Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সিলেটে পূর্ব শত্রুতার জের মাদরাসার প্রিন্সিপালকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করলেন সহকর্মী!







শ্রেফ সড়ক দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা মাদরাসার প্রিন্সিপাল শায়খুল ইসলামকে (৫০)-এমন অভিযোগ ওই মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

তাদের মতে, শাস্তি পাওয়ার ক্রোধ থেকেই এ জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক লুৎফুর রহমান। তিনি পরিকল্পিতভাবে তার প্রাইভেট কার দিয়েই প্রিন্সিপাল শায়খুল ইসলামকে চাপা দিয়েছেন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।



যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক লুৎফুর রহমান এ দুর্ঘটনায় তার কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বুরুঙ্গা সড়কের মুখ এলাকায় প্রাইভেট কার চাপায়, ধাক্কায় প্রাণ হারান মোটরসাইকেল আরোহী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা মাদরাসার প্রিন্সিপাল শায়খুল ইসলাম (৫০)। এসময় তিনি মোটরসাইকেলযোগে মাদরসায় যাচ্ছিলেন। তিনি বুরুঙ্গা সড়কের মুখ এলাকায় পৌছলে পেছন দিক থেকে একটি প্রাইভেটকার (সিলেট-হ-১২-০০৫৫) মোটরসাইকেলসহ তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তাকে চাপা দিয়ে প্রাইভেটকারটিও সড়কে উল্টে যায়। কারের চালকের আসনে হত্যা পরিকল্পনাকারী নিজেই ছিলেন এবং ঘটনার পরপর দৌঁড়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন মাদরাসার শিক্ষকরা।



খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাইভেটকারটি জব্দ করতে সক্ষম হলে কোন ব্যক্তিকে আটক করতে পারেনি। প্রিন্সিপাল শায়খুল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের উস্তার আলীর ছেলে।
পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

পুলিশ ও মাদরাসার শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে মাদরাসার প্রিন্সিপালের সাথে বাংলা বিভাগের প্রভাষক দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের লুৎফুর রহমানের বিরোধ চলে আসছিল। দায়িত্বে অনিয়মের কারণে প্রায় ২ বছর পূর্বে প্রিন্সিপাল তাকে বহিস্কার করেছিলেন। এঘটনায় লুৎফুর রহমান প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু করতে না পেরে মুছলেকা দিয়ে স্বপদে বহাল থাকেন লুৎফুর।



সম্প্রতি মাদরাসায় তার অনুপস্থিতির কারণে প্রিন্সিপাল ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা লুৎফুরের বেতন কর্তন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

নিহতের বোন মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

নিহতের চাচা পুলিশ সদস্য শাহ আলম বলেন, এখানে এসে জানলাম মাদরাসার এক শিক্ষককের সাথে বিরোধের জের ধরে আমার ভাতিজাকে পরিকল্পিত ভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।



মাদরাসার সহকারি প্রিন্সিপাল আহমদ আলী হেলালী ও আরবী বিভাগের প্রভাষক ওয়ারিস উদ্দীন আল মামুন এবং গর্ভনিংবডির সহসভাপতি রাশিদুল হক চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রিন্সিপাল সাহেবের সাথে বিরোধ চলে আসছিল বাংলা বিভাগের প্রভাষক লুৎফুর রহমানের। দায়িত্বে অনিয়মের কারণে প্রায় ২ বছর পূর্বে তাকে বহিস্কার করা হয়। বহিস্কারের ঘটনায় প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মামলাও করেন লুৎফুর। কিন্তু কিছু করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত মুছলেকা দিয়ে বহাল থাকে। সম্প্রতি মাদরাসায় অনুপস্থিতির কারণে তার বেতন কর্তন করা হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছেন- সেই লুৎফুর রহমান নিজে প্রিন্সিপালকে গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।



মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা আহমদ আলী হেলালী বলেন, আমরা ছাত্র-শিক্ষক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। প্রিন্সিপাল শায়খুল ইসলামের খুনি লুৎফুর রহমানের ফাঁসি চাই।

হাইওয়ে পুলিশের এসআই মোজাম্মেল হক বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে প্রিন্সিপালের লাশ, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল জব্দ করেছি। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে প্রিন্সিপালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে তদন্ত না করে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

ওসমানীনগর থানার পরিদর্শক (ওসি) এসএম আল-মামুন বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ঘটনার পর থেকে মাদরাসার বাংলা বিভাগের অভিযুক্ত প্রভাষক লুৎফুর রহমানও পলাতক রয়েছে। তবে তদন্তের আগে দুর্ঘটনা না হত্যাকান্ড তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।



এ ব্যাপারে মাদরাসার বাংলা প্রভাষক লুৎফুর রহমানের সাথে মোবাইল ফেনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে আছি। কার গাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটালো আমি জানি না। আমাকে মিথ্যাভাবে এ ঘটনার সাথে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

শায়খুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে তার পরিবারে।



সরজমিনে প্রিন্সিপালের গোয়ালাবাজারস্থ বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নিহতের স্ত্রী লিপি ইসলাম, বোন মর্জিনা বেগম, বড় মেয়ে খাতুনে জান্নাত কাওলা, মেজো মেয়ে খাদিজা তালুকদার ও স্বজনরা। অবুঝ ছেলে খাত্তাব ইসলাম ফ্যাল ফ্যাল করে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। সে জানে তার বাবা হাসপাতালে গেছেন এবং ফিরে আসবেন।
সূত্রঃ দৈনিক শ্যামল সিলেট








You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.