Beanibazarview24.com
যেখানে রোগীর শেষ ভরসা, সেখানেই হতে হয় রোগীকে নিরাশা! বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্সদের রোগীর প্রতি অবহেলার অভিযোগ, বেশি টাকা চার্জ সর্বদা খবরে আসে। কিছু অভিযোগ তদন্ত পর্যন্ত গড়ালে তারপর আবার স্থবির হয়ে যায়। আর এর কারণেই শেষমেশ অভিযুক্তকারীরা বা ভুক্তভোগীরাও হতাশা ছাড়া কিছু পাওয়ার থাকে না।
এসব কারণে প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিশাল সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতি হচ্ছে রোগীর, তার পরিবারের এবং আগামী প্রজন্মের। গত রবিবার রোগীর পরিবারের অভিযোগে ও উপর মহলেরচাপে সিলেটের ওয়েসিস প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসায়অবহেলার কারণে তাহমিনা নামে এক চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার হাসপাতালের এক জরুরি বৈঠকেতাকে বরখাস্ত করা হয়।
প্রসূতির বড় ভাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুরুলতালুকদার বলেন, রুমি (প্রসূতি) ছোট বোন নরমালডেলিভারি জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা গাফিলতির কারণে ও সিজার করার পায়তারাকরায় রোগীর অবস্থা বেগতিক হয়ে যায়।শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিজারের সিদ্ধান্ত নিলেও ১০ঘন্টা পরনরমাল ডেলিভারি করা হয়।দেরিতে ডেলিভারির কারণেবাচ্চার ব্রেইন ও ফুসফুসে চাপ পড়েছে যার জন্য রোগীরস্বজনরা মর্মাহত।
পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুরুল তালুকদার ও তার বড়ভাই লন্ডন প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম তালুকদারের হস্তক্ষেপে উপর মহলের চাপে ওই চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রুমি বেগমের স্বামী আসাদুর রহমান আওয়াজবিডিকেজানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনিবিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. জামিলা বেগমের‘রেফারেন্সে’ ৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় সিলেটেরওয়েসিস হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির জন্য ভর্তি হন।শুরুতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিনা ও নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন রুমিকে।রাত বাড়ার সাথে প্রসব বেদনা আরো ঘনীভূত হতে থাকে।রুমির অভিভাবকরা নার্সদের বিষয়টি অবগত করেন।তাতে কোনো সাড়া দেননি তারা।শেষ পর্যন্ত রাত ১২টার পর ডাক্তারের খোঁজে রিসিপশনে যান রুমির স্বামী আসাদুর রহমান।
অনেক বার চেষ্টা করারপর রাত সাড়ে ৩টায় কেবিনে আসেন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিনা।এসময় রুমির অবস্থা আরো খারাপ ছিল। অবস্থা বেগতিক দেখে ব্যথা নিরোধক ঔষুধ দিয়ে যান ডা. তাহমিনা। ছটফট করতে করতে রাত কাটে রুমির।আরদেখা মিলেনি ডাক্তার কিংবা নার্সদের।
পরদিন ৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে নয়টায় ‘রাউন্ডে’ আসেনডা. জামিলা।তিনি রোগীর অবস্থা দেখে দ্রুত সিজারের পরামর্শ দেন।এবং এক ঘন্টার মধ্যে সিজারের সব প্রস্তুতিনিতে নির্দেশ দেন ‘ডিউটি’ ডাক্তার ও নার্সদের।কিন্তু একঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ফের অদৃশ্য হয়ে যান কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স।পরে ১২টার সময় সিজারের কথাথাকলেও নরমাল ডেলিভারি হয়। দেরিতে সন্তান ডেলিভারির কারণে বাচ্চার ব্রেইন ও ফুসফুসে চাপ পড়েছে এমন অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনরা।বর্তমানে নবাগত শিশু ও মা সিলেটের মা ও শিশু হাসপাতালে।
চিকিৎসাধীন আছেন।পরিস্থিতির স্বীকার রুমি বেগম জানান ৭ ও ৮ তারিখ আমার সাথে যে ঘটনা আর অবহেলা ঘটনা ঘটেছে এটা যেন পূনরাবূত্তি না ঘটে।এভাবে মানুষের জীবন নিয়ে অবহেলা করার কোন প্রকৃত ডাক্তারদের কাজ হতে পারেনা।মানুষ টাকা বেশী দিয়েও বেসরকারি হাসপাতালে যায় ভাল সেবা পাওয়ার জন্য, অবহেলা এবং বানিজ্যিক উদ্দেশ্যের স্বীকার হওয়ার জন্য নয়।তিনি এর সুস্ট বিচারদাবি করেন এবং কর্তব্যরত নার্সদের শাস্তি দাবি করেন।
এ ঘটনায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান মাওলানা হুছাম উদ্দিনচৌধুরী রোববার জরুরি বৈঠক ডাকেন বৈঠকে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে ‘ডিউটি’ ডাক্তার তাহমিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের সহকারি পচিালক ডাঃ, তাপস রাহুল,ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা।
এর আগে ওই প্রসূতির প্রসব বেদনা উঠলে প্রথমে ইবনেসিনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও দুই ঘন্টার উপর রোগীকে বসিয়ে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত রোগীর জন্য কোনোরুম বা সিট না দিতে পারায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওয়েসিস হাসপাতালে যেতে বলে।
এদিকে সদ্য পৃথিবীর আলো দেখা ফুটফুটে শিশুটির বড়মামা রোগী ও বাচ্চার প্রতি অবহেলার জন্য জরুরি ভিত্তিতেলন্ডনে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছেন।
সূত্রঃ সিলেট আজকাল
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.