সকাল থেকে একটু পরপর ট্রাক, রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা পায়ে হেঁটে মানুষ আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি)। কেউ নিয়ে আসছেন গুঁড়া দুধ, কেউ শুকনা খাবার, কেউ আবার আনছেন ওষুধ, ন্যাপকিন ও কাপড়।
এমন কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস নেই, যা টিএসএসিতে আসছে না। মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা সরাসরি এসেও টাকা দিচ্ছেন অনেকেই। এসব ত্রাণ যাবে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বন্যাকবলিত এলাকায়।
শুধু টিএসসি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা মানুষের দুয়ারে দুয়ারেও ছুটে গিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করছেন। সংগ্রহ করা ত্রাণ নিয়ে একটু পরপর টিম যাচ্ছে বন্যাদুর্গত এলাকায়।
টিএসসিতে ত্রাণ সংগ্রহের কাজ করা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখানে স্বেচ্ছাসেবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন। রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুকনা খাবার নিয়ে প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারব।’
বিভিন্ন হল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ সংগ্রহে সহযোগিতা করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাদেক কায়েম। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তির মাধ্যমে বন্যাকবলিত মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে যাচ্ছি। আমরা এ কাজে সফল হব। সর্বস্তরের মানুষ আমাদের সহযোগিতা করছে।’
সার্বিক বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘টিএসসিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ত্রাণ দিচ্ছে। মানুষ আমাদের বিশ্বাস করেছে, আমরা বিশ্বাসের মর্যাদা রাখব। আমরা সব হিসাব রাখছি। আমরা হারব না। নির্দিষ্ট জায়গায় আমাদের মালামাল পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত ট্রাক ও গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, টিএসসিতে ‘গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি’তে গতকাল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ৮৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা।