Beanibazarview24.com
আমেরিকায় কাজ করার জন্য ‘এইচ-ওয়ানবি’ ভিসা বিদেশি নাগরিকদের কাছে ‘স্বর্গের দরজা’ বলে মনে হলেও ওই ভিসা নিয়ে যারা দেশটিতে প্রবেশ করেছেন তাদের অনেককে এখন দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। তাদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে।
আমেরিকার জীবনযাত্রার মান নিরিখে তাদের বেতন বা অন্য যেকোনো চাকরির চেয়ে কম। চাকরির নিরাপত্তা, কর্মচারী হিসেবে আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা এমনকি ভাতা পাওয়ার সুযোগটাও বলার মতো নয়।
মার্কিন থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সংগঠন ‘সাউথ এশিয়া সেন্টার অব দি আটলান্টিক কাউন্সিল’-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট এ কথা জানিয়েছে। এই বিষয়গুলোর উন্নতির জন্য ভিসা আইনের সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দফতরে (ইউএসসিআইএস) গত বছরের পরিংসংখ্যান জানাচ্ছে, ২০১৮-র ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এইচ-ওয়ানবি ভিসাপ্রাপকের মোট সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৭। তার মধ্যে ছিলেন ৩ লাখ ৯ হাজার ৯৮৬ জন ভারতীয়। এর মধ্যে বেশ কিছু বাংলাদেশিও রয়েছে।
কয়েক দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, শিগগিরই এইচ-ওয়ানবি ভিসা আইনের সংস্কার করা হবে। যাতে ওই ভিসাপ্রাপকদের আমেরিকায় থাকার অনিশ্চয়তা দূর করা যায়। ওই ভিসা যাতে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার সহায়ক হয়ে ওঠে। তার পরেই থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সংগঠনটির এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রন হিরা ও সাউথ এশিয়া সেন্টার অব দ্য আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রধান ভরত গোপালস্বামীর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ওই রিপোর্ট। তাতে মূলত তিনটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এক. প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওই ভিসাপ্রাপকদের বেতন, অন্য আর্থিক সুবিধা বাড়ানো। বিমা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা। আমেরিকাকে যদি বিদেশ থেকে ‘সেরা ও উজ্জ্বলতম’ কর্মী আনতে হয়। তবে তাদের প্রতি ত্রৈমাসিকে সেরা বেতনটাও দিতে হবে।
দুই. মার্কিন সংস্থাগুলোর কর্তৃপক্ষদের মাথায় রাখতে হবে, তারা যাদের বিদেশ থেকে এনে কাজ করাচ্ছেন, তারা কাজটা করতে এসেছেন আমেরিকায়। তাই ভিসাপ্রাপকদের সঙ্গে তাদের বৈষম্যমূলক আচার-আচরণ করা চলবে না। বেতনবৃদ্ধি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব নয়, যোগ্যতাকেই তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। পরে সেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সেটাকেই মানদণ্ড করতে হবে। মার্কিন মুলুকে কাজের লোক নেই বলে, যে কাউকে অন্য দেশ থেকে নিয়ে এসেও নিয়োগ করতে পারবেন না সংস্থার কর্ণধাররা।
তিন. কার্যকরী তদন্ত ও শাস্তি ব্যবস্থাও যথাযথ করার সুপারিশ করেছে এই থিংক ট্যাঙ্ক। এখন এটা শুধুই অভিযোগভিত্তিক। এটা বদলাতে হবে। এ সবের জন্যই আশু সংস্কার প্রয়োজন এইচ-ওয়ানবি ভিসা আইনের।
প্রসঙ্গত, এইচ-ওয়ানবি ভিসার জন্য প্রতিবছর ৮৫ হাজার ভিসা দেয়া হয়। চাহিদার তুলনায় বেশি আবেদন জমা পড়ায় লটারির মাধ্যমে এই ৮৫ হাজার ভিসা নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ বিভাগে অর্থাৎ যারা স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি নিয়ে আবেদন করেন তাদের দেয়া হয় ৬৫ হাজার ভিসা।
অন্যদিকে বিশেষ বিভাগে ২০ হাজার ভিসা দেয়া হয়। এ ধরনের ভিসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.