প্রবাস
কানাডার অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন, বিপদে অস্থায়ী অনুমতি পাওয়া অভিবাসীরা
টরন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দর থেকে শহরে গেলে একজন উবারচালক ভালোই আয় করতে পারেন। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বর মিজান আলী’র ভাগ্যটাই খারাপ ছিল। কয়েক মাইল যাওয়ার পরই তাঁর উবার অ্যাপ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
ওই দিন মধ্যরাতেই মিজান আলী’র কাজের অনুমতি শেষ হয়ে যায়। কানাডার কর্তৃপক্ষ যেমন তাঁকে নোটিশ দিয়েছিল, উবারও তেমনি তাঁকে নোটিশ দিয়ে দেয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ২৩ বছর বয়স্ক মিজান আলী কানাডায় এসেছিলেন শিক্ষার্থী ভিসায়। এখন তাঁর বয়স ২৩। যে ভিসায় তিনি এসেছিলেন, তার আওতায় তিনি কাজ খোঁজার সুযোগ পেয়েছেন। কাজ পেলে স্থায়ীভাবে থাকারও সুযোগ আছে। ‘পড়াশোনা-কাজ-বসবাস’ নামে এ অভিবাসনসুবিধা পরিচিত।
কিন্তু অর্থনীতি চাঙা করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাখ লাখ মানুষকে কানাডায় স্বাগত জানিয়ে সরকার এখন নতুন পথে হাঁটতে চাইছে। দেশটিতে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, এই অভিবাসন বিভিন্ন ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে আবাসন, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে নতুন অভিবাসীদের জন্য সুযোগ-সুবিধার সংস্থান রাখতে হচ্ছে।
কানাডায় অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি–সংক্রান্ত যে বিশাল কর্মসূচি রয়েছে, চলতি বছর তাতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে মিজান এর মতো হাজারো অভিবাসী আইনি ঝামেলায় পড়ে গেছে।
কানাডায় স্থায়ী হওয়ার একটি পথ ছিল শিক্ষার্থী হিসেবে এসে গ্র্যাজুয়েশনের পর কাজ খুঁজে নেওয়া। অন্য একটি পথ হলো চাকরি নিয়ে দেশটিতে আসা। এই দুই পথেই সবচেয়ে বেশি অভিবাসী কানাডায় এসেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তাঁরা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন। আর সর্বশেষ পথটি হলো আশ্রয়প্রার্থী হয়ে দেশটিতে থাকা।
করোনাভাইরাস মহামারির পর কানাডায় শ্রমিকসংকটের কারণে দেশটির কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের অস্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার অনুমতি দেয়। দেশটিতে যে ৩০ লাখ মানুষের কোনো না কোনো ধরনের অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি আছে, তাদের ২২ লাখই এসেছেন গত দুই বছরে। কানাডার জনসংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ। এর ৬ দশমিক ৮ শতাংশই অস্থায়ী বসবাসকারী, যে হার ২০২২ সালে ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
কানাডায় এখনো যথেষ্ট কর্মসংস্থান হচ্ছে না। দেশটিতে বেকারত্বের হার ৬ শতাংশ। এ হার কমাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। আর অস্থায়ী ভিত্তিতে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বেশি—১৪ শতাংশ। বেশির ভাগ শহরে আবাসনের সংকট রয়েছে। আর স্বাস্থ্যসুবিধাও অনেক প্রদেশে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
সমালোচকেরা বলছেন, অস্থায়ী ভিত্তিতে বসবাসকারীরা পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছেন। অভিবাসনের প্রতি জনমতও দিনে দিনে তেতো হচ্ছে।
এর ফলাফল হিসেবে অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার চলতি বছরের শুরুতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর একটি হলো, শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা কমিয়ে আনা। আরেকটি পদক্ষেপ হলো, একটি কোম্পানি সর্বোচ্চ কতজন অস্থায়ী বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করতে পারবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া। এসব পদক্ষেপের মূল লক্ষ্যই হলো অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনা।
সরকারি এসব পদক্ষেপের ফলে যেসব অস্থায়ী শ্রমিকের কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়েছে বা শেষ হতে চলেছে, তাঁদের সেই অনুমতির নবায়ন না–ও হতে পারে। এরাই সবাই মিজান এর মতো অস্থায়ীভাবে কানাডায় বাস করছেন।
অভিবাসনে বিধিনিষেধ আরোপ করে আগামী মাসে সরকার আরও কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করবে বলে কথা রয়েছে।
কানাডার প্রতি ৫ জন বাসিন্দার ১ জন বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন। বেশ অনেক দিন ধরেই বিদেশি অভিবাসীদের জন্য কানাডার দরজা খোলা। শ্রমের সংকট কাটিয়ে ওঠা ও জনসংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দেশটি অভিবাসনকে উৎসাহিত করেছে। তবে পরিস্থিতি এখন পাল্টাচ্ছে।
জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কানাডিয়ান মনে করেন, সরকার খুব অল্প দিনের মধ্যে খুব বেশিসংখ্যক অভিবাসীকে সে দেশে আসার অনুমতি দিয়েছে। আগস্টে পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে, দুই-তৃতীয়াংশ কানাডিয়ানই মনে করেন যে সরকার বর্তমান অভিবাসন নীতিমালার কারণেই বিপুলসংখ্যক মানুষ কানাডায় আসার সুযোগ পাচ্ছেন।
অনেক অভিবাসী অবশ্য মনে করেন, তাঁদের অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, তাঁদের কানাডায় ডেকে আনা হয়েছে, কিন্তু কাজের অনুমতির নবায়ন না হলে তাঁদের চলে যেতে হবে—এমন পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
কানাডায় অভিবাসন নিয়ে এখন যা চলছে, তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কমলা হ্যারিসও তাঁর পার্টির আগের অবস্থানের চেয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। ইউরোপের অনেক দেশে অভিবাসনবিরোধী কট্টর রাজনৈতিক দল, এমনকি বর্ণবাদী দলের উত্থান হচ্ছে।
কানাডায় অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য মনে করেন, দেশটিতে আবাসন ও স্বাস্থ্য সুবিধার যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য অভিবাসীদের দায়ী না করে বরং এই দুই খাতে সরকারের স্বল্প বিনিয়োগের দিকে নজর ফেরানো দরকার।
পড়াশোনা-কাজ
কানাডার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা অভিবাসনের ক্ষেত্রে আরও বেশি নমনীয় নীতি নিতে চায়। এর মানে হলো, যখন শ্রমিক দরকার হবে, তখন অভিবাসী আসার সুযোগ দেওয়া হবে। দেশটির কর্মসংস্থানমন্ত্রী র্যান্ডি বয়সোনল্ট বলেন, ‘এটা অনেকটা অ্যাকর্ডিয়নের মতো কাজ করবে। যখন অনেক বেশি কর্ম খালি থাকবে, তখন আমরা বেশি করে মানুষ আনব। আর অর্থনীতির অবস্থা ভালো না থাকলে লোক আসা কঠিন হবে।’
কিন্তু মিজান এর মতো বিভিন্ন দেশের নাগরিক কাজের অনুমতি হারিয়ে এখন বেশ বিপদে রয়েছেন। তিনি ও তাঁর পরিবার ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় করেছেন অফিস ব্যবস্থাপনা ও অতিথিসেবা বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়ার জন্য। ভেবেছিলেন, এই ডিগ্রি তাঁকে কানাডায় একটি ভালো অবস্থান গড়তে সাহায্য করবে। কিন্তু এখন তাঁকে অন্য বিকল্পের কথা ভাবতে হচ্ছে।
মিজান আবার কলেজে ফিরে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। কিছু মানুষ বেআইনিভাবে বাস করছেন, আর ক্লিনার বা রেস্তোরাঁয় কাজ করে খুব অল্প বেতন নিয়ে জীবন চালাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়েন। অনেকে যোগ্য না হলেও আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে ১৩ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল এর অর্ধেক। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে বলে দেখা গেছে।
আন্তর্জাতিক
সুখবর দিল ইতালি, স্পন্সর ভিসায় শ্রমিক নেবে ৪ লাখের বেশি
ইতালির শ্রমবাজারে অস্থির সময় কাটলেও স্পন্সর ভিসা পাওয়ায় এগিয়ে আছেন বাংলাদেশিরা। দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের শক্ত অবস্থানই এর মূল কারণ বলে মনে করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
আগামী তিন বছর বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়ে চার লাখেরও বেশি শ্রমিক নেবে ইতালি সরকার। তবে, এই সুযোগ পাওয়ার জন্য যেতে হয় দীর্ঘ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।
অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে ইতালি সরকারের নেয়া কঠোর এই পদক্ষেপের ফলে এ বছর আবেদন জমার সংখ্যা কমেছে রেকর্ড সংখ্যক।
তবে ৩৬টি দেশের আবেদনকারীর তুলনায়, এবারও বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইমিগ্রেশন বিভাগ।
বৈধ উপায়ে ইতালি যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় খুশি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।
কঠোর নিয়মের পরও ইতালির স্পন্সর ভিসা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বাংলাদেশিরা। দেশটিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দৃঢ় অবস্থানই এর কারণ বলে মনে করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
আলোচিত
অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু
লিবিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় আট বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম। গত ১৮ ডিসেম্বর লিবিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র এ তথ্য জানান।
মুখপাত্র জানান, ১২১ অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা গত ১৮ ডিসেম্বর লিবিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। লিবিয়ার নৌবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৮২ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে এবং কমপক্ষে ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনার পর লিবিয়ার ত্রিপলিতে অবস্থিত আমাদের দূতাবাসের কর্মকর্তারা দ্রুততার সঙ্গে বেশ কয়েকটি সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন স্বেচ্ছাসেবক তাদের নিশ্চিত করেছেন যে উদ্ধারকৃতদের মধ্যে আটজন নিহতসহ মোট ৩২ জন বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছেন। বাকি অভিবাসীরা এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
জীবিতদের বর্তমানে ত্রিপলি থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত জাওয়াইয়া সিটিতে রাখা হয়েছে এবং মরদেহ পাবলিক প্রসিকিউশনের তত্ত্বাবধানে জাওয়াইয়া হাসপাতালে রাখা হয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে আরও বাংলাদেশি নাগরিক থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের পরিচয় নিশ্চিত করতে আমাদের ত্রিপলিতে অবস্থিত দূতাবাস কাজ করছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে দেখা করার পরে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। এ বিষয়ে ত্রিপলিতে অবস্থিত দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
আলোচিত
যুক্তরাজ্যে নো ভিসা ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে হাইকমিশনের বিবৃতি
যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের পাসপোর্টে বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) ফি ৪৬ পাউন্ড থেকে ৭০ পাউন্ডসহ কয়েকটি সেবার ফি বৃদ্ধি করায় ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে হাইকমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন। এদিকে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মাঝে নানা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার প্রেক্ষিতে এনভিআর এর ফি বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি বিবৃতি দিয়েছে।
গত ১১ ডিসেম্বর ইস্যুকৃত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাউন্সিলর সার্ভিস নানা পর্যালোচনার পর গত ৪ ডিসেম্বর কয়েকটি ক্ষেত্রে ফি বাড়ানো হয়েছে। ওই সার্ভিসগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের এনভিআর ফি ৪৬ পাউন্ড থেকে বাড়িয়ে ৭০ পাউন্ড করার বিষয়টিও রয়েছে।
২০১১ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই কাউন্সিলর সার্ভিস ফি বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হলেও সম্প্রতি তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে টুরিস্ট ও অন্যান্য ভিসা ফির সঙ্গে এনভিআরের ভিসা ফি তুলনা করে উল্লেখ করা হয়, এনভিআরের ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর আর এর ফি মাত্র ৭০ পাউন্ড। পক্ষান্তরে টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ছয় মাস এবং এর ফি ১০৫ পাউন্ড আর অন্যান্য ভিসার মেয়াদ ৫ বছর এবং তাদের ফি ৬৯৫ পাউন্ড। হাইকমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঢাকার ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের হাইকমিশনের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এজন্য তারা নানা পর্যালোচনার পর বাংলাদেশ সরকারের ভিসা ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আন্তরিকভাবে সুবিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
এনভিআরসহ চারটি সেবার ফি বৃদ্ধিতে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে ক্ষোভ বাংলাদেশ সেন্টার লন্ডনের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ হযরত আলী খানের কাছে ই-মেইল করে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের গভীর অনুভূতি, হতাশা, ক্ষোভ এবং উদ্বেগের কথা জানান হয়।
ই-মেইলে বলা হয়, একদিনের নোটিশে সরকার নো-ভিসার ফি বৃদ্ধি করেছে। এই পরিবর্তন, পর্যাপ্ত পরামর্শ বা প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় ছাড়াই করা হয়েছে। ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠায়, বিনিয়োগ ও হলিডে করে মাতৃভূমির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
অথচ এত দ্রুত নো ভিসার ফি বৃদ্ধির কারণে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে দেশের প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের সৃষ্টি করা হবে বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ সেন্টারের পক্ষ থেকে এই ফি বৃদ্ধি পুনর্বিবেচনা করে অবিলম্বে নো-ভিসার ফি ৪৬ পাউন্ড পুনর্বহাল করার জন্য জোরালো দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ হাইকমিশন নো ভিসা ফি বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানানো হয়। গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউকের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে এই সভা যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে একটি হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের চেয়ারপার্সন ব্যারিস্টার আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ খসরু খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস রিজিওনের সভাপতি ফখর উদ্দিন।
প্রবাস
নিউইয়র্কের ব্যস্ত সড়কের প্রবাসীর দোকানে ডাকাতি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় আবিদ জুয়েলার্স নামের ওই দোকানের সামনের কাচ ভেঙে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করছে নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি)। সরেজমিনে দেখা যায়, আবিদ জুয়েলার্সের সামনে পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দোকানের সামনে ভাঙা কাচ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দোকানসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে আবিদ জুয়েলার্সের মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা। পুলিশের পক্ষ থেকে দোকানের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনো তথ্যও জানানো হয়নি।
জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ অ্যাভিনিউ ও ৭৪ স্ট্রিটে ১৯টি সোনার দোকান রয়েছে। এ এলাকায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের ব্যাপক সমাগম হয়। সেখানে কেনাকাটা করতে আসা সজীব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তিন-চারজনের একটি দল দোকানটির কাচ ভাঙা শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে দোকানের সামনের অংশে রাখা স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় তারা।
আবিদ জুয়েলার্সের পাশের রেস্তোরাঁ জ্যাকসন ডাইনারের কর্মকর্তা আশিক রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শক্ত মোটা কাচের দেয়াল ভাঙার শব্দে আমরা আতঙ্কিত এবং হতভম্ব হয়ে পড়ি। যদিও ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ চলে আসে, তবে এ ধরনের ঘটনা নিউইয়র্ক শহরের নানা দিকে হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।’
প্রবাস
যুক্তরাজ্যে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়, গাছচাপায় সিলেটির মৃত্যু
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গাছ উপড়ে পড়ে কাহের হোসেন শাহিন (৫৫) নামের এক সিলেটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বার্মিংহাম শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে- ওই সময় শাহিন নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ি করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। তখন প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় শুরু হয় এবং রাস্তার পাশের একটি গাছ ভেঙে তার গাড়ির উপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
শাহিনের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সিকন্দরপুর গ্রামে। তিনি ছয় মেয়ে ও এক ছেলের জনক। তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও নিজ এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে সবসময় বেশ ভূমিকা রাখতেন। শাহিন ছিলেন বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর গরিব কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি।
এদিকে, তাঁর হৃদয়বিদারক এ মৃত্যুতে যুক্তরাজ্যে বাঙালি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রবাস
অবৈধ প্রবাসীদের সুখবর দিল সৌদি আরব
অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সুখবর দিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটিতে হুরুব বা পলাতক কর্মীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসী যারা কফিল (স্পন্সর) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হুরুব বা পলাতক কর্মীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তাদের জন্য সুখবর দিয়েছে দেশটির সরকার। এখন চাইলে তারা বৈধ হতে পারবেন। এই সুযোগ থাকছে ২০২৫ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
সম্প্রতি এ বিষয়ে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট মামুনুর রশিদ জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত যেসব প্রবাসী এই পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তারা আগামী বছরের জানুয়ারির ২৯ তারিখের মধ্যে বৈধ হতে পারবেন।
তিনি বলেন, হুরুব প্রাপ্তদের বৈধ হওয়ার এই প্রক্রিয়া কেবল সৌদি সরকারের অনুমোদন পাওয়া নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্পন্ন হবে। আর এর জন্য প্রবাসীদের নির্ধারিত কাগজপত্র ও প্রাসঙ্গিক তথ্য জমা দিতে হবে।
সকল প্রবাসীদের এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস। যারা এখনো বৈধ হওয়ার চেষ্টা করেননি, তাদেরকেও দ্রুত এই সুযোগ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
-
আন্তর্জাতিক8 months ago
বাংলাদেশিদের জন্য সহজ হচ্ছে ব্রাজিলের ভিসা
-
প্রবাস2 months ago
স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
-
প্রবাস2 months ago
কানাডায় শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের নতুন নিয়ম
-
আন্তর্জাতিক2 months ago
১৪ দেশের শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা
-
প্রবাস2 months ago
লন্ডনে সমকামী সেজে সিলেটী তরুণের স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা, অবশেষে…
-
প্রবাস1 month ago
কঠোর হচ্ছে ব্রিটেন, বিপাকে বাংলাদেশিরাও
-
আন্তর্জাতিক2 months ago
কানাডার নায়াগ্রা জলপ্রপাত থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে লাফ দিলেন মা
-
সিলেট1 month ago
মুনতাহার হাতে থাকা আপেলটিও খেতে দেয়নি তারা