Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

প্রেম করে বিয়ে, মামলা … এক পর্যায়ে প্রেমিকার পল্টি, প্রবাসী প্রেমিক জেলে







প্রেমিকার পরিবার ভালোবাসা মেনে না নেওয়ায় তারা পালিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বাড়ি থেকে দুজনে পালিয়ে প্রথমে কাজি অফিসে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন। পরদিন কোর্টে নোটারির মাধ্যমেও এভিডেভিট করেন। এরপর পরিবারের চাপে যুগল হাজির হন থানায়।

থানায় হাজির হওয়ায় কাল হয় প্রেমিকের। প্রেমিকার পরিবার থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে অপহরণের মামলা দায়ের করে। পল্টি খেয়ে যায় প্রেমিকাও। কোর্টে অপহরণের জবানবন্দি প্রদান করলে আদালত প্রেমিককে জেলহাজতে ও প্রেমিকাকে তার মায়ের জিম্মায় দেন।



ঘটনাটি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া পৌর শহরের বিহালা গ্রামের। কাতার প্রবাসী মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ইমন আলীর সঙ্গে কাদিপুর ইউনিয়নের মৈন্তাম গ্রামের তাহির আলীর মেয়ে তাহমিনা আক্তার তারিনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো।

প্রেমিকার কথায় ছুটিতে মাস খানেক আগে দেশে আসেন ইমন এবং বিয়ের প্রস্তাবও পাঠায় প্রেমিকার বাড়িতে। কিন্তু আমেরিকা অ্যাপ্লাই করা মেয়েকে কাতার প্রবাসী ইমনের কাছে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় তারিনের পরিবার।

তারিনের পরিবার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ১৩ মে ইমন ও তারিন ঘর ছাড়েন। সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা পালিয়ে বিয়ে করবেন। ১৫ মে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড কাজী অফিসে উপস্থিত হয়ে এক লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে রেজিস্ট্রিমূলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।



তারিনের স্কুল সার্টিফিকেটে ও জন্ম নিবন্ধনে তার জন্ম তারিখ হলো ০১-০১-২০০১। অতঃপর ১৬ মে সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী মোঃ মিজানুল হকের কাছে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে দুজন উপস্থিত হয়ে বিয়ের বিষয়ে একটি এভিডেভিট করেন।

এরপর এসব প্রক্রিয়া শেষ করে কাবিনের রশিদ নিয়ে ইমন ও তারিন একই দিনে সন্ধ্যায় হাজির হন কুলাউড়া থানায়। প্রেমিকা তারিন নিজে স্বীকারোক্তি দেন যে তিনি ইমনের সাথে স্বেচ্ছায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছেন।



জানা যায়, তারিনের পরিবার ও একটি প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে কুলাউড়া থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে ইমনকে আটকে দেয়া হয়।

আর তারিনের মা কৌশলে তারিনকে তার হেফাজতে নিয়ে নেন। তারিনের স্কুল সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও কাবিননামায় তাহমিনা আক্তার তারিন নাম উল্লেখ থাকলেও মামলার এজাহারে তাহমিনা জান্নাত তারিন উল্লেখ করা হয়েছে। বয়স দেখানো হয়েছে ১৭। কিন্তু সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও কাবিননামা অনুযায়ী তারিনের জন্ম তারিখ হলো ০১-০১-২০০১।

১৯ মে আদালতে প্রেমিকা তারিন তার জবানবন্দিতে জানায়, ঘটনার দিন সে কুলাউড়া ইয়াকুব তাজুল মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ইমন তার মুখে রুমাল চেপে ধরলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। জ্ঞান ফেরার পর দেখে সে একটি বাড়িতে রয়েছে।



পরে ইমনের নিকট সে জানতে পারে, সে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে তার খালার বাড়িতে রয়েছে। ওই বাড়িতে সে তাকে জোর করে দুই তিন দিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে। সম্পর্কে ইমন তার চাচাতো ভাই হয়।

এদিকে মৌলভীবাজার আমলগ্রহণকারী আদালতের নথি থেকে জানা যায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রেমিকা তাহমিনা আক্তার তারিনকে সুষ্টু তদন্তের স্বার্থে নারী ও শিশু নির্যাতন দম আইনের ২২ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। প্রেমিকা তারিন আদালতে হাজির হলে তার মাতা ফয়জুন নেছা বিজ্ঞ আদালতে বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে মেয়েকে নিজ জিম্মায় নেয়ার প্রার্থনা করেন।

এবং বিজ্ঞ আদালত তিন হাজার টাকা বন্ড দাখিলের মাধ্যমে প্রেমিকা তারিনকে তার মায়ের কাছে জিম্মায় দিয়ে দেন। অন্যদিকে প্রেমিক ইমনের বিজ্ঞ আইনজীবী আদালতে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।

এদিকে জবানবন্দি দেওয়ার আগে প্রেমিকা তারিনের একটি ভিডিও বার্তা জানায়, ‘আমি নিজের ইচ্ছা থাকিও বাড়ি থাকি আইছি, কেউ এর মাঝে দায়ি নয় বা কেউ আমারে অপহরণ করছে না। এর কারণে কাউকে বিভ্রান্ত করে লাভ নাই বা নুর হোসেন নামে একটি ছেলেরে বহুত বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, সে এসব বিষয়ে কিচ্ছু জানে না। তারে অহেতুক বিভ্রান্ত করে লাভ নাই। আমি আমার নিজের ইচ্ছা থাকি কইয়ার, কেউ আমারে জোর করি কওয়ার না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই মোঃ আব্দুল খালেককে একজন সাবালিকা মেয়ে কিভাবে নাবালিকা হলো প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাদির অভিযোগ অনুযায়ী মামলা নেয়া হয়েছে।

তবে বাদি পক্ষ কোনপ্রকার সার্টিফিকেট আমাদের দেয়নি। তদন্তের স্বার্থে আমরা স্কুল থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবো। বয়স নির্ধারণের জন্য হাসপাতালে আবেদন করেছি। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত বয়স নির্ধারণ করে মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইয়ারদৌস হাসান ইমনকে সিএনজি অটোরিকশা চালক উল্লেখ করে বলেন, তিনি মেয়েটিকে ফুঁসলিয়ে অপহরণ করে ফেঞ্চুগঞ্জে তার আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটির ভাই ইউসুফ আলী অপহরণকারী ইমনকে প্রধান আসামি ও তার পরিবারের সদস্যসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। মেয়েটি বিজ্ঞ আদালতে অপহরণ নিয়ে ইমনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.