বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিলেটের বিয়ানীবাজার থানা প্রাঙ্গনে বিজয়োৎসব করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রায়হান উদ্দিন (১৮) হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী দুই যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার পৃথক স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের মৃত ইসহাক আলীর ছেলে ও যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রোকন এবং উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ পাড়িয়াবহর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে ও যুবলীগ নেতা কলিম উদ্দিন। তারা দু’জনেই রায়হান উদ্দিন (১৮) হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১৫ নম্বর আসামী কলিম উদ্দিন এবং একই মামলার ৩০ নম্বর আসামী সাইফুল ইসলাম রোকন।
আরও পড়ুন:
সিলেটে জুমার নামাজের খুতবা দেওয়ার সময় ইমামের মৃত্যু
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, বাড়তে পারে দেশেও
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বিয়ানীবাজার থানায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও হামলা চলাকালে গুলিতে তিন যুবক নিহত এবং অন্তত ১০জন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন হচ্ছেন রায়হান উদ্দিন (১৮)। সে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার তেলিকান্দি গ্রামের মো. ফারুক উদ্দিনের ছেলে। তবে রায়হান উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বিয়ানীবাজার পৌরসভার নয়াগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। এ ঘটনায় নিহত অন্য দুজন হচ্ছেন- উপজেলার মোল্লাপুর ইউনিয়নের কটুখালিরপাড় এলাকার তারেক আহমদ (২৪) ও পৌরসভার পূর্ব নয়াগ্রাম এলাকার ময়নুল ইসলাম (৩২)। নিহত সকলেরই ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন কার্য সম্পাদন হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছোটভাই রায়হান উদ্দিন নিহতের ঘটনায় বড়ভাই বুরহান উদ্দিন গত ২৬ আগস্ট সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ ৩০ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া গত ৫ আগস্ট তারেক আহমদ (২৪) ও ময়নুল ইসলাম (৩২) নামে আরও দুজন নিহতের ঘটনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের রয়েছে। ওই দিনের তিন মামলায় প্রধান আসামী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনের সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরীকে মুঠোফোনে বলেন, সাইফুল ইসলাম রোকন ও কলিম উদ্দিন নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দুজনেই গত ৫ আগস্ট রায়হান উদ্দিন নিহতের ঘটনায় তার ভাই বুরহান উদ্দিনের দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। তিনি বলেন, সকল মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।