Beanibazar View24
Beanibazar View24 is an Online News Portal. It brings you the latest news around the world 24 hours a day and It focuses most Beanibazar.

সিলেটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বিপদসীমার ওপরে তিন নদীর পানি







তিনদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে, আকস্মিক বন্যা। পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট। এমনকি ড্রেনের পানি নামতে না পারায় জলমগ্ন হয়ে গেয়ে সিলেট নগরের একাধিক এলাকাও। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।



শুক্রবার সকাল থেকে তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে বিভাগীয় শহরের সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়ে পড়ে।

এদিকে টানা বর্ষণে সিলেটের সুরমা, সারি এবং সুনাগঞ্জের সুরমা ও জাদুকাটা নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদীতে বিপদসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সুনামগঞ্জে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটেও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে শুক্রবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।



শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কানাইঘাটে সুরমা নদীতে ৭৩ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে ও জৈন্তাপুরের সারিঘাটে সারি নদীতে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুশিয়ারার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারেনি।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুরমা-কুশিয়ারা, সারি ও লোভাছড়ার পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে দুটি পয়েন্টে সুরমা ও সারি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। আর কুশিয়ারা এখনও বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও প্রতিটি পয়েন্টে পানি বাড়ছে।



জৈন্তাপুর প্রতিনিধি জানান, গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে পানিতে। এ ছাড়া উপজেলার সারি নদীতে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বিপদ সীমার ৪৭ সে.মি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জৈন্তাপুর শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে শুক্রবার বিকেলে থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।



স্থানীয়রা জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় উপজেলার নিজপাট, জৈন্তাপুর ও চারিকাটা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, স্কুল, মাদরাসা ও মসজিদ এবং বীজতলা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জনসাধারণ।

উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের মেঘলী, বন্দরহাটি, লামাপাড়া, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, মজুমদারপাড়া, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ি, তিলকৈপাড়া, বড়খেল, ফুলবাড়ী, ডিবিরহাওর, ঘিলাতৈল, হেলিরাই, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের মুক্তাপুর, বিরাইমারা, বিরাইমারা হাওর, লামনীগ্রাম, কাটাখাল, খারুবিল, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়, ১ নম্বর লক্ষ্মীপুর, ২ নম্বর লক্ষ্মীপুর, আমবাড়ি, ঝিঙ্গাবাড়ি, নলজুরী হাওর এবং চারিকাটা ইউনিয়নের বালিদাঁড়া, লালাখাল, রামপ্রসাদ, থুবাং, বাউরভাগ উত্তর, বাউরভাগ দক্ষিণ, পুঞ্জীসহ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।



এদিকে সারি, বড়গাং এবং নয়া গাং নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান সারি-গোয়াইন বেড়িবাঁধ প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি থামলে পানি নিচের দিকে প্রবাহিত হবে।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ফারুক হোসেন জানান, টানা বর্ষণে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষকের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি নির্নয় করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল জনান, বৃষ্টিপাতে উপজেলার সারি নদীসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির কোনো তালিকা আসেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.