Connect with us

বিশেষ প্রতিবেদন

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘মারকুটে’ নেত্রীরা কে কোথায়?

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘মারকুটে’ নেত্রীরা কে কোথায়?

পদ-পদবির সঙ্গে সঙ্গে এক সময় ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন ছাত্রলীগের নেতারা। পিছিয়ে ছিলেন না সংগঠনটির নেত্রীরাও। শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, হলে সিট-বাণিজ‍্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাণিজ‍্য, ব্ল‍্যাকমেইলসহ কোনো কিছুতেই পিছিয়ে ছিলেন না তাঁরা। এমনকি জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় বৈষ্যম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের মতো ন‍্যক্কারজন‍ক ঘটনাও তাঁরা ঘটিয়েছেন, হুমকি দিয়েছিলেন ‘৭ মিনিটে ঢাকা খালি’ করার। এ সবই করেছেন তারা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে।

তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দাপুটে, মারমুখী এসব নেত্রীদের। বেশিরভাগই চলে গেছেন আত্মগোপনে, কয়েকজন পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে, কেউ বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন দল ও সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ক্ষমতাধর কাউকে। একাধিক সূত্রে খবর নিয়ে জানা গেছে, বেশ কয়েকজনের বর্তমান অবস্থান ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে।

৭ মিনিটে ঢাকা ক্লিয়ারের ‘ঘোষক’ আতিকা আত্মগোপনে

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনের হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলে যেতে বাধ‍্য করা, অন‍্যথায় মারধরের শিকার হওয়ার ভয়ে আতিকা ছিলেন শিক্ষার্থীদের এক আতঙ্কের নাম। বগুড়ার মেয়ে আতিকা ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের খুব ঘনিষ্ঠজন। এর সুবাদে ক‍্যাম্পাসে তাঁর ছিল সীমাহীন ক্ষমতা। কমিটি বাণিজ্য, সচিবালয়ে তদবিরসহ নানা অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। সাদ্দাম-ইনান যে কয়টি কমিটি ঘোষণা করেছেন, সেখানে লেনদেন বাণিজ‍্যের অভিযোগ রয়েছে আতিকার বিরুদ্ধে।

আতিকার ঔদ্ধত‍্য ছিল ১৫ জুলাই রাতেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘৭ মিনিটে ঢাকা ক্লিয়ার’-এর হুমকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ‍্যে আতঙ্ক তৈরির অপচেষ্টা করেন তিনি। এরপর আর শেষ রক্ষা হয়নি। ১৭ জুলাই রাতে ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি ও হালকা উত্তম-মধ‍্যম দিয়ে আতিকাসহ ছাত্রলীগের সাত নেত্রীকে রোকেয়া হল থেকে বের করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর পরই আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তাঁকে আর দেখা যায়নি জনসম্মুখে।

ইডেনে গরম পানি নিক্ষেপকারী নেত্রীদের খোঁজ মিলছে না

ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ইডেন কলেজের বকুলতলায় আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি নুজহাত ফারিয়া রোকসানা, আয়েশা সিদ্দিকা মীম, সুষ্মিতা বাড়ৈ, রুনা আক্তার সুপ্তি, আর্নিকা তাবাসসুম স্বর্ণা, লিমা ফেরদৌস, আশরাফ লুবনা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন নাহার জ্যোতি ও ফারজানা ইয়াসমীন (লুবনা নীলা)। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হয়ে ৩ আগস্ট গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। শেখ হাসিনার পালানোর পর তাঁরাও গা-ঢাকা দেন।

ইডেনের হলে ৩৮ কক্ষের ‘দখলদার’ রিভা ভারতে

ইডেন মহিলা কলেজের ছয়টি হলের ৩৮টি কক্ষের অঘোষিত মালিক ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি রিভা। এসব কক্ষের প্রতিটিতে আটজন করে শিক্ষার্থী থাকতেন। অভিযোগ আছে, তিনি প্রতি মাসে প্রতিটি সিট থেকে দুই হাজার টাকা করে ‘ভাড়া’ নিতেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। সে হিসাবে প্রতি মাসেই তার ছয় লাখ টাকা সিট-বাণিজ‍্য থেকে অবৈধ আয় হতো।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, রিভা সব সময় থাকতেন মারমুখী অবস্থানে। পান থেকে চুন খসলেই সাধারণ শিক্ষার্থী বটেই, রক্ষা পেতেন না নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও।

১৬ জুলাই মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে রিভাকে হল ছেড়ে পালাতে দেখেছেন শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিভার ঘনিষ্ঠ আরেক নেত্রী এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, বর্তমানে রিভা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।

গ্রিল চুরি করে তদন্তের মুখে পড়া প্রভাতী বিয়ের পিঁড়িতে

ঘরকন্নায় মন দিয়েছেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স (হোম ইকোনমিক্স) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা আক্তার প্রভাতী। গত সেপ্টেম্বর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। বর্তমানে সংসারে মনোযোগী হতে চান তিনি বলে এই প্রতিবেদকে সম্প্রতি জানিয়েছেন তিনি। তবে ‘বিপদে আছি’ উল্লেখ করে তদন্ত নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

গ্রিল চুরির ঘটনায় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শারমিন সুলতানা সনিও জড়িত ছিলেন, কলেজে তদন্তও চলছে তার বিরুদ্ধে। কলেজের দরজা-জানালা ও দেয়ালের ওপরের জন্য সংরক্ষিত গ্রিল চুরি করে বেচে দেওয়ার অভিযোগে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি।

সনি-প্রভাতী ক‍্যাম্পাসে এতেটাই দাপুটে ছিলেন যে, চাঁদা না পেয়ে ক‍্যাম্পাসে এক সময় শেখ হাসিনা হলের উন্নয়ন কাজও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে তাদের দুজনের সঙ্গে আপসরফা করে কাজ শুরু করেন ঠিকাদাররা। হলে সিট বাণিজ্য, কেন্টিন থেকে নিয়মিত মাসোহারা এবং হলে ব্রডব্র‍্যান্ড লাইন সরবরাহে আইএসপি কোম্পানিও তাঁদের মাসিক চাঁদা দিত বলে অভিযোগ রয়েছে।

ফেরারি আসামি হয়ে যুক্তরাজ্যে শান্তা

নিজ সংগঠনের কর্মীদের মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়ে আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জেসমিন শান্তা। মারধরে আহত রোকেয়া হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বী এ ঘটনায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশ ব‍্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শান্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে শান্তার মারধরের শিকার হন তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আসাদুজ্জামান সোহেল। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয় এলাকায় ভাসমান দোকান বসিয়ে মাসোহারা তুলতেন তিনি। ২০২১ সালে ১২ অক্টোবর প্রক্টরিয়াল টিম এসব ভাসমান দোকান তুলতে গেলে বাধা দেন তিনি। তখন পিছু হটে বিশ্ববিদ‍্যালয় প্রশাসন।

শান্তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা যায়, তিনি এখন যুক্তরাজ‍্য থেকে নিজের ছবি পোস্ট করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে সরব রয়েছেন।

ছাত্রলীগের কমিটি বাণিজ‍্যের ‘ক‍্যাশিয়ার’ নিশি ফেসবুকে সরব

ছাত্রলীগের ক্ষমতাধর নেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন বেনজির হোসেন নিশি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগের সভাপতি। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে নিশির ক্ষমতা ছিল অসীম। অভিযোগ আছে, লেখক ভট্টাচার্য্যের কমিটি বাণিজ‍্যসহ চাঁদাবাজি থেকে প্রাপ্ত অর্থের চার ক্যাশিয়ারের একজন ছিলেন তিনি।

সাবেক সংসদ সদস্য ও শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সাইফুজ্জামান শিখরের জেলার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে সংগঠনের তৃণমূলেও তিনি প্রভাব বিস্তার করতেন। নিজ সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মো. এহসানুল হক ইয়াসিরকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পিটিয়ে আহত করেছিলেন। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়।

এখানেই শেষ নয়। নিশির হামলার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন রোকেয়া হলের নেত্রী ফাল্গুনী দাস তন্বী। তন্বীর মামলায় এখনও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলছে নিশির বিরুদ্ধে।

আত্মগোপনে থাকা নিশি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে সক্রিয়, অজ্ঞাত স্থান থেকে দিয়ে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধী নানা পোস্ট। সম্প্রতি আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে ব্যঙ্গ করে এক পোস্টে তিনি লিখেন ‘হায় আল্লাহ, আমি যদি কোনোদিন প্রেমিক হওয়ার সুযোগ পেতাম, আমি জানি না কখনও হতে পারব কি না! যদি হতাম, জীবন দিয়ে প্রেম করতাম, খালি মেয়েদের হৃদয় জয় করার জন্য।—জনৈক ছাত্রীবান্ধব শিক্ষক, ট্রিপল বিয়ে।’

ব্ল্যাকমেইলার-খ্যাত সুপ্তি ভ্রমণে কাটাচ্ছেন সময়

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুনা আক্তার সুপ্তি একই কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক আর্নিকা তাবাসসুম স্বর্ণাকে নিয়ে এক ‘ব্ল‍্যাকমেইলিং’ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। অভিযোগ আছে, তারা ব্যাংকার, আওয়ামী লীগের মাঝারি শ্রেণির নেতা, প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য করে পরে তাদের ব্ল‍্যাকমেইল করতেন।

মাস ছয়েক আগে একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ব্ল‍্যাকমেইল করে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ আছে সুপ্তি-স্বর্ণার বিরুদ্ধে। এ ব‍্যাপারে ফোনে এনটিভি অনলাইনের কাছে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তবে তিনি তাঁর সহযোগী স্বর্ণাকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, আমি শুনেছি স্বর্ণা এটা করেছে, টাকাও নিয়েছে।’

সুপ্তি এখন ঘোরাঘুরিতে সময় কাটাচ্ছেন, ছবি পোস্ট করছেন ফেসবুকে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে জানান, নওগাঁয় নিজের বাড়িতেই আছেন তিনি।

সরকারবিরোধী পোস্টে সরব পলাতক স্বর্ণা

সুপ্তির মতো একই অভিযোগ ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আর্নিকা তাবাসসুম স্বর্ণার বিরুদ্ধে। তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ থাকলেও সক্রিয় আছেন ফেসবুকে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধী নানা পোস্ট দিচ্ছেন স্বর্ণা। সম্প্রতি এক পোস্টে তিনি লেখেন ‘পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খান বলেছিলেন-দেশ দিয়ে গেছি কিন্তু এই দেশে যেই বীজ ছেড়ে দিয়ে গেছি, তারা ৫০ বছর পরে হলেও পাকিস্তানের হয়ে আওয়াজ দেবে! রক্ত কথা বলে, রক্ত কথা বলছে!’

হলে ফাও খাওয়া ফরিদা পারভীন আত্মগোপনে

ঢাকা বিশ্ববিদ‍্যালয় কুয়েত মৈত্রী হল’ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফরিদা পারভীন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ পান। সর্বশেষ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ করছিলেন তিনি। তবে সেই আশা পূরণ হয়নি। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার সুপারিশে ঢাকা সিটি কলেজে প্রভাষক হয়েছিলেন তিনি। তবে ৫ আগস্টের পর তিনি সেই চাকরি হারান, চলে যান আত্মগোপনে।

কুয়েত মৈত্রী হলের সাবেক এই দাপুটে নেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। হলের ক‍্যান্টিন থেকে ফাও খাওয়া, হলের পার্লার থেকে চাঁদাবাজি ও রূপচর্চা করে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তাঁকে চাঁদা না দিয়ে হলের কোনো উন্নয়নকাজ হতো না, আইএসপি পারত না হলে ইন্টারনেট সেবা দিতে। প্রতি মাসে হলের ডাইনিং থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা নিতেন বলেও অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।

নিয়োগ বাণিজ্যের হোতাদের খবর নেই স্বজনদের কাছেও!

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রাজিয়া সুলতানা কথা, কোহিনুর আক্তার রাখি ও খাদিজা আক্তার উর্মি, উপমুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক রনক জাহান রাইন ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের শক্তিতে। তাঁদের নাম ভাঙিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে নিতেন সুবিধাও। করতেন টেন্ডারবাজি ও নিয়োগবাণিজ্য। ৫ আগস্টের পর তাঁরা সবাই আত্মগোপনে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা রিপা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ জুয়েলকে তুরি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ভাইরাল হন। তিনি এখন কোথায়—বলতে পারেন না তাঁর স্বজন ও পরিচিতজনরাও।

শেলীর শাসনে চলত বদরুন্নেছা কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উপপরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সেলিনা আক্তার শেলী ছিলেন কলেজের অঘোসিত শাসক। তাঁর কথায় যেন চলত ক্যাম্পাসের সব কিছু। কেউ কথা না শুনলেই নেমে আসত নির্যাতন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিল-মিটিংয়ে যেতে বাধ্য করা, কেউ যেতে না চাইলে নির্যাতন করা ছিল তাঁর নিয়মিত কাজ। ক্যান্টিনে খাবারের প‍্যাকেজের নির্ধারিত মূল‍্য ৮০০ টাকা থাকলেও শেলীর কথায় নেওয়া হতো এক হাজার টাকা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ২০০ টাকা আত্মসাৎ করতেন তিনি। হলের সিট বাণিজ‍্যেও নেতৃত্ব দিতেন তিনি। নতুন শিক্ষার্থীদের হলে উঠাতে সিটপ্রতি নিতেন ৭ থেকে ১৩ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না।

পেটুয়া সাইমুনের খবর জানেন না কেউই

বদরুন্নেসায় সেলিনা আক্তার শেলীর আরেক সহযোগী সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাহাড়সম। হলে সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থীদের মিছিল-মিটিংয়ে যেতে বাধ্য করা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চাঁদা না দেওয়া ও কেক কাটার সময় উপস্থিত না হওয়ায় কয়েক শিক্ষার্থীর কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর ও পরে সেই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে গণমাধ‍্যমের নজরে পড়েন সাইমুন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ‍্য হন তিনিসহ ছাত্রলীগের নেত্রীরা। বদরুন্নেছায় ছাত্রলীগের নেত্রীদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের এতটাই ক্ষোভ ছিল যে তাদের না পেয়ে তাদের দুই সহযোগীকে ক‍্যাম্পাসে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন আন্দোলনকারীরা।

ধরা পড়ে কারাগারে আরিয়ানা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফি শাহরিন আরিয়ানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে নির্যাতন করেছেন। শুধু তাই নয়, আন্দোলনকারীদের তালিকা করে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠাতেন। গত ১৭ অক্টোবর ক‍্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন তিনি।

বিশ্ববিদ‍্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান সংবাদিকদের বলেছেন, আরিয়ানা পরীক্ষা দিতে গেলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তাঁর সঙ্গে একই হলে বসে পরীক্ষা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় যেন ‘মব জাস্টিস’ না হয়, সেজন্য পুলিশের হাতে তাঁকে সোপর্দ করা হয়।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, আরিয়ানার বিরুদ্ধে থানায় মামলা আছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Continue Reading

আলোচিত

ট্রেনে ডাকাতি শেষে অভিনেত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব ডাকাতের!

ট্রেনে ডাকাতি শেষে অভিনেত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব ডাকাতের!
ট্রেনে ডাকাতি শেষে অভিনেত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব ডাকাতের!

টালিউডের উজ্জ্বল নক্ষত্র রিমঝিম মিত্র। গত দুই দশক ধরে বাংলা সিরিয়াল জগতকে সমৃদ্ধ করছেন তিনি। বর্তমানে তাকে দেখা যাচ্ছে নানা সিরিয়ালে। তবে অধিকাংশই তিনি ভ্যাম্পের চরিত্রে অভিনয় করছেন। অর্থাৎ খলনায়িকার চরিত্রে।

এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করা রিমঝিমের কাছে এক চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। তবে আজও অবিবাহিতই থেকে গেছেন রিমঝিম। সংসার পাতেননি তিনি।

প্রিয়জন বলতেই তার মা। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চলে বাড়ি রিমঝিমের। একটি অ্যাপার্টমেন্টে মাকে নিয়ে থাকেন রিমঝিম। সেই রিমঝিমের কাছেই একবার এসেছিল বিয়ের প্রস্তাব। এবং সেই প্রস্তাবে এসেছিল ডাকাতের থেকে।

কেবল অভিনয় নয়। অভিনেত্রী রিমঝিম দুর্দান্ত ভালো নাচেন। অভিনেত্রী মমতা শঙ্করের ব্যালেট ট্রুপে নিয়মিত নৃত্য পরিবেশন করতেন তিনি। মমতা শঙ্কর ব্যালট ট্রুপের সঙ্গে এ রাজ্যে, ও রাজ্যে নাচের অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। তেমনই এক নাচের অনুষ্ঠান করতে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঞ্চালিত একটি টকশোতে এসেছিলেন তিনি। সেই টক শোতে তিনি জানিয়েছিলেন, ডাকাতের থেকে বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন।

রিমঝিম বলেন, ‘স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমরা। সামনে দেখি বেশকিছু সুদর্শন দেখতে ছেলে রয়েছে। আমাদের তখন কিশোরী বয়স। সবেমাত্র ছেলেদের দেখে মোহিত হচ্ছি। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা সেই সুপুরুষদের দেখে আমাদের মন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। তারপর লোডশেডিং হয় স্টেশনে। আলো ফিরতেই দেখি, ছেলেগুলো উধাও। আমরা যথারীতি ট্রেনের কামরায় উঠে পড়ি। মম মাসি, অর্থাৎ মমতা শঙ্কর তার নাচের দলের মেয়েদেরকে একসঙ্গে নিয়ে বসে ছিলেন একটি কামরায়। হঠাৎই মাঝপথে ট্রেন থেমে যায়। আমি এবং আমার এক বান্ধবী টয়লেটে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ট্রেন থেমে গেছে। টয়লেটের বাইরে বেরিয়ে দেখি মম মাসির স্বামী এবং আমাদের নাচের দলের একজন আসছেন হন্তদন্ত হয়ে। তার মাথা থেকে গলগল করে রক্ত ঝরছে। জিজ্ঞেস করেন, ওরা আসেনি তো এখানে?’

‘তাকে দেখেই চমকে গেলাম। তিনি আমাদের এসেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘ওরা আসেনি তো এখানে?’ আমি পাল্টা প্রশ্ন করলাম, ‘ওরা মানে কারা?’ তিনি জানালেন, ট্রেনে একদল ছেলে আমাদেরকে দেখে মোহিত হয়েছিল। তারা সবাই ডাকাত। ট্রেন থামিয়ে ডাকাতি করছিল।’

রিমঝিম আরও বলেন, ‘এসময় মম মাসির স্বামী আমাদের দুজনকে বাথরুমেই ঢুকে যেতে বলেন। বাইরে থেকে শুনতে পাই ছেলেগুলো এসে বলছে, নাচের মেয়েগুলো কোথায়। ওদের ডাক। ওদেরকে বিয়ে করব, সংসার করব।’

Continue Reading

আলোচিত

ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান

ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান
ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ্যে এনেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসকে বেছে নেওয়াতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের জোর আপত্তি ছিল বলে মন্তব্য করতে দেখা গেছে আসিফ মাহমুদকে। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) ভিডিওটি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

‘ক্যান্টনমেন্টের ইন্টারভেনশনের ট্রেইলর-১’ শীর্ষক ২৮ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তাটি গত ১৫ মার্চ ধারণ করা হয়েছিল বলে ওই পোস্টার মন্তব্য ঘরে জানান তিনি। 

ভিডিওতে আসিফ বলেন, সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটোটা (আপত্তি) ছিল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন? হোয়াই নট এনি আদার পারসন (অন্য কেউ কেন নয়)? ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন কনভিক্টেড পারসন (দণ্ডিত ব্যক্তি)। কনভিক্টেড পারসন কীভাবে আসলে একটা দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাকে আরও বলতে দেখা যায়, সেনাপ্রধান প্রশ্ন রাখেন, আওয়ামী লীগকে একটা লোক একেবারেই দেখতে পারছে না। বাংলাদেশে তো আল্টিমেটলি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। এই ৩০-৪০ শতাংশের মানুষের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে কি একটা লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত?

উল্লেখ্য, এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ তুলে অবিলম্বে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ। 

শুক্রবার দিবাগত রাতে (২১ মার্চ) এক ফেসবুক পোস্টে এনসিপির এ নেতা লিখেছেন, আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোনো সুযোগ নাই, বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।

তিনি লিখেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০-এ। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদেরকে বলা হয়—ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে—তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা না-কি ভালো। ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লিখেন, আমাদেরকে আরো বলা হয়—‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে। 

হাসনাত বলেন, আমরা তৎক্ষণাৎ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করি এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করতে বলি।

এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক।

হাসনাত আরও লিখেন, আলোচনার এক পর্যায় বলি—যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই, সেই দলকে আপনারা কীভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, ‘ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডম অ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ইনক্লুসিভ ইলেকশন হবে না।’

উত্তরে আমরা বলি, আওয়ামী লীগের সাথে কোনো ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।

এরপর ওই মিটিং সেখানেই অসমাপ্ত রেখে তাদের চলে আসতে হয় বলে উল্লেখ করেন হাসনাত।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময়ও তাদের ওপর নানা ধরনের চাপ দেওয়া হয়েছে। এনসিপির এ নেতা বলেন, আমরা ওসব চাপে নতি স্বীকার না করে আপনাদের তথা জনগণের উপরেই আস্থা রেখেছি। আপনাদের সাথে নিয়েই হাসিনার চূড়ান্ত পতন ঘটিয়েছি। 

হাসনাত এরপর লিখেন, এ পোস্ট দেওয়ার পর আমার কী হবে আমি জানি না। নানামুখী প্রেশারে আমাকে হয়তো পড়তে হবে, হয়তো বিপদেও পড়তে হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করার সুযোগ নাই।

তিনি আরও লেখেন, আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই, তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারব।

Continue Reading

আলোচিত

অস্ট্রেলিয়ার ভিসা নিতে যেতে হবে না দিল্লি, পাওয়া যাবে ঢাকাতেই

অস্ট্রেলিয়ার ভিসা নিতে যেতে হবে না দিল্লি, পাওয়া যাবে ঢাকাতেই

এখন থেকে অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় অবস্থিত তাদের হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রসেস করবে। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে এক ফোন আলাপে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তথ্য জানান। এ সময় তিনি উপদেষ্টা পরিষদকে জানান যে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ভিসা নিতে যেতে হবে না দিল্লি, পাওয়া যাবে ঢাকাতেই
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্কের বাংলাদেশ সফরের সময় তার কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন।

এর আগে, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নয়াদিল্লি থেকে প্রসেস করতো।

Continue Reading

আলোচিত

এক রাতেই হারিয়ে গেলো আস্ত একটা নদী

এক রাতেই হারিয়ে গেলো আস্ত একটা নদী

জাম্বিয়ার মানচিত্র থেকে এক রাতেই হারিয়ে গেলো আস্ত একটা নদী। ভাবতে অবাক লাগলেও বাস্তবেই হয়েছে এ ঘটনা। দেশটির বাণিজ্যিক নগরী কিতওয়ায় কপার খনির বাঁধ ভেঙে কাফুয়ে নদীতে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত বর্জ্য। নদীর পানি নিমিষেই শুকিয়ে যায়।

শনিবার (১৫ মার্চ) সংবাদ সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

এ প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, চিনা মালিকানাধীন একটি কপার খনির ড্যাম ধসে পড়ে। এতে থাকা প্রায় ৫০ মিলিয়ন লিটার অ্যাসিডযুক্ত বিষাক্ত বর্জ্য ও ভারী ধাতু মিশে যায় খনির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাফুয়ে নদীতে।

টেইলিং অ্যান্ড মাইন প্রকৌশলী হলি পলা বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই সর্বনাশ হয়ে গেছে। ৩০ মিনিটের মাঝে পুরো ড্যাম ধসে বিষাক্ত এসিড নদীর পানির সাথে মিশে যায়। এটা ছিলো একটা দুঃস্বপ্নের মতো।

কাফুয়ে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষিকাজ, মাছ ধরার সাথে জড়িত কৃষকরা এখন শুধু হা-হুতাশ করছেন। হাজার হাজার মৃত মাছ দূষণের ফলে ভেসে উঠেছে। ভূট্টা এবং চীনা বাদামের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।

পরিবেশবিদ চিলেকওয়া মাম্বা বলেন, এটা পরিবেশগত বিপর্যয়। খনির বিষাক্ত এসিড নদীর পানির সাথে মিশে যাওয়ায় তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষাক্ত বর্জ্য মাটির সাথে মেশায় নষ্ট হয়েছে কৃষকের ফসল, মারা গেছে জেলেদের লাখ টাকার মাছ। শুধু তারাই না বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জীবনও সংকটাপন্ন।

মাছ ব্যবসায়ী জুলিয়েট বুলায়া বলেন, ড্যাম ধসের পর আমার পুকুরে চুনের মতো বর্জ্য প্রবাহিত হতে দেখেছি। মরে ভেসে উঠেছে সব মাছ। আমি কেবল অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, আমার বিনিয়োগের এত টাকার এখন কি হবে?

ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর মেরামত করা হয়েছে ড্যামের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ। জাম্বিয়ার মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগ কাফুয়ে নদী থেকে ধরা মাছ বাসিন্দাদের না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

Continue Reading

আলোচিত

কুরআনে হাফেজ জমজ ভাই, একজন বুয়েটে অন্যজন চুয়েটে

কুরআনে হাফেজ জমজ ভাই, একজন বুয়েটে অন্যজন চুয়েটে

কুরআনের হাফেজ জমজ দুই ভাই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বুয়েট ও চুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সুযোগ পেয়েছেন হাফেজ মো. মুজাহিদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন হাফেজ মো. আজহারুল ইসলাম।
এ দুই ভাই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার তারা উপজেলার ৬ নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের হাফেজ বাড়ির হাফেজ মো. আবুল কাশেমের ছেলে।

চার ভাইয়ের মধ্যে মুজাহিদুল ইসলাম এবং আজহারুল ইসলাম সবার ছোট। এরইমধ্যে বড় ভাই মোস্তফা আমির ফয়সাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স সম্পূর্ণ করেছেন। তারপরের জন চট্টগ্রামে থেকে এমবিএ করছেন।

তাদের বাবা মো. আবুল কাশেম জানান, তার জমজ দুই সন্তান ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদরাসা থেকে কুরআন মুখস্থ শেষে হাজীগঞ্জ আহমদিয়া কামিল মাদরাসা থেকে গতবছর দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। পরে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়।

মেধার দিক থেকেও তারা অভিন্ন। ফলে এই কলেজ থেকে জিপিএ -৫ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। তারপর তারা দুজনেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা যুদ্ধে অংশ নেন। এতে একপর্যায়ে মো. মুজাহিদুল ইসলাম বুয়েটে এবং আজহারুল ইসলাম চুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তাই তারা চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তির যোগ্যতায় সাফল্য অর্জন করেন।

Continue Reading

আলোচিত

নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়লেন জুলহাস মোল্লা

নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়লেন জুলহাস মোল্লা

নিজের তৈরি আরসি বিমানে আকাশে উড্ডয়ন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি উড়ায়। এর আগে সোমবার যমুনার চরে তার বিমানটি প্রায় ৫০ ফুট ওপরে উঠতে সক্ষম হয়।

জুলহাস মোল্লার বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় হলেও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে তার পরিবার বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটগর তেওতা এলাকায় বসবাস করছে।

ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। ২০১৪ সালে জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। তবে অর্থাভাবে পড়ালেখা আর চালিয়ে যেতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন ২৮ বছরের এই তরুণ।

জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা বলেন, জুলহাস ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিস কাটাকাটি করে কিছু একটা বানাতে চাইতো। জিজ্ঞেস করলে বলতো, একদিন দেখবে কী বানিয়েছি। গত চার বছর ধরে সে বিমান বানিয়ে উড্ডয়নের চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু সফল হতে পারছিল না। তবে এবার সফল হয়েছে। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, জুলহাসের গবেষণা কাজে সরকার সহযোগিতা করবে। প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে তাকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।

Continue Reading

Trending