নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের জ্যামাইকায় বিডি ফ্রিশ সুপার মার্কেটের মালিক আবু চৌধুরী (৩৫) এবং তার স্ত্রী ইফফাত লুবনার (২৪) বিরুদ্ধে বাঙালি প্রবাসীদের মুক্তিপণের জন্য অপহরণ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ১৮ ডিসেম্বর এফবিআই তদন্ত শেষে এই দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে সোপর্দ করেছে।
ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টের কৌঁসুলিরা জানান, একটি ঘটনা অনুযায়ী আবু চৌধুরীর গাড়িতে হাত-পা বেঁধে বেশ কদিন আটকে রাখার সময় এক প্রবাসী যুবককে বেধড়ক মারপিট করা হয়। অবিলম্বে মুক্তিপণের অর্থ প্রদান এবং পুত্রের জন্য বিমানের টিকিট পাঠানোর দাবিতে বাংলাদেশে তার বাবাকে ফোন করানো হয়।
ওই যুবক ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে এসে জ্যামাইকার লুবনার সহায়তা চেয়েছিলেন। লুবনা নিজ অ্যাপার্টমেন্টে তাকে থাকার ব্যবস্থা করেন। একটি চাকরি সংগ্রহ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। এ সময় যুবকটির পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজপত্র নিজের কব্জায় নিয়ে নেন। এমনকি বাংলাদেশ থেকে যত ডলার এনেছিলেন সেগুলোও লুবনা নিজের কাছে রাখার জন্য নিয়ে নেন। অ্যাসাইলামের আবেদনের সব ব্যবস্থা করার কথাও বলেছিলেন লুবনা। এফবিআই এ চক্রের নাম দিয়েছে ‘বাঙালি ছিনতাই চক্র’।
২০২৩ সালের ১৩ মে পর্যন্ত আটক ছিলেন উল্লিখিত ওই যুবক। পরে মুক্তি দেওয়া হলেও তার পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাগজপত্র রেখে দেওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয়েছিল, এই ঘটনা কাউকে বললে খুন করা হবে।
আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ মে এই যুবককে নানা শর্তে ছেড়ে দেওয়ার পর একই বছরের জুলাই মাসে আরেক বাঙালি যুবক এবং এ বছরের জানুয়ারিতে মুক্তিপণ দাবিতে আরেক বাঙালিকে অপহরণ করেছিল এ চক্র। সেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে সর্বশেষ মামলায় আবু চৌধুরী আড়াই লাখ ডলার এবং লুবনা জামিন লাভ করেছেন লাখ ডলার বন্ডে। তাদের আরেক সহযোগী শাহ শহিদুল চৌধুরী গত বুধবার দেড় লাখ ডলার বন্ডে জামিন লাভ করেছেন।
এই চক্রের অন্য সদস্যরাও জামিনে আছেন। তারা হলেন সৈয়দ রুবেল আহমেদ (৪৩), শাহেদ আলম (২৯), আঞ্জু খান (২৮) এবং সুলতানা রাজিয়া (৩৮)। সবার বাড়ি সিলেট ও বৃহত্তর ঢাকায় বলে জানা গেছে।