কানাডার ব্যস্ততম প্রবাস জীবনের সময়টা একটু ভিন্ন ধরনের। এসময়ে গাছের পাতা ঝরে হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। সম্পূর্ণ নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ। না শীত না গরম। কিন্তু শিশু-কিশোরদের স্কুল শুরু হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অনেকে বেড়াতে যেতে পারেন না।
তাই তো ঋতু বৈচিত্র্যের আবাহনে এসময়ে ছুটির দিনগুলোতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হয়ে যান প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকনে। কেউ আবার ছোটেন পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার সদাই করতে।
আরও পড়ুন:
- ভিনগ্রহীদের সন্ধান মিলেছে, তবে তারা মানুষ নয়!
- ধার্মিক ছেলে পেলে অভিনয় ছেড়ে সংসারে মন দেবেন প্রিয়াঙ্কা
- এই প্রথম গাড়ির গিয়ার এলো মোটরসাইকেলে
- ৩১ বছর পর দেশে ফিরছেন রেমিট্যান্সযোদ্ধা আবু বকর
- স্থায়ী হওয়ার আশায় কানাডায় পাড়ি দিয়ে হতাশায় ডুবছেন বাংলাদেশিরা
কর্ম ব্যস্ততাময় প্রবাস জীবনে সপ্তাহ শেষে স্বামী অথবা স্ত্রী কারো না কারো কাজ থেকেই যায়। তবে অনেকেই পরিবারকে সময় দেওয়া ও সংসারের গ্রোসারি কেনাকাটা সম্পন্ন করতে রোববার ছুটি নিয়ে থাকেন।
কানাডার ক্যালগেরির বাংলাদেশি স্টোরগুলোতে শনি বা রোববারে তুলনামূলক বেশি ভিড় দেখা যায়। গ্রোসারি স্টোরের মালিকরাও অপেক্ষায় থাকেন শনি বা রোববারের জন্য। কারণ, এই দিন দুটিতেই ক্রেতাদের সমাগম বেশি ঘটে।
সরেজমিনে কানাডার বিভিন্ন গ্রোসারি স্টোর ঘুরে দেখা গেছে, রয়েছে বাংলাদেশি পণ্যের বিশাল সমাহার। প্রবাসী বাঙালিরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী সব ধরনের পণ্যই এসব গ্রোসারি স্টোরে পাচ্ছে। এর মধ্যে দেশীয় পরোটা, বিভিন্ন ধরনের রান্নার মসলা, প্যাকেটজাত ফ্রোজেন সিঙ্গারা, আলুপুরি, ডালপুরি, বিভিন্ন ধরনের চিনিগুড়া, কালিজিরা চাল, আটা, ময়দা, দই ও মিষ্টি থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যই এখন প্রবাসী বাঙালিদের হাতের নাগালে।
শুধু তাই নয়, বহু সংস্কৃতির দেশ কানাডায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অন্য কমিউনিটির ক্রেতারাও বাংলাদেশি পণ্য কিনছেন। এর অন্যতম একটি কারণ, বাংলাদেশি গ্রোসারি স্টোর ছাড়াও কানাডার বিভিন্ন গ্রোসারি স্টোর বাংলাদেশি পণ্যে সয়লাব।
বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি যেমন– প্রিমিয়াম, প্রাণ, রাঁধুনী কোম্পানিও প্রবাসীদের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কানাডায় রপ্তানি করছে।
ক্যালগেরির বাংলাবাজার গ্রোসারি স্টোরে এ প্রতিবেদকের কথা হয় প্রবাসী বাংলাদেশি আশরাফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম প্রথম বাংলাদেশ থেকে আসার পর খুব খারাপ লাগত বাংলাদেশি পণ্যের জন্য। আর এখন বাংলাদেশি গ্রোসারি স্টোরে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন বাংলাদেশেই আছি। প্রিমিয়ামের কালিজিরা, চিনিগুড়া চাল ও তাদের বিভিন্ন ধরনের রান্নার মসলা এবং নাস্তা করার জন্য দেশি পরোটা অতুলনীয়। আর সন্ধ্যায় নাস্তার জন্য সিঙ্গারা, ডালপুরি আর আলুপুরির কথা না বললেই নয়। প্রিমিয়ামের এ পণ্যগুলো যেন দেশে না থাকার অভাব পূরণ করে।
ছুটির দিনে বাজার করতে আসা আরেক প্রবাসী বাঙালি শাকিল তায়েব বলেন, আমি পরিবার নিয়ে কানাডায় নতুন এসেছি। কিন্তু গ্রোসারি স্টোরগুলোতে এলে মনে হয় না যে, আমরা কানাডায় এসেছি। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি এসব পণ্য দেখে আমরা রীতিমতো অভিভূত।
প্রিমিয়াম কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শেখ আতিকুল ইসলাম কলিন্স বলেন, আমাদের প্রিমিয়াম কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে কানাডার বিভিন্ন শহরে পণ্য সরবরাহ করে চলেছি। আমরা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চেষ্টা করে চলেছি কীভাবে গুণগতমান বজায় রেখে ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে তাদের সেবা দেওয়া যায়। ক্রেতা সন্তুষ্টিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। প্রবাসী বাঙালিদের ভালোবাসায় আমরা সিক্ত।
গ্রোসারি স্টোরগুলোতে বাজার করতে আসা প্রবাসী বাঙালিরা বাংলাদেশি কোম্পানির ও পণ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।