ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রযোজক সিমি ইসলাম কলি। গত ২৪ আগস্ট আরও দুইজনকে আগামী করে মামলা করা হয়। বাকিরা হলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম ও জাহিদুল ইসলাম আপন।
মামলা প্রসঙ্গে সিমি বলেন, আমার ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক করেছেন অপু বিশ্বাস ও জাহিদুল ইসলাম আপন। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই সাধারণ ডায়েরি ও প্রযোজক সমিতির মাধ্যমে সুরাহা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। পাশাপাশি মামলায় তিনি আরও অভিযোগ করেন, হিরো আলমের মাধ্যমে সমাধানের নাম করে তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন অপু।
সিমি আরও দাবি করে বলেন, ইউটিউব চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বহুদিন অপুর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমার হয়ে প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু ভাইও অপুর সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু তার কথাও সে রাখেনি।
আরও পড়ুন:
- ভিনগ্রহীদের সন্ধান মিলেছে, তবে তারা মানুষ নয়!
- ধার্মিক ছেলে পেলে অভিনয় ছেড়ে সংসারে মন দেবেন প্রিয়াঙ্কা
- এই প্রথম গাড়ির গিয়ার এলো মোটরসাইকেলে
- ৩১ বছর পর দেশে ফিরছেন রেমিট্যান্সযোদ্ধা আবু বকর
- স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
তিনি আরও বলেন, একদিন হিরো আলম আমাকে ফোন করে বলে, আমি রাজি হলে অপুর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করে দেবেন। আমার মনে হয়, অপুই তাকে ফোন দিতে বলেছেন আমাকে। এরপর টাকার বিনিময়ে চ্যানেলটি ফিরে পেলেও ভিডিওগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। বিষয়টি হিরো আলমকে জানালে তিনি বলেন, দেখছি কী করা যায়। এরপর আর কোনো খবর নেই।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গেল বছর আগস্টে সিমির ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক করেছেন বিবাদী অপু বিশ্বাস ও জাহিদুল ইসলাম। এরপর আশ্বাস দিয়েও চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেননি অপু বিশ্বাস। তাই বাধ্য হয়ে লালবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সিমি। যেখানে আসামি করা হয় অপু ও জাহিদুলকে।
বিষয়টি নিয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, আর পারি না এই মহিলাকে (সিমি ইসলাম কলি) নিয়ে। ওনার তো সবকিছু দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার মামলা কীসের! আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এসব তো ফাজলামো।
পাঁচ লাখ টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে চিত্রনায়িকা বলেন, এখানে হিরো আলম এলো কোথা থেকে! এটা সিমিই ভালো বলতে পারবেন। আমি তাকে ঠিকঠাকভাবে চিনিও না। আমি কী উত্তর দিতে পারি বলেন। সে টাকা কোথায় দিয়েছে কেন দিয়েছে— আমি কিছুই জানি না। এখন এসব মনগড়া কথা বলছে কেন!
অপু আরও বলেন, অফিসিয়ালি ইউটিউব চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করেন আমার অ্যাডমিন। হয়তো নাম আমার। মালিকানা আমার। কিন্তু আমি এসব নিয়ন্ত্রণ করি না। অন্য সংস্থা দিয়ে চালাই। যদি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হতো তাহলে আমি বলতে পারতাম।
অভিনেত্রী বলেন, আমি যতটুকু জানি তিনি (সিমি) বুদ্ধিমান মানুষ। তার মাথায় এসব কে ঢোকাচ্ছে কেন ঢোকাচ্ছে জানি না। তিনি যদি চলচ্চিত্রেই কাজ করতে চান তাহলে এসব নিয়ে কেন বিতর্ক সৃষ্টি করছেন। আর তিনি টাকা কোথায় দিয়েছেন না দিয়েছেন কী সব বানোয়াট কথা ছড়াচ্ছেন।
সিমির আরও দাবি করেন, বিষয়টি জানতে পেরে সমাধান করার আশ্বাসে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এগিয়ে আসেন হিরো আলম। এরপর চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয় তার কাছে। বলা হয়, অপু বিশ্বাসের পক্ষ থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে।
দর-কষাকষির পর চ্যানেলটি ফিরে পাওয়ার আশায় হিরো আলমকে ৫ লাখ টাকা দেন বাদী সিমি ইসলাম। টাকা পেয়ে চ্যানেলটি ফিরিয়ে দেন তারা। কিন্তু বাদী দেখতে পান, ইউটিউব চ্যানেলে থাকা তার ভিডিওগুলো নেই।
বিষয়টি অপু বিশ্বাস ও হিরো আলমকে জানান সিমি। কিন্তু তারা ভিডিওগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার নাম করে কালক্ষেপণ করেন। বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিতেও কথা বলা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সিমি।