কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলির একটি ভিডিও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেখাচ্ছিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ভিডিও দেখিয়ে মোহাম্মাদ ইকবাল নামে ডিএমপির ওই কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খানকে বলছিলেন, ‘গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।’
মোহাম্মাদ ইকবাল ওয়ারি বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আর কর্মস্থলে আসেননি। সোমবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় নরসিংদীর বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয় তাকে। তিনি এই মুহূর্তে ডিবি হেফাজতে আছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মোহাম্মদ ইকবালকে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাকে এখনও আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে ফৌজদারি মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের গুলি করেছে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করলে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এর দুদিন আগে পুলিশের গুলি করা নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আন্দোলনের সার্বিক অবস্থা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে জানাচ্ছেন ডিসি ইকবাল। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।’
আন্দোলনের পুরো সময় মোহাম্মদ ইকবাল ওয়ারি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়া এলাকা তার আওতাধীন ছিল। আন্দোলনের সময় এই দুটি জায়গাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আন্দোলনে নিহতদের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকার আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পুলিশ ও জনতা হতাহত হয়েছেন যাত্রাবাড়ী ও শনিরআখড়া এলাকায়।