Beanibazarview24.com
তামিম ইকবাল খান, আমাদের জাতীয় দলের ওপেনার তার বন্ধু মানুষ। বন্ধুর সাফল্যে তামিমও উচ্ছ্বসিত হয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, Tigers are alive in every sector of sport.
মানুষটার নাম অভিক আনোয়ার। তিনি দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন মটর কার রেসিং প্রতিযোগিতায়। যে বাংলাদেশে জ্যাম ঠেলে গাড়ি নিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে দ্বিগুণ সময়েও পৌঁছাতে মুশকিল হয়ে যায়, সেই দেশের এক বঙ্গসন্তান গাড়ির রেসে সবাইকে হারিয়ে জিতে নিয়েছেন বিজয়ের মুকুট।
মটর কার স্পোর্টস ইভেন্টে আন্তজার্তিক মঞ্চে এমন জয় আমাদের জন্য ভীষণ গর্বের এবং বাংলাদেশকে এমন উপলক্ষ এনে দেবার জন্যে অভিনন্দন হার না মানসিকতার মানুষ অভিক আনোয়ারকে।
এর আগে দুইবার তিনি এই প্রতিযোগিতায় চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিফল হয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু, হাল ছেড়ে দেননি। ফলে তিনবারের বেলায় একেবারে বাজিমাত করে ফিরেছেন, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীদের।
ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মোটর স্পোর্টস ইভেন্ট “দ্য ভক্সওয়াগন অ্যামিও কাপ” প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এরকম কোনো আন্তর্জাতিক আসরে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন অভিক আনোয়ার।
কার রেসিং খেলা হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এই খেলাটির প্রসার সেভাবে ঘটেনি। আমাদের দেশে নেই এই খেলার দক্ষ কোনো প্রশিক্ষক, নেই তেমন কোনো সুবিধা সম্বলিত আধুনিক রেসিং ট্র্যাকও। তবুও, শখের বসে এবং নিজের প্যাশনের জোরে কেউ কেউ এই খেলাটিকে ভালবেসে চর্চা করে যাচ্ছেন। অভিক আনোয়ার তেমনই একজন। তিনি এমনিতে পেশায় একজন গাড়ি ব্যবসায়ী।
শিক্ষাগত যোগ্যতাও বেশ সমীহ জাগানিয়া। কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে ইকোনমিকসে গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। মুন্সিগঞ্জ জেলার এই সন্তানের গাড়ির প্রতি ভালবাসা এবং প্যাশন তাকে এনে দিয়েছে আন্তজার্তিক সম্মান, যে সম্মানের সাথে জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের নামও।
ক্রিকেটার তামিম ইকবালও গর্বিত বন্ধুর সাফল্যে। কার রেসিং একটি ভিন্ন খেলা হলেও এই খেলাতেও একজন বাংলাদেশি দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে, যা ছুঁয়ে গেছে তামিমকেও। শুরুতেই তার কথা উল্লেখ করেছিলাম, তিনি লিখেছেন, “প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল মোটর স্পোর্টস ইভেন্টে বিজয়ী হওয়ায় অভিনন্দন আমার বন্ধু অভিককে। বাঘেরা খেলাধুলার প্রতি বিভাগেই জীবন্ত।”
অভিনেত্রী জয়া আহসান সম্পর্কসূত্রে অভিক আনোয়ারের স্ত্রী রিমিতা ফরিদের কাজিন। জয়া আহসানও অভিককে নিজের৷ ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি অভিককে শুভ কামনা জানিয়ে লিখেছেন, “এভাবেই গর্বিত করে যাও আমাদের।” সাফা কবিরও অভিক আনোয়ারের সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন একই সাথে তিনি তাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন ভিন্ন একটি কারণে। সাফা কবির তার জীবনের প্রথম গাড়িটি কিনেন অভিক আনোয়ারের প্রতিষ্ঠান কার হাউজ থেকে, সেখানে অভিক আনোয়ার গাড়ি সম্পর্কিত ব্যাপারে সাফা কবিরকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেন। সাফা কবিরের মতো আরো অনেকেই অভিক আনোয়ারের গাড়ি সম্পর্কিত পরামর্শে হৃদ্ধ হয়েছেন। তবে এবার সকলে অভিক আনোয়ারের গাড়ি রেসিং প্রতিযোগিতার সাফল্যে আনন্দিত হলেন।
অভিক আনোয়ার চান তার এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হোক অন্যরাও। একটি জাতীয় পত্রিকায় তিনি নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন এই বলে, “তৃতীয় বারের চেষ্টায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভীষণ ভাল লাগছে। এতে করে আগামীতে আরও সাফল্য পাবার জন্য আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল। সবচেয়ে বড় ব্যাপার- বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে পেরেছি। আশা করি আমাকে দেখে এদেশের নতুন প্রজন্মের কার রেসাররাও অনুপ্রাণিত হবে এবং আরও অনেক আন্তর্জাতিক সাফল্য বয়ে আনবে।”
যে পথ অচেনা ছিল, সে পথ চিনিয়েছেন অভিক। তার এই সাফল্য হোক আরো মটর স্পোর্টসে আরো অসাধারণ অনেক সাফল্যের ভিত্তি!
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.