বাড়ছেতো বাড়ছেই।
সিলেট মহানগরীর নিম্নাঞ্চল উপশহর, সুবহানীঘাট, মাছিমপুর, শেখঘাট, কদমতলী, কুশিঘাট, মেন্দিবাগ, টেকনিক্যাল রোড সংলগ্ন এলাকার মানুষের দাবি, সিলেট সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনকে এখনই যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। তাহলে ক্ষয়-ক্ষতি কম হবে।
এদিকে মঙ্গল ও বুধবারের বৃষ্টিতে সিলেট মহনগরীর পীরমহল্লা, দরগাহ গেইট, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, বঙ্গবীর রোড, ছড়ারপার এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এখনো বিপাকে রয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ ও পথচারীরা।
সিলেট
বৃষ্টিতে মোটরসাইকেল ভিজলে কি ক্ষতি হয়?

বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া যেন মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের নিত্যদিনের ঘটনা। তবে অনেকেই জানেন না, বৃষ্টির পানি মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশে কেমন প্রভাব ফেলে। নিয়মিত ভিজলে বাইক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এর কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে।
বৃষ্টিতে ভিজলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে মোটরসাইকেলে?
১. ইঞ্জিন ও ইলেকট্রিক সার্কিটে সমস্যা
বৃষ্টির পানি যদি ইঞ্জিন বা ব্যাটারির সংযোগস্থলে ঢুকে পড়ে, তবে শর্ট সার্কিট হতে পারে। বিশেষ করে সিডিআই ইউনিট, স্পার্ক প্লাগ বা ওয়্যারিং সিস্টেমে পানি ঢুকলে বাইক স্টার্ট নাও নিতে পারে।
২. চেইন ও স্প্রকেটে মরিচা পড়া
চেইন, স্প্রকেট বা এক্সপোজড মেটাল অংশগুলোতে পানি জমে থাকলে দ্রুত মরিচা পড়ে। এর ফলে চেইনের আয়ু কমে যায় ও শব্দ করতে শুরু করে।
৩. ব্রেক সিস্টেমে গ্লিচ
পানি ঢুকে গেলে ডিস্ক বা ড্রাম ব্রেক ঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। ব্রেকের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
৪. টায়ারের গ্রিপ কমে যাওয়া
ভেজা রাস্তায় টায়ার সহজেই স্কিড করে। যদি টায়ারের ট্রেড গভীরতা কমে গিয়ে থাকে, তবে বৃষ্টিতে বাইক চালানো খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
৫. হেডলাইট ও ইনডিকেটরে পানি ঢোকা
অনেক সময় লাইটের ভেতরে পানি ঢুকে জমে যায়, যা ইলেকট্রিক ফাংশনে ব্যাঘাত ঘটায়।
কী করবেন বৃষ্টিতে বাইক ভিজে গেলে?
ইঞ্জিন বন্ধ থাকলে স্টার্ট দেওয়ার আগে শুকাতে দিন
চেইন শুকিয়ে লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করুন
সেফ কভারের নিচে পার্ক করুন
বাইক ওয়াশের পর যত্ন করে মুছে নিন
রেক, হেডলাইট, ইন্ডিকেটর ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা চেক করুন

বৃষ্টিতে মোটরসাইকেল ভিজলে কি ক্ষতি হয়?
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন ক্ষতি?
বাইক কভার ব্যবহার করুন
নিয়মিত চেইনে গ্রিজ বা লুব্রিকেন্ট দিন
ব্যাটারির সংযোগ স্থানে ইনসুলেশন ব্যবহার করুন
প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার সার্বিক চেকআপ করান
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বাইকের মেকানিকরা বলছেন, বর্ষায় প্রতিবার বাইক চালানোর পর মুছে রাখা এবং চেইন লুব্রিকেট করা অত্যন্ত জরুরি। নয়তো অল্প কিছুদিনেই বাইক খারাপ হতে শুরু করবে।
টিপস
পানিতে ডোবা রাস্তা এড়িয়ে চলুন
রেইন কোটের পাশাপাশি বাইকের জন্য রেইন কভার রাখুন
ঘরে ফিরে বাইক শুকনো জায়গায় রাখুন
বর্ষাকালে বাইক চালানো যেমন জরুরি, তেমনই তার যত্নও জরুরি। একটু সচেতন হলেই আপনি আপনার মোটরসাইকেলকে বৃষ্টির ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারেন দীর্ঘদিনের জন্য।
সিলেট
মনু মিয়ারাই সমাজের প্রকৃত নায়ক

তিন হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়েছেন মনু মিয়া। পেশায় গোরখোদক, বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন, এখন শয্যাশায়ী হাসপাতালে। তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী, যাতায়াতের একমাত্র ভরসা, নিজ হাতে কেনা ঘোড়াটি মারা গেছে—কে বা কারা মেরে ফেলেছে, জানেন না তিনি।
এই খবর শুনে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার ছুটে গিয়েছিলেন তার সঙ্গে দেখা করতে। কথা হয় দীর্ঘ সময় ধরে, যেখানে উঠে আসে মনু মিয়ার জীবনদর্শন, আত্মমর্যাদা আর নিঃস্বার্থ সেবার এক অনন্য গল্প।
বাসার জানান, হাসপাতালে গিয়ে মনু মিয়াকে দেখে মনে হয়েছে, এ মানুষ ভাঙবার নন। শারীরিকভাবে দুর্বল হলেও মানসিকভাবে অত্যন্ত দৃঢ়। ঘোড়ার মৃত্যুর পর তার পাশে দাঁড়াতে গিয়ে বাসার তাকে একটি নতুন ঘোড়া কিনে দিতে চাইলেও মনু মিয়া তাতে রাজি হননি। মনু মিয়া বলেন, ‘সুস্থ হয়ে বাড়ি গেলে সাতটা ঘোড়া কিনতে পারব।’
এই জবাবে বিস্মিত হন বাসার। তিনি বোঝেন, মনু মিয়া দান নিতে চান না। জীবনভর সাধনার ফসল দিয়ে নিজের শখ পূরণ করেছেন। শখের পেছনে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করেছেন তিনি। তার সংগ্রহে রয়েছে হাতির দাঁত দিয়ে বানানো ছুড়ি, হরিণের শিংয়ের লাঠি, দামি চাবুক—সবই শখ পূরণের নিদর্শন। তবে মনু মিয়া কখনোই ঘোড়াকে আঘাত করেননি।
ঘোড়া হারিয়ে তিনি কষ্ট পাননি, এমনটা নয়। কিন্তু তার ভাষায়, ‘যার আছে, তারই যায়। কপালে লেখা ছিল, তাই গেছে। কে মারল, দেখিনি, কাকে দোষ দেব?’ এমন ভাবনার মানুষ সমাজে আজ বিরল।
ঘোড়াপ্রেমী এই মনু ১০ মণ ধানের কুড়া, ১০ মণ খড় কিনেছিলেন ঘোড়ার খাবারের জন্য। বাসার বলেন, ‘কথা বলতে গিয়ে একসময় তিনি চুপ ছিলেন। পরে বলতে থাকেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে ঢাকা, এখানে শুনি ঘোড়াটা মারা গেছে। আমার চেয়ে আমার পরিবারের লোকদেরও অনেক কষ্ট হচ্ছে। পরিবারের লোকেরা ঘোড়াকে পালে। আমি তো ঢাকায়, বাড়িতে গেলে কান্না পাবে।’ আমি তাকে আবার বললাম ঘোড়া কিনে দেওয়ার কথা, তিনি রাজি নন। তিনি বাড়ি যেতে পারলে নিজেই আবার শখ মেটাবেন।’
বর্তমানে মনু মিয়া ডায়াবেটিস ও কোমরব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি এই অভিনেতাকে জানান, তার কোনো শত্রু নেই। তিনিও কখনো মনে করেন না কেউ তার ক্ষতি করতে পারেন। তিনি সবাইকে আপন মনে করেন। এ জন্যই তিনি ছুটে যান সবার করব খুঁড়তে। বাসার বলেন, তিনি অসুস্থ হয়েছেন অনিয়মের জন্য। যদি রাতে খাওয়ার পরে শোনেন কাল কোথায় কবর খুঁড়তে যেতে হবে। পরে তিনি আর কিছুই খেতে পারেন না। পরের দিন করব দেওয়া শেষ হলে সন্ধ্যায় এসে বাড়িতে খান। মৃত্যুবাড়িতে তিনি কিছু খান না। এমনকি কোনো টাকাও কোনো দিন নেন না। খাবারের অনিয়ম করেন। মানুষের পাশে থাকাটাই তার কাছে প্রথম।
অনেকেই তাকে ঘোড়া উপহার দিতে চাইলেও মনু মিয়া তাতে রাজি নন। শেষবার শুধু একটি ইচ্ছার কথা জানান- হজে যেতে চান তিনি, সেটাও নিজের সামর্থ্যেই।
বাসারের উপলব্ধি মনু মিয়ারাই সমাজের প্রকৃত নায়ক। অভিনেতা বলেন, ‘এমন মানুষের কথা শুনলে জটিলতায় ভরা দুনিয়া অনেকটাই সহজ হয়ে আসে। মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি তারা নিঃস্বার্থভাবে আলাদা দায় অনুভব করেন। যা আমাদের এই সমাজে সবার জন্য অনুসরণীয়। মনু মিয়াই আমাদের এক উজ্জ্বল আদর্শ হয়ে উঠেছেন। মনু মিয়া নায়ক হতে চাননি। তার মহৎ কাজ তাকে আমাদের নায়ক করে তুলেছে। এই দিশাহীন সমাজে তার মতো খাঁটি সোনার মানুষের অভাব।’
মনু মিয়ার জীবন কাহিনি মানবিকতা, আত্মসম্মান ও সমাজসেবার এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি—যা আমাদের সবাইকে ভাবায়, অনুপ্রাণিত করে একটি সুন্দর সমাজ গড়ার।
সিলেট
ভিড়ের মধ্যে তামান্নাকে ধরে টানাটানি

দক্ষিণী চলচ্চিত্র নায়িকা তামান্না ভাটিয়ার সৌন্দার্যে বুঁদ হয়ে আছেন আট থেকে আশির সিনেমাপ্রীমেরা। আইটেম গানে অভিনেত্রীর কোমর দোলানো সাথে এক্সপ্রেশন, দর্শকদের মনে ঝড় ওঠান। ‘স্ত্রী-২’ সিনেমায় ‘আজ কি রাত’ গান মুক্তির পর জনপ্রিয়তা কয়েক গুন বেড়েছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় একটি অ্যাওয়ার্ড শো-তে অংশ নিয়েছিলে তামান্না। অনুষ্ঠান শেষে বাঁধে বিপত্তি। মঞ্চ থেকে নামার সময় অভিনেত্রীকে ঘিরে ছবি তোলার হিড়িক লাগে। সেই সময় অভিনেত্রীর আশেপাশে কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে দেখা যায়নি!

tamanna bhatia
তামান্নাও অনুরাগীদের আবদার মেটাতে দাঁড়িয়ে পড়েন। অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে অভিনেতার শরীরও স্পর্শ করেন। কেউ কেউ হাত ধরে টানাটানি করেন। ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নেটাগরিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
অভিনেত্রীকে হেনস্তা করার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই অনুষ্ঠান আয়োজকদের এক হাত নিচ্ছেন নেটিজেনরা। অভিনেত্রীর এক অনুরাগী মন্তব্য করেছেন, ‘তামান্নার নিরাপত্তা কোথায়?’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘ওনাকে (তামান্না) খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতে ফেলেছেন আয়োজকরা।’ তবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি তামান্না।
অভিনেত্রীকে সর্বশেষ তেলেগু ছবি ‘ওডেলা ২’-তে দেখা গেছে। তামান্না ছাড়াও এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন হেবা প্যাটেল, বশিষ্ঠ এন. সিমহা প্রমুখ।
আলোচিত
সিলেটে মোটরসাইকেলসহ ৩ যুবককে ধরল পুলিশ

সিলেটের জৈন্তাপুর থানাপুলিশের অভিযানে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ‘ইয়ামাহা-R15’ মোটরসাইকেলসহ ৩জনকে গ্রেফতার করে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। অভিযানে চোরাচালানের মোটরসাইকেলসহ পৃথক ১টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।সিলেট ভ্রমণ প্যাকেজ
রবিবার (১৮ মে) জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে মোটরসাইকেলসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফেনী জেলার দাগনভুঁইয়া উপজেলার কামু পাটুয়ারীবাড়ী সেকান্দারপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আবদুল্লাহ আল সাবের শান্ত (২৩), ফেনী সদরের মিজানপাড়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক (২২) এবং জৈন্তাপুর উপজেলার ডৌডিক গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে আশিকুল ইসলাম (২৫)।
পুলিশ জানায়, রবিবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১২ টায় পুলিশের একটি টহল টিম জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের শেলটেক কোম্পানির গেইটের সম্মুখ হতে ভারতীয় চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসা ‘নীল-সাদা রঙয়ের ১টি ইয়ামাহ-R15’ মোটরসাইকেলসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। ওই সময় পুলিশি অভিযান টের পেয়ে চোরাচালানে জড়িত একজন চোরাকারবারী পালিয়ে যায়।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘পলাতক ১জন আসামীসহ মোট ৪জনকে আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঐ মামলায় তাদের ৩জনকে আটক দেখিয়ে রবিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।’
সিলেট
সিলেটে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ক্লিনিকে আগুন

সিলেট নগরীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একটি ক্লিনিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন রোগীরা।
শুক্রবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাজলশাহ এলাকায় অবস্থিত নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুল হুদা নাঈমের মালিকানাধীন এনজেএল-ইএনটি সেন্টারে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে চার তলাবিশিষ্ট ভবনের তৃতীৃয় তলায় অপারেশন থিয়েটারে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কেবিনগুলোতে। ধোঁয়ার কারণে আটকা পড়েন রোগীরা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন রোগীদের। পড়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও একজন নার্সসহ দুজনকে উদ্ধার করে।
জানা গেছে, ক্লিনিকটিতে ৯টি কেবিন রয়েছে। ঘটনার সময় সবকটি কেবিনে রোগী ছিলেন।
ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার ফার্ভিস সদস্য নুর রহমান বলেন, ভেতরে ধোঁয়ার কারণে আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ভেতরে কোনো মানুষ নেই। সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।
- আন্তর্জাতিক1 year ago
বাংলাদেশিদের জন্য সহজ হচ্ছে ব্রাজিলের ভিসা
- বিনোদন1 year ago
জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যে তথ্য জানালেন অপু বিশ্বাস
- বিশেষ প্রতিবেদন1 year ago
বাড়ছে নদীর পানি, সিলেটে আগাম বন্যার শঙ্কা
- সিলেট7 months ago
সিলেটের গোলাপগঞ্জে স্ত্রীর হাতে মসজিদের ইমাম খুন
- বিনোদন8 months ago
আমি একটা ছাগল, এবার আমি মানুষ হব ইনশাআল্লাহ: মাহি
- প্রবাস7 months ago
স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
- প্রবাস7 months ago
কানাডায় শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের নতুন নিয়ম
- আন্তর্জাতিক6 months ago
১৪ দেশের শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা